জলস্তম্ভ বা জলকুণ্ডলীর দেখা মেলে বিশ্বের বিভিন্ন জায়গায় এবং সেই সাথে দেখা যায় এই জলকুণ্ডলীর আকার আকৃতি বেশ প্রশস্থ হয়। সাধারনত দেখা যায় জলাশয়ের পানি সোজা ভাবে আকাশে উঠে যাচ্ছে, বিভিন্নভাবে মানুষ এটার ব্যখ্যা দিয়ে থাকে। এবার এশিয়ার বৃহত্তম হাওর হাকালুকিতে এই অদ্ভুত দৃশ্যের দেখা মিলল। মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলার সুজানগরে অবস্থিত এই হাওরে টর্নেডো বা জলস্তম্ভ বা জলকুণ্ডলী দেখা গেছে। হাকালুকির বার হালি চাতলা বিল নামক স্থানে হঠাৎ হাওরের পানি কুণ্ডলী পাকিয়ে আকাশে উঠে যায়। চমকপ্রদ এই ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে এই দৃশ্য।
যখন জলের উপর একটি শক্তিশালী টর্নেডো ঘটে, তখন উচ্চ গতির ঘূর্ণায়মান বায়ুর শক্তির কারণে জল একটি ঘূর্ণায়মান অবস্থায় উপরে উঠে যায়। একে জলকুণ্ডলী বলা হয়।
স্থানীয়রা একে মেঘাশুর বলে। তারা একে ধ্বংসের প্রতীকও মনে করে। আবার বিশেষজ্ঞদের মতে, জলকুণ্ডলি দেখতে টর্নেডোর মতো হলেও টর্নেডোর সঙ্গে এর মৌলিক পার্থক্য রয়েছে। টর্নেডো বাতাসের পরিবর্তে বায়ু এবং জলের দাগ নিয়ে গঠিত। জলকুণ্ডলী সাধারণত জলে থাকে তাই এটি জনপদে খুব বেশি ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপ চালাতে পারে না। আর মাটি স্পর্শ করলেই তা ভেঙে পড়ে।
শনিবার (২৩ জুলাই) সন্ধ্যায় বড়লেখা উপজেলার সুজানগর বারহালী চাতলা বিলে দক্ষিণ এশিয়ার বৃহত্তম হাওর হাকালুকিতে এমন পানির কুণ্ডলী দেখা গেছে। হাকালুকিতে এমন দৃশ্য খুবই বিরল।
বড়লেখার সুজানগরের বাসিন্দা শিক্ষক শরফ উদ্দিন জানান, কয়েক বছর আগে হাকালুকিতে এমন দৃশ্য দেখা যেত। তারপর আজ এমন ঘটনা শুনলাম। জলকুণ্ডলীতে কোনো ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি। সন্ধ্যায় এক ঘণ্টা এই অবস্থায় থাকার পর অন্ধকারে মিলিয়ে যায়।
সামাজীক যোগাযোগ মাধ্যমে দেখা গেছে হাকালুকি হাওরের জলস্তম্ভ এর দৃশ্যটি নিয়ে বেশ আলোচনা তৈরি হয়েছে এবং অনেকে এই বিষয়টি নিয়ে বিস্ময় প্রকাশ করেছে। ঘটনার সত্যতার বিষয়ে সুজানগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বদরুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ঘটনাটি সত্য। সন্ধ্যার আগে এমন দৃশ্য দেখেন এলাকার শত শত মানুষ। অলৌকিক ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।