মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে গত বছরের ডিসেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রে বার্মা আইন পাস হয়। এই আইনের উদ্দেশ্য হল সামরিক শাসনের অবসান ঘটিয়ে এই অঞ্চলে শান্তি ও স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠা করা। ভারত এই অঞ্চলে চীনকে কোণঠাসা করার চেষ্টা করছে। অন্যদিকে চীন ভারতকে একপাশে ঠেলে দিতে চাইছে। এ অবস্থায় যুক্তরাষ্ট্রের ‘বার্মা অ্যাক্ট’ এ অঞ্চলের সংঘাত পরিস্থিতিকে জটিল করে তুলতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। তারা বলছেন, বিষয়টি শুধু বাংলাদেশ মিয়ানমারের নয়, এটি একটি আঞ্চলিক সমস্যা।
স্বাধীনতার পর সাত দশকেরও বেশি সময় ধরে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে সংঘাত চললেও দেশটির জান্তা বা সামরিক শাসকরা এই সংকট মোকাবেলায় হিমশিম খাচ্ছে।
বিশেষ করে, শান রাজ্যের তিনটি জাতিগত বিদ্রোহী গোষ্ঠীর যৌথ আক্রমণের কারণে দেশটির নিয়ন্ত্রণ হারানো এবং জান্তা বাহিনীর সদস্যদের প্রতিবেশী দেশগুলিতে পালিয়ে যাওয়ার খবর, যারা জান্তা সরকারের বিরোধিতা করে। অন্যান্য সশস্ত্র গোষ্ঠীর সমর্থন, প্রতিদিন মিডিয়ায় উপস্থিত হচ্ছে। মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব বাংলাদেশেও প্রভাব ফেলেছে। এরই মধ্যে মিয়ানমার থেকে ছোড়া মর্টার শেলে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে এক বাংলাদেশি ও এক রোহিঙ্গা শরণার্থী নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও কয়েকজন। বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বেশ কিছু স্কুল। সীমান্তবর্তী ফসলের মাঠে বাংলাদেশিরা চাষাবাদ করতে পারছে না। বাসিন্দারা ঘরবাড়ি ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছে।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারকে যুদ্ধে না জড়ানোর পরামর্শ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা। একই সঙ্গে মিয়ানমারের রোহিঙ্গারা যাতে বাংলাদেশে প্রবেশ করতে না পারে সেদিকে কড়া নজর রাখতে বলেন তিনি।
দেশটির থিঙ্ক ট্যাঙ্ক ইনস্টিটিউট ফর স্ট্র্যাটেজি অ্যান্ড পলিসি-আইএসপি মিয়ানমারের তথ্য অনুযায়ী, সামরিক বাহিনী ইতিমধ্যে বিদ্রোহীদের কাছে তার ভূখণ্ডের ৪৩ শতাংশের বেশি হারিয়েছে। ইরাবদি সংবাদ সংস্থা জানিয়েছে যে সামরিক বাহিনী ৩৩টি শহরের নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছে, যেগুলো এখন বিদ্রোহী বাহিনী দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল চিন, সাকাই, কিয়াং প্রদেশ এবং উত্তরের রাজ্য শান ও জিন। সেনাবাহিনী বিদ্রোহী বাহিনীর কাছে ৪০০ টিরও বেশি সীমান্ত চৌকি হারিয়েছে। এর মধ্যে সামরিক বাহিনীর আঞ্চলিক অপারেশন অফিসও রয়েছে।