ঢাকাই সিনেমার অন্যতম জনপ্রিয় ও আলোচিত অভিনেত্রী শামসুন্নাহার স্মৃতি ওরফে পরীমনি। গত কয়েক মাস আগেই মাদককাণ্ডে জড়িয়ে বেশ আলোচনায় এসেছিলেন তিনি। আর সেই ঘটনার রেশ কটতে না কাটতে সম্প্রতি মা হওয়ার খবর দিয়ে রীতিমতো সংবাদ মাধ্যমের শিরোনামে আসেন পরীমনি। আর এরপর গত ১৭ জানুয়ারি অভিনেতা শরিফুল ইসলাম রাজের সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন তিনি।
পরী জানান, ৭ দিনের তুমুল প্রেমের মধ্যেই হুট করে বিয়েটা করেছিলেন তিনি। ফলে স্মরণীয় দিনটাকে সে অর্থে ফ্রেমবন্দিও করা হয়নি। সেই আক্ষেপ ঘোচাতেই সম্প্রতি আয়োজন করা হয় রাজ-পরীর গায়েহলুদ ও বিয়ে অনুষ্ঠানের।
তবে এই আনুষ্ঠানিক বিয়েতে রাজ-পরীর একটি ছবি নিয়ে নানান আলোচনা-সমালোচনা হচ্ছে। আর এই বিষয়টি বেশ নাড়া দিয়েছে সংগীতশিল্পী, উপস্থাপিকা ও লেখিকা সাজিয়া সুলতানা পুতুলকে।
পুতুল তার পোস্টে লিখেছেন, ‘আমি কখনো কিছু লিখিনি কারণ আমি কখনো ভাবিনি পরীমনি লেখার বিষয় হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ। মানুষ তার স্বাধীন সত্তায় বেঁচে থাকবে এই বিশ্বাসের মানুষ আমি। আমি মানুষের ব্যক্তিত্ব সম্পর্কে অতটা কৌতূহলী নই। কিন্তু এই ছবিটা পড়ে অনেকক্ষণ তাকিয়ে ছিলাম। যদিও ছবিটি ইতিমধ্যেই রসিকতায় পরিণত হয়েছে। কিন্তু ছবির মনস্তত্ত্ব একটু ভিন্ন। ‘
গায়কের ভাষ্য, ‘সমাজে অপবাদের শিকার হয়ে যখন একজন নারী লাঞ্ছনার তলদেশে চলে যায়, অনেক কিছু সহ্য করা নারী যখন সমাজের পুরুষদের কাছ থেকে গালাগালি ছাড়া আর কিছু আশা করার সাহস হারিয়ে ফেলেন, তখন তা খুবই হয়। জীবনের একটি বিশেষ মুহুর্তে চোখের জল বয়ে যাওয়া স্বাভাবিক, তিনি পর্দার জীবনে যত বড় অভিনেত্রীই হোন না কেন। এই ছবিতে তিনি একা বসে নেই, তার ভেতরে রয়েছে অন্য এক আত্মা। ‘
নায়িকা পরীমনিকে উদ্দেশ্য করে গায়িকা-পুতুল লিখেছেন, ‘পুরুষশাসিত সমাজে যে মানুষটিকে সবচেয়ে বিশ্বস্ত ও বিশ্বস্ত মানুষ বলে মনে হয়েছিল, তার সঙ্গে একটি বিশেষ মুহূর্ত উদযাপনে যতটা আনন্দ ছিল, সেখানে কিছুটা হাহাকার ও স্মৃতিচারণ হতে পারে। বিভিন্ন রঙের পুরুষদের ভিড়।” সেই স্মৃতি অবশ্যই সুখের স্মৃতি নয়। অভিভাবকবিহীন একজন সাধারণ মেয়ের বেলায়ও হয়তো এমন হয়েছে যে বিয়ের আসরে জেগে উঠতে পারে, চোখে ভেসে উঠতে পারে এমন মুখ। ‘
পুতুলের কথায়, ‘এখানে তাকে আক্রমণ করার সবচেয়ে সহজ অস্ত্র এই অনুভূতি তার জীবনে প্রথম নয়। একাধিকবার বিয়ের পিঁড়িতে বসার অভিজ্ঞতা রয়েছে তার। কিন্তু জীবন যত কঠিন থেকে কঠিনতর হচ্ছে, মানুষের অনিশ্চয়তা আকাশচুম্বী হচ্ছে। সেই কান্না আনন্দের উৎস হতে পারে যদি আমরা সেখানে আপাতদৃষ্টিতে নিরাপদ সমাধানের পথ খুঁজে পাই। ‘
উল্লেখ্য, প্রথমত ধারাবাহিক নাটকে অভিনয়ের মধ্য দিয়ে মিডিয়ায় যাত্রা শুরু করেন পরীমনি। এরপর ২০১৫ সালে ‘ভালোবাসা সীমাহীন’ সিনেমায় অভিনয়ের মধ্য দিয়ে বড় পর্দায় প্রথমবারের মতো পা রাখেন পরীমনি। তার অভিনীত উল্লেখযোগ্য সিনেমার মধ্যে রয়েছে- ‘মহুয়া সুন্দরী’, ‘রানা প্লাজা’, ‘রক্ত’, ‘বিশ্বসুন্দরী’ ইত্যাদি।