বর্তমান সরকার দির্ঘ সময় ধরে ক্ষমতার আসনে রয়েছে এবং এই দির্ঘ সময় ধরে তারা ক্ষমতার আসনে থাকার কারনে নানা রকম অভ্যান্তরীন আলোচনার সমালোচনা এবং দলিয় বিভিন্ন সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছেন দলটি। এই নিয়ে অনেকে অনেক সময় নানা কথা বলছেন এবং বিভিন্ন সিদ্ধান্ত নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হচ্ছে। এনিয়ে সামজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও দিচ্ছেন অনেকে স্ট্যাট্যাস।
‘আমাদের’ নিয়ে আওয়ামী লীগ সরকার নাকি একটু বিপদেই আছে। আমাদের মানে, আমরা যারা আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে আদর্শিকভাবে কানেক্টেড অথচ আওয়ামীলীগ সরকারকে প্রায়শই ধোয়াধুয়ি করি, তাদের অন্যায়ের প্রতিবাদ করি, অথচ এই সরকার আমাদের ফেলতেও পারে না, গিলতেও পারে না। এখন বৃহত্তর আওয়ামী লীগের একটা অংশ বিশ্বাস করেন যে, এই ‘আমাদের’ জন্যই সরকার আগাইতে পারতেসে না। আমরা নাকি সরকারের সামান্যতম ভুলরেও ইগনোর করি না, তিলকে তাল করি। আমরা নাকি এক্সপেক্ট করি সরকার রাতারাতি সব ঠিক করে ফেলবে। আমাদের কারণেই নাকি সরকার এক পা আগাইলে দুই পা পিছায়।
তো, সেই আওয়ামী প্রেমী ভাইবোনদের বলি, এই যে সরকার একটু আগাইসে সেইটা এই ‘আমাদের’ জন্যই আগাইসে। আর যতোটুকু পিছাইতেসে সেইটা আপনাদের মতো দলকানা আওয়ামী সুবিধাভোগী মোহাসেবদের জন্যই পিছাইতেসে। আর ‘রাতারাতি’ বলতে আপনারা কি বুঝেন জানি না, আমরা বুঝি মেঘে মেঘে বেলা কম হয় নাই কিন্তু…বাংলাদেশের ইতিহাসে একটানা সর্বোচ্চ সময় ধরে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আওয়ামী লীগ। এরকম অবস্থায় দেশে কার্যকর একটা বিরোধীদল না থাকলে সমর্থকদেরই চোখে আঙুল দিয়ে গঠনমূলক সামলোচনাটা করতে হয়। এবং একজন সত্যিকারের সমর্থক সেটাই করে।
গণতন্ত্রের যে বারোটা বাজা বাজছে তাতে আমরাও যদি একটু আধটু কথা না বলি তাতে তো এইটা আর রাষ্ট্র থাকে না, এককাধিপত্যমূলক পরিবার হয়ে যায়। অবশ্য এমনিতেও সেই সেটআপেই আছে এখন বাংলাদেশ। তবুও পরিবারের বখে যাওয়া ছেলেটার মতোই ৫৭ ধারা টারার ভয় মাথায় নিয়েই যতোদূর সম্ভব বলি আর কি। কেন বলি? বলতেসি। সেই গল্পটা জানেন তো, এক সৎ মা নিজের ছেলেরে দিয়ে সব কাজ কর্ম করাইতো, বাজার করাইতো, জায়গা জমি দেখাশোনা করাইতো আর সতিনের ছেলেরে সারাক্ষণ কোলে রাখতো, মুখে তুলে খাওয়াইতো, সাথে নিয়ে হাগু করাইতো। সবাই তো সৎ মায়ের এই মহত্বে ধন্য ধন্য তুলে ফেললো। একসময় দেখা গেলো, নিজের ছেলেটা কর্মঠ, পরিশ্রমী, দায়িত্বশীল হয়ে বড় হইসে আর সতিনের ছেলেটা হইসে একটা অকর্মণ্য কাঠবলদ, যে ‘মা’ ছাড়া টয়লেটেও যেতে পারেনা। তো, কি বুঝলেন?
শোনেন, আওয়ামী লীগকে ‘আমরা’ নিজের সন্তান মনে করি বলেই তার ভেতর থেকে আগাছা সাফ করে রাখি, তার ভুল-ভ্রান্তি দেখায় দিই, দলরে ঠিক ট্র্যাকে রাখার চেষ্টা করি। আমরা এইটা করতে পারি, কারণ, আমরা আওয়ামী লীগের নাম বেচিওনা, মাখনও খাই না, দিইওনা। আর আপনারা যারা আওয়ামী লীগের দুধ, ননীটা খান, শেখ হাসিনার চাইতে বেশি আওয়ামী লীগ করেন, আপনারাই সেই মা যারা সতীনের ছেলেরে বেশি আদর কইরা বান্দর বানান। ক্যান করেন বুঝা গেলো বিষয়টা? এসব গবেষণা বন্ধ করে যান এইবেলা বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনীটা পড়েন আরেকবার। একটু পড়াশোনা করেন।