Sunday , November 24 2024
Breaking News
Home / opinion / ম্যাডামের সর্বশেষ অবস্থা আমি জানিয়েছিলাম, প্রোপার অথোরিটি নই বলে গুরুত্ব পায়নি: মারুফ

ম্যাডামের সর্বশেষ অবস্থা আমি জানিয়েছিলাম, প্রোপার অথোরিটি নই বলে গুরুত্ব পায়নি: মারুফ

বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী এবং জাতীয়তাবাদী রাজনৈতিক দল বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া দীর্ঘ দিন ধরে শারীরিক ভাবে নানা জটিলতায় ভুগছেন। তবে সম্প্রতি তিনি গুরুত্বর ভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। এবং রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তার এই অসুস্থতা নিয়ে সাড়া দেশ জুড়ে নানা ধরনের গুঞ্জনও সৃষ্টি হয়েছে। এমনকি দলটির নেতাকর্মীরাও নানা ধরনের বিভ্রান্তির সম্মুখীন হয়েছে। তবে বেগম জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও টার পরিবার সর্বশেষ শারীরিক অবস্থা জানিয়ে নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে গুঞ্জনে কান না দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। বেগম জিয়ার বর্তমনা অবস্থা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এক পোষ্ট দিলেন মারুফ কামাল খান।

অন্তরের অন্তস্থল থেকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা বেগম খালেদা জিয়ার চিকিৎসক টিমকে। তাঁরা অবশেষে সকলের সামনে খোলাসা করলেন ম্যাডামের লেটেস্ট গুরুতর অবস্থার কথা। তাঁরাই অ্যাপ্রোপিয়েট ও অথেন্টিক অথোরিটি এই কথাগুলো বলবার জন্য। রাব্বুল আলামিনের দরবারে লাখো শোকর তাঁর অপরিসীম কৃপায় এই চিকিৎসক দল তাঁদের প্রাণান্তকর প্রয়াসে কোটি কোটি মানুষের প্রিয় নেত্রীর জীবনশিখা এখনো জ্বালিয়ে রেখেছেন। এরজন্য বিপুল কৃতজ্ঞতা তাঁদের প্রতি। ম্যাডামের সর্বশেষ অবস্থাটুকু জানবার জন্য মানুষ ব্যাকুল ও উন্মুখ হয়ে ছিল। সঠিক তথ্য না জানানো হলে যা হয়, গুজব দখল করে নিয়েছিল সত্যের জায়গা। গুজব থেকে অনেক সময় বড় অনেক অঘটন ও অনর্থ কাণ্ড ঘটে যায়। আল্লাহর রহমতে তেমন কিছু ঘটেনি। আরও আট/নয় দিন আগে হর্সেস মাউথ থেকে জেনে ম্যাডামের সর্বশেষ অবস্থা আমি জানিয়েছিলাম। লিখেছিলাম: “তিনি তাঁর পুরনো জটিল রোগগুলো ছাড়াও ডিকমপেন্স্যাটেড লিভার সিরোসিস-এ আক্রান্ত।” লিখেছিলাম NASH (Non-alcoholic steato hepatitis)-এর কথা। লিখেছিলাম, বেগম খালেদা জিয়ার অবস্থা গুরুতর। বর্তমানে তাঁর যে অবস্থা তাতে দেশে চিকিৎসার সুযোগ নাই বললেই চলে। জীবন বাঁচাতে হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁকে বিদেশে নিতেই হবে। আমি লিখেছিলাম, শরীর থেকে রক্ত যেতে যেতে তাঁর হিমোগ্লোবিন একেবারে কমে গেলে এবং রক্তবমি হতে থাকলে তাঁকে এবার হাসপাতালে নেয়া হয়। ডাক্তারেরা এন্ডোস্কপি করে তাঁর লিভার সিরোসিস শনাক্ত করেন। তাঁর দেহে দফায় দফায় রক্ত দেয়া হয় এবং তাঁর বড় হয়ে যাওয়া রক্তনালী এন্ডোস্কপির মাধ্যমে Oesophageal Band ligation করা হয়েছে এবং সিসিইউ-তে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। এর বেশি কিছু বাংলাদেশের ডাক্তারদের করার নাই বলেই জানানো হয়েছে।

লিখেছিলাম, বেগম জিয়া দীর্ঘদিন ধরেই আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, অনিয়ন্ত্রিত রক্তচাপ এবং হার্ট, কিডনি ও চোখের সমস্যায় ভুগছিলেন। তিনি নিয়মিত চিকিৎসাধীন ও চিকিৎসকদের তদারকিতে ছিলেন। তাঁকে জেলে নেয়ার পর সব বন্ধ হয়ে যায়। উপযুক্ত চিকিৎসার অভাবে পরিস্থিতি ক্রমেই জটিল হতে থাকে, তার অবস্থারও গুরুতর অবনতি ঘটে। বারবার দাবি সত্বেও তাঁর প্রয়োজন অনুযায়ী উপযুক্ত হাসপাতালে নিতে দেয়া হয়নি। পরিস্থিতি খুব জটিল হয়ে দাঁড়ালে এবং বেগম জিয়ার শারীরিক পরিস্থিতির যথেষ্ট অবনতি হলে সরকার তাঁকে নিজের বাসায় থেকে চিকিৎসা করাবার সুযোগ দেয়। কিন্তু যখন দেয়া উচিত ছিল তখন না দিয়ে তারা পরিস্থিতির গুরুতর অবনতির জন্য অপেক্ষা করেছে। আমি লিখাছিলাম, এরপর তিনি ক/রো/না/য় আ/ক্রা/ন্ত হলে তাঁর দেহের অন্যান্য অর্গান ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং রোগগুলোও আরো জটিল হয়ে ওঠে। এবার শ/না/ক্ত হলো আরও জটিল ব্যাধি- লিভার সিরোসিস। সবকিছু মিলিয়ে বাংলাদেশে তাঁর চিকিৎসা অসম্ভব। এখন বিদেশে সবগুলো রোগের সমন্বিত চিকিৎসার সুযোগ সম্বলিত কোনও হাসপাতালে দ্রুত চিকিৎসার ব্যবস্থা করাতে না পারলে বেগম জিয়ার জীবন রক্ষা অসম্ভব হয়ে পড়বে। যে কোনও সময়ে লিভার ফেলিওর এবং লিভার ক্যান্সারের দিকে মোড় নেয়ার প্রবল ঝুঁকিতে আছেন তিনি। কেননা তাঁর বয়সটাও অনুকূল নয়।

তবে, আমি যা-কিছুই জানাই, আমি তো প্রোপার অথোরিটি নই। তাই হয়তো আমার তথ্য তেমন গুরুত্ব পায়নি। অবশেষে চিকিৎসকগণ দায়িত্ব নিয়ে বিশ্বস্ততার সঙ্গে প্রকৃত তথ্য তুলে ধরায় সবাই জানলো। আমি কৃতজ্ঞ। তাঁদের বিবরণ আট দিন আগে দেয়া আমার তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছে। তবে দুঃখের ব্যাপার হলো, এমন গুরুতর একটা বিষয়েও এতোটা পিছিয়ে পড়ায়। কয়েকটা দিন নষ্ট হলো। ম্যাডামের জীবনরক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় চিকিৎসার্থে তাঁকে বিদেশে নেয়ার সুযোগ ক্ষমতাসীনেরা আদৌ দেবে কিনা কিংবা দিলেও কবে নাগাদ দেবে তা’ আমি জানিনা। তবে এর জন্য বিষয়টির গুরুত্ব আরো আগে এভাবে তুলে ধরতে পারলে চাপটা হয়তো আরো আগে থেকে সৃষ্টি হতে পারতো। এখনো তো ম্যাডামের পাসপোর্টটা পর্যন্ত ওরা আটকে রেখেছে। আসুন, আমরা সকলে ম্যাডামের জন্য কায়মনোবাক্যে দোয়া করি এবং যার যেটুকু সাধ্যশক্তি আছে তা দিয়ে সোচ্চার হই।

এদিকে বেগম জিয়ার শারীরিক অবস্থা মারাত্মক ভাবে অবনতি হওয়া্য তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশ নেওয়ার দাবি জানিয়েছে বিএনপি দল এবং তার পরিবার। অবশ্যে এই বিষয়ে সরকার অনুমতি প্রদান করেনি। বেগম জিয়া মূলত জিয়া অরফানেহ ট্রাষ্ট দূর্নীতি মামলায় সাজা ভোগ করছেন। তবে বর্তমান সময়ে তিনি জামিনে রয়েছেন। বেগম জিয়ার বিদেশে চিকিৎসার দাবি উঠলে আইনমন্ত্রী জানিয়েছেন বর্তমান সময়ে তাকে বিদেশে যাওয়ার অনুমতি দেওয়ার সুযোগ নেই। এমনকি তিনি অন্যান্য সাজা প্রাপ্ত আসামীদের তুলনায় বেশি সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছেন। তবে বেগম জিয়াকে বিদেশে নেওয়ার লক্ষ্যে সারা দেশ ব্যপী নানা কর্মসূচি পালন করছেন।

About

Check Also

যে কারণে সেনাবাহিনীকে প্রস্তুতি নিতে বললেন সাংবাদিক ইলিয়াস

বিশিষ্ট সাংবাদিক ইলিয়াস হোসেন তার সাম্প্রতিক এক মন্তব্যে সেনাবাহিনীকে প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। বুধবার (২০ …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *