বর্তমান ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের মধ্যে বেশ কিছু সংখ্যক নেতা দলের বিরুদ্ধে গিয়ে রাজনীতি শুরু করেছে। প্রকৃতপক্ষে দল থেকে মনোনয়ন না পাওয়ার কারণে এমন সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন তারা, যাদেরকে দলের বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে আখ্যা দেওয়া হয়। এদিকে দলের জন্য নিবেদিতপ্রাণ এবং পরিশ্রমীদের মনোনয়ন দেওয়া হচ্ছে কেন্দ্রীয় নেতাদের নির্দেশে। দল থেকে মনোনয়ন না পেয়ে ক্ষোভ ঝাড়লেন এক নেতা।
৩০-৩২ বছর ধরে আওয়ামী লীগের সঙ্গে কাজ করছি। বিনিময়ে কিছুই পাইনি। আশা করেছিলাম দল আমার আমার শ্রমের মর্যাদা দেবে। কিন্তু তার কিছুই দিলো না। যত দিন আমি বেঁচে থাকবো, তত দিন পর্যন্ত আ. লীগের নাম মুখেও নিব না. ’
এমনই ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার সন্ধানপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম আজাদ।
ইউপি নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে গত সোমবার (২৮ নভেম্বর) উপজেলার টেপিকুশারিয়া এলাকায় এক সভায় তিনি এ বক্তব্য দেন। এমন বক্তব্যের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফে”সবুকে ছড়িয়ে পড়লে নানা আলোচনা-সমালোচনার সৃষ্টি হয়।
ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী আগামী ২৯ ডিসেম্বর উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়নে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। আজাদ সন্ধানপুর ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন। ওই বৈঠকে তিনি মনোনয়ন না পেয়ে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ঘোষণাও দেন।
বৈঠকে তিনি বলেন, ‘আমি গায়ে আর মুজিব কোর্ট জড়াব না। যত দিন বেঁচে থাকব তত দিন আওয়ামী লীগের নামও মুখে আনব না। আমি ইতোমধ্যে উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্যপদ ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পদ থেকে পদত্যাগপত্র উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে জমা দিয়েছি। ‘
উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহিম মিয়া বলেন, ‘রফিকুল ইসলাম আজাদ পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন। কিন্তু আমরা তা গ্রহণ করিনি। দলীয় সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে গিয়ে কেউ নৌকার বিরুদ্ধে নির্বাচন করলে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
প্রসঙ্গত, গত ২৭ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মনোনয়ন বোর্ডের সভা অনুষ্ঠিত হয়। আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করেন। তালিকা অনুযায়ী তিনি ঘাটাইলের সন্ধানপুর ইউনিয়নে দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন মো. বেলায়েত হোসেন বেলাল।
অন্যকে দল মনোনয়ন দেওয়ার কারণে এই আওয়ামী লীগ নেতা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছেন, আমি আর কখনো কোনদিন আ.লীগের নাম মুখে আনবো না। এ ঘটনার পর সেখানকার আওয়ামী লীগের মধ্যে নানা প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। তবে তাকে সাংগঠনিক নিয়ম মানার জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে বলে জানা যায়।