সম্প্রতি বিনোদন মাধ্যমে যে সব চরিত্র ফুটিয়ে তোলা হচ্ছে তা বিভিন্ন ক্ষেত্রে সমালোচনার মুখে পড়ছে। অনেক ক্ষেত্রে এসব মুভি বা কনটেন্ট নিয়ে সমাজে বিভ্রান্তীকর পরিস্থির সৃষ্টি হচ্ছে।অনেক ক্ষেত্রে অভিভাবকদের এসব বিষয় নিয়ে নানা সমস্যার মুখোমুুখি হতে হয়। বিষয়টি নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন লেখিকা মিলি সুলতানা হুবহু পাঠকদের জন্য নিচে দেওয়া হলো।
আমার কাছে শিহাব শাহীন মানেই একটু স্পেশাল কিছু। অন্য সবার চাইতে ব্যতিক্রম কিছু। কিন্তু চরকিতে রিলিজ হওয়া শিহাবের রিসেন্ট কনটেন্ট “কাছের মানুষ দূরে থুইয়া” দেখার পর হতাশ হয়েছি বৈকি। আসলে এমন Dull কনটেন্ট দেখতে ভাল লাগেনা।বাই গড, আমার মনে মুগ্ধতা ছড়াতে পারেনি এই কনটেন্ট। গল্পের ফাউন্ডেশন এ্যাভারেজ ছিল। কিন্তু সেটাকে “ছ্যারাব্যারা” বানিয়ে ছেড়েছেন। জীবিকা নির্বাহের জন্য পরবাসে বসবাস করা মানুষের সন্তানরা তাদের শেঁকড়ের ঐতিহ্যের সম্পূর্ণ বিপরীতে গিয়ে ভিন্ন সংস্কৃতির আবহে বেড়ে উঠছে। সেসব দেশের মুল স্বাধীনতা হচ্ছে ফ্রি মিক্সিং। মিডল স্কুল অথবা জুনিয়র স্কুলে যাওয়ার পর তাদেরকে সে/ক্স অ্যাডুকেশন সম্পর্কে ধারণা দেয়া হয়। হাইস্কুলে যাওয়ার পর স্কুল তাদেরকে কনডম সরবরাহ করা হয়। যদিও এ বিষয়ে সুন্দর একটা প্রসিডিওর ফলো করা হয়। কনডম সরবরাহ করবে কিনা সে বিষয়ে অভিভাবকদের কাছে অনুমতি চাওয়া হয়। যেসব অভিভাবক অনুমতি দেবেন তাদের সন্তানরা কনডম ব্যবহার করবে। যারা অনুমতি দেবেন না তাদের সন্তানদের কনডম সরবরাহ করা হবেনা। ইউরোপ আমেরিকা অস্ট্রেলিয়ায় বসবাসরত ইয়ং জেনারেশন মনে করে তাদের জীবনে বয়ফ্রেন্ড গার্লফ্রেন্ড চুজ করবে তারা। এ নিয়ে মা বাবার কিছু বলার থাকতে পারেনা। মা বাবার চোখের সামনে তারা তাদের পার্টনারের হাত ধরে ঘর থেকে বেরিয়ে যায়। অনেক মা বাবা রক্তে জোশ আসা তারুণ্যের কাছে হার মানে। আবার অনেকের ছেলেমেয়ে মা বাবার মতামতের মূল্যায়ন করে। এমনও আছে সন্তানের চোখের সামনে মা/বাবার ধুমায়ে লিভ টুগেদার চলে। এমন বহু পাজল প্রবাসীদের জীবনে ঘটছে।
সারেং বউ ছবির “ওরে নীল দরিয়া” গান থেকে “কাছের মানুষ দূরে থুইয়া” সুন্দর এই লাইনের উপর ভর করে অস্ট্রেলিয়ান জীবনধারার সাঁকোয় চড়েছেন শিহাব শাহীন। কিন্তু গল্পের বুনন আহামরি কিছু ছিলনা। নতুনত্ব কিছু পাইনি। শিহাব শাহীনের অতীতের জবরদস্ত নির্মাণগুলোর সমকক্ষ মনে হয়নি। বরং আমার মনে হচ্ছিলো তিনি একই বাটিতে স্যুপ চ্যাঙ ব্যাঙ শামুক চিকেন ফ্রাই ফ্রাইড শ্রিম্প চটপটি ফুচকা ফালুদা বিরিয়ানি খাসির রেজালা আলুভর্তা শুঁটকিভর্তা সব একসাথে মিশিয়ে ঘুঁটা দিয়ে পাঁচন বানিয়েছেন। তাসনিয়া ফারিন প্রীতম হাসান ভালো অভিনয় করেছেন। তবে মিলির বাবার চরিত্রে রূপদানকারী ভদ্রলোককেও ভালো লেগেছে। এই তিনজন ছাড়া যাবতীয় এক্সট্রাদের অভিনয় দেখে মনে হয়েছে আজকাল নাটকে অভিনয় করার ব্যাপারটা ডালভাতের মত হয়ে গেছে। নাটকে অভিনয়ের জন্য মেধার দরকার নেই। ওটিটি প্লাটফর্মে এমন সাদামাটা কনটেন্ট জমেনা। একেবারে একঘেঁয়ে নির্মাণ। বার বার মনে হচ্ছিলো বিটিভির নাটক দেখছি। এটা নিয়ে চারদিকে হুদাই হাইপ উঠেছে। গল্পে কোনো বৈচিত্র্য নেই। শিহাব শাহীন এটা কি বানিয়েছেন? একেবারে যাচ্ছেতাই বানিয়েছেন। দেখেন গিয়ে অস্ট্রেলিয়ায় যাদের ঘরে ফ্রিতে থাকা খাওয়া সেরেছেন, তাদেরকে নিয়ে এটা বানিয়েছেন। তাদের শখ ছিল দলবেঁধে অভিনয়ের নামে দর্শকদের ইরিটেট করবে। এবং সেটা তারা করেছে।