গত কয়েক সপ্তাহ ধরে দেশ জুড়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দেওয়া নিষেধাজ্ঞাকে ঘিরে বেশ আলোচনা-সমালচোনা বিরাজ করছে। এবগন নানা প্রশ্নের সম্মুখীন হয়েছে বাংলাদেশ সরকার। তবে বাংলাদেশ সরকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দেওয়া নিষেজ্ঞা অস্বীকার করেছে। এবং এই নিষেজ্ঞা প্রত্যাহরের জন্য নানা ধরনের পদক্ষেপ গ্রহন করেছেন। ইতিমধ্যে এই লক্ষ্যে কাজ করছে সরকারের দায়িত্ব প্রাপ্ত ব্যক্তিরা। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের দেওয়া নিষেধাজ্ঞা প্রসঙ্গে বেশ কিছু কথা বললেন কৃষিমন্ত্রী মো. আব্দুর রাজ্জাক।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র পরিস্থিতির উন্নতির জন্য বাংলাদেশের শীর্ষ আইন প্রয়োগকারী কর্মকর্তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে, তাদের শাস্তি দেওয়ার জন্য নয়। রোববার (১৬ জানুয়ারি) সচিবালয়ে বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত আর্ল রবার্ট মিলারের সঙ্গে বিদায়ী সাক্ষাৎ শেষে কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক সাংবাদিকদের এ কথা বলেন। যুক্তরাষ্ট্র সম্প্রতি বাংলাদেশী র্যাব এবং ৭ জন প্রাক্তন ও বর্তমান সামরিক কর্মকর্তার উপর “গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের” অভিযোগে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। ৭ জনের মধ্যে রয়েছেন র্যাবের সাবেক মহাপরিচালক (ডিজি) ও বর্তমান পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদ। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে, ১০ ডিসেম্বর, ইউএস ডিপার্টমেন্ট অফ ট্রেজারি বিভিন্ন দেশের ১৫ ব্যক্তি এবং ১০ টি সংস্থার উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের ঘোষণা করেছে। মার্কিন রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে বৈঠক প্রসঙ্গে কৃষিমন্ত্রী বলেন, অর্থনীতি, কৃষিসহ বৈশ্বিক ও আঞ্চলিক সমস্যা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। অনেকক্ষণ কথা বলেছি। আইন প্রয়োগকারী কর্মকর্তাদের উপর সাম্প্রতিক মার্কিন নিষেধাজ্ঞা বাংলাদেশকে উত্তর কোরিয়া এবং মিয়ানমারের মতো একই আলোকে দেখতে পরিচালিত করেছে। আমি বললাম ব্যাপারটা খুবই দুঃখজনক, খুবই মর্মান্তিক, হৃদয়বিদারক। তারা বলছেন, বর্তমান মার্কিন সরকার মানবাধিকারকে অত্যন্ত গুরুত্ব দেয়।
তিনি বলেন, মার্কিন সরকার বিশ্বাস করে যে নিষেধাজ্ঞা বাংলাদেশের পরিস্থিতির উন্নতি করতে পারে। বাংলাদেশকে শাস্তি দেওয়ার জন্য তারা এটা করেনি। দেশটির (রাষ্ট্রদূত) আমাকে বলেছেন। উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা তাঁর কাছ থেকে রিপোর্ট নিতে পারেন, যিনি এখানে তিন বছর দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি একটি লিখিত প্রতিবেদনও দেবেন, এতে বলা উচিত: এই নিষেধাজ্ঞা পর্যালোচনা করা দরকার। আমি তাকে বলেছিলাম প্রমাণসহ রিপোর্ট দেব। বিভিন্ন অপরাধে ১৯০ র্যাব কর্মকর্তাকে শাস্তি দেওয়া হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, তিনি (আর্ল মিলার) এ বিষয়ে তথ্য ও প্রমাণ চেয়েছেন। কৃষিমন্ত্রী আরও বলেন, সফলভাবে জ/ঙ্গি দমনে মার্কিন সরকার বাংলাদেশের প্রশংসা করেছে। তার ধারণা কোনো কোনো ক্ষেত্রে মানবাধিকার লঙ্ঘিত হয়েছে। যে উন্নত করা প্রয়োজন. তারা তাই আশা করে। আব্দুর রাজ্জাক বলেন, “আমি বলেছি, আমাদের মুক্তিযুদ্ধের সময় আপনার (রাষ্ট্রদূত) সরকার ভুল ছিল।” কিন্তু আপনাদের সুশীল সমাজ আমাদের সাহায্য করেছে, ফান্ড দিয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্র শুধু নিষেধাজ্ঞাই নয় বাংলাদেশের সাফল্যের নানা বিষয় নিয়েও প্রায় সময় অনেক ধরনের প্রতিবেদন প্রকাশ করে থাকে। তবে সম্প্রতি দেওয়া নিষেধাজ্ঞাকে ঘিরে এক অস্থিতিশীল পরিবেশের মধ্যে পতিত হয়ে বাংলাদেশ। এবং বিভিন্ন মহলে এই নিয়ে চলছে নানা আলোচনা। তবে সরকারি ভাবে যুক্তরাষ্ট্রের করা অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে। এমনকি আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দেওয়াকে ঘিরে সরকার দলীয় অনেক নেতাকর্মী যুক্তরাষ্ট্রের সমালোচনা করেছে।