আজ উদ্বোধন হয়ে গেল দক্ষিণ বাংলার মানুষের কাঙ্খিত পদ্মা সেতুর, আর এই অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অংশ নিয়ে দুই পাড়েই উদ্বোধন অনুষ্ঠান সম্পন্ন করবেন, যেটা বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি ঐতিহাসিক মাইলফলক হয়ে থাকলো। পদ্মা সেতুর উদ্বোধন নিয়ে কেউ কেউ বন্যার্তদের প্রসঙ্গ টেনে পদ্মা সেতুর উদ্বোধন অনুষ্ঠান নিয়ে সমালোচনা করেছেন। তাদের দাবি খরচ অতিমাত্রায় করা হচ্ছে সেটা কমিয়ে বন্যা কবলিতদের সাহায্য করা উচিৎ ছিল।
স্বপ্নের পদ্মা সেতু উদ্বোধনের সাক্ষী হতে শনিবার সকালে মাওয়া প্রান্তে জনসভায় যোগ দেন বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী।
এ সময় কাদের সিদ্দিকী বলেন, কোনো কাজ করতে গেলে তার বাধা-বিপত্তি থাকে। বাধা অতিক্রম করে কাজ করার মধ্যে আনন্দ আছে। আজ এত কিছুর পরও যে পদ্মা সেতু হয়েছে তা নিয়ে অহঙ্কার করারও কোনো কারণ নেই, দুঃখিত হওয়ারও কোনো কারণ নেই।
যারা এর সমালোচনা করেছেন তারাও তাই করেছেন। যারা আশা করেছিলেন তারাও তাই করেছেন। যারা আগে সমালোচনা করেছে, যাদের বিশ্বাস হয়নি, এখন হয়ে গেছে এবং এখন তাদের বিশ্বাস হবে। এগুলোর জন্য তাদেরকে মাটির তলায় দিয়ে কোনো লাভ নেই।
আমরাই সবচেয়ে বেশি ক্ষতি করি, আমরা মানুষকে সবচেয়ে বেশি অপমান করার চেষ্টা করি। মানুষ ভুল করে, ভুল করবে। সে ভুল করলে এই পৃথিবীতে থাকার অধিকার হারাচ্ছে, এটা ঠিক নয়।
পদ্মা সেতুর উদ্বোধন আওয়ামী লীগকে ভোটের রাজনীতিতে একধাপ এগিয়ে নিয়ে গেল কি না জানতে চাইলে কাদের সিদ্দিকী বলেন, নিশ্চয়ই নেবে। কেউ কাজ করলে সে কেন সামনে এগোবে না। কিন্তু কিছু ত্রুটি আছে। এই দুর্যোগের সময় এত কিছু না করলেই ভালো হতো। এই টাকা নেত্রকোনা, কিশোরগঞ্জ, সিলেট, হবিগঞ্জে খরচ হলে আওয়ামী লীগের লোকজন এই উদ্যোগ নিয়ে সেখানে কাজ করলে ভালো হতো।
এদিকে সব প্রতিকূলতা উপেক্ষা করে আজ উদ্বোধন হচ্ছে স্বপ্নের পদ্মা সেতু। সেতুটি উদ্বোধন করতে শনিবার সকাল ১০টায় হেলিকপ্টারযোগে মুন্সীগঞ্জের দোগাছি পদ্মা সেতু সার্ভিস এরিয়া-১ এ পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সমাবেশে প্রধান অতিথির ভাষণ শেষে প্রধানমন্ত্রী মাওয়া প্রান্তে পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী ফলক উন্মোচনের মাধ্যমে পদ্মা সেতুর উদ্বোধন ও মোনাজাতে অংশ নেবেন। পরে তিনি টোল দিয়ে জাজিরা প্রান্তে সেতুর ওপরে গিয়ে ফলক উন্মোচন ও নামাজ আদায় করবেন। পরে মাদারীপুরের বাংলাবাজার ঘাটে আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় অংশ নেবেন প্রধানমন্ত্রী।
জানা গেছে, আগামীকাল থেকে স্বপ্নের পদ্মা সেতু দিয়ে সকল ধরনের যানবাহন চলাচল করতে পারবে। তবে সেখানে ধীর গতির কোন যানবাহন চলাচলের অনুমতি দেয়া হবে না বলে জানা গেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ সাড়ে বারোটার দিকে পদ্মা সেতুর উদ্বোধন করেন।