সাম্প্রতিক সময়ে চলমান পরিস্থিতিতে সারাদেশে খাদ্য দ্রব্যের দাম ঊর্ধ্বমুখী। কয়েকদিন আগে ঢাকা ( Dhaka ) বিশ্ববিদ্যালয়ে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তথ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, বাংলাদেশে ( Bangladesh ) কোন কুঁড়েঘর নেই। আজ সেই কুঁড়েঘরে কাঠ গরু আছে কিন্তু মানুষ নেই। তবে এসকল কথা তিনি বলতে পারেন।অনেক ক্ষমতাসীন মন্ত্রী এমপিরা বাংলাদেশকে উন্নতশীল দেশ যুক্তরাষ্ট্র ( United States ) ও সিঙ্গাপুরের ( Singapore ) সাথে তুলনা করেন। তবে তরা বাস্তবের সাথে খুব কমই দেখা করেন। তাই তাদের সব কথা বাস্তব সম্মত হয় বলে আমি মনে করিনা।
ঢাকা ( Dhaka )সহ সারাদেশে টিসিবির ন্যায্যমূল্যের পণ্যবাহী ট্রাকের পেছনের লাইনই প্রমাণ যে, সারাবিশ্বের চলমান পরিস্থিতে দেশের মধ্যবিত্তের একটি বড় অংশকে দারিদ্র্যসীমার নিচে নিয়ে এসেছে। এই লাইনে অনেক লোক আছে যারা কিছুদিন আগেও মধ্যবিত্ত ছিল। ‘সন্তানের লজ্জা করে, তাই সাশ্রয়ী পণ্যের জন্য মা দাঁড়িয়েছে’ শিরোনামের একটি প্রতিবেদনে একটি দরিদ্র পরিবারের দরিদ্র হওয়ার গল্প দেখানো হয়েছে। পরিবারগুলো কিছু টাকা বাঁচাতে টিসিবি ট্রাকের পেছনে ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকে। আমরা প্রায় দেখছি এ নিয়ে গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশিত হচ্ছে। আমি যখন ট্রাকের পাশ দিয়ে যাচ্ছি, আমি অনেক লোককে দেখতে পাই যাদের চেহারা এবং পোশাক মধ্যবিত্ত দ্বারা চিহ্নিত।সারাবিশ্বের চলমান পরিস্থিতে কারণে হঠাৎ করে দারিদ্র্যের কবলে পড়া এসব মানুষের অসহায়ত্ব উচ্চবিত্তের এসব মানুষের কাছে পৌঁছাতে পারে না।
শুধু সারাবিশ্বের চলমান পরিস্থিতির সময়েই নয়, আগেও দেশের খাদ্য নিরাপত্তা ছিল খুবই নাজুক। রাষ্ট্র পরিচালিত বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো ( Bangladesh Bureau Statistics ) (বিবিএস ( BBS )) দ্বারা নভেম্বর-ডিসেম্বর ২০১৯ সালে পরিচালিত একটি জরিপে দেখা গেছে যে শহরের ৪ শতাংশ দরিদ্র পরিবার খাবার ছাড়াই বিছানায় যায়, ১২ শতাংশের বাড়িতে খাবার নেই, ২১ শতাংশের বেশি শতাংশে কোন খাবার নেই, এবং দিনে একবার খান। শহুরে দরিদ্র পরিবারের প্রায় 3 শতাংশ এটি পায় না। অর্থাৎ ঢাকা ( Dhaka ) শহরে অন্তত ৬ লাখ মানুষ দিনে একবার হলেও না খেয়ে ঘুমাতে যান, আর অন্তত ১৬ লাখ মানুষ রাতে না খেয়ে ঘুমাতে যান। এই পরিস্থিতি যদি সরা বিশ্বের ছড়িয়ে পড়া রোগের আগে হয়ে থাকে হত, তাহলে বর্তমান পরিস্থিতি বুঝতে খুব একটা অসুবিধা হওয়ার কথা নয়।
এদেশের মানুষের ক্ষুধার বহিঃপ্রকাশ বোঝার জন্য মিডিয়ারা দিকে তাকালেই যথেষ্ট। তথ্যমন্ত্রী হয়েও তিনি হয়তো এসব মিডিয়ার প্রতিবেদন একেবারেই পড়েন না। দেশের মূলধারার সংবাদপত্র ও নিউজ পোর্টালগুলো ক্ষুধা মেটাতে না পেরে তথাকথিত উন্নয়নের মহাসড়কে বাংলাদেশের নাগরিকদের ছুটে চলার খবরে ছেয়ে গেছে। ২০২০ এবং ২০২১-এর কিছু শিরোনাম – ‘ঘরে খাদ্য সংকট, ফ্রিল্যান্সার প্ররলোক প্রপ্তি খাদ্যের অভাবে শিশু নিজেকে নিথর করে দেয়া ‘না খেয়ে বগুড়ায় বৃদ্ধ, সিরাজগঞ্জে শিশুর প্রয়ান অভাবের তাড়নায় দিনমজুরের নিজেকে নিথর করে দেয়া, অভাবে ৭ সন্তানের জননীর পরলোক গমন খাবারের অভাবে হোটেল কর্মীকে গলা টিপে নিথর করা। এই সকল ঘটনা বিচ্ছিন্ন খবর নয়। নিয়মিত বিরতিতে এ ধরনের খবর আসে। এটি অধীনে করা কঠিন নয়
উল্লেখ্য, রুমিন ফারহানা তার এই আর্টিকেলে আরও প্রকাশ করেন, কিছু ব্যবসায়ী ও রাজনৈতিক নেতাকর্মী এমনকি এদের সমর্থকদের বোঝা কঠিন। তদের বলা মতে বাংলাদেশ মানুষের জন্য স্বর্গ স্বরূপ । এসকল নেতা ও ব্যবসায়ীরা সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়া রোগের সময় কালেও এমনটাই দাবি করেন। তবে সেই সংবাদ কর্মী জানান বাংলাদেশে কখনোই ধনী ছিলনা তারপর বিশ্বের চলমান পরিস্থিতিতে মানুষকে রাস্তায় এনে ফেলেছে। ব্র্যাক-পিপিআরসি দাবি এসময়ে দরিদ্র মানুষের সংখ্যা দ্বিগুণ হয়েছে।