জলবায়ু সম্মেলনে যোগ দিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সেখানে তিনি তার স্বভাবসুলভ ভঙ্গিতে কোনো দিকে বিবেচনা না করেই আলিঙ্গন করলেন জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসকে। মহাসচিব তার এই ধরনের আলিঙ্গনের জন্য প্রস্তুত ছিলেন না যার কারনে অস্বস্তি প্রকাশ করে ছিলেন গুতেরেস। তার সেই অস্বস্তিকর আলিঙ্গন ক্যামেরা থেকে এড়াতে পারেননি। মোদি ঠিক যেভাবে মহাসচিবের কাছ থেকে আগ্রহ আশা করেছিলেন সেভাবে সাড়া দেননি জাতিসংঘ মহাসচিব। গুতেরেস তার আলিঙ্গনের বিষয়টিতে যে অসন্তুষ্ট ছিলেন সেটা তার অভিব্যাক্তিতে প্রকাশ করেন।
গুতেরেসের কাছ থেকে তিনি আন্তরিকতা না পেলেও, মোদি অন্য রাষ্ট্রনায়কদের সাথে বেশ হাস্যরসাত্মকভাবে আলিঙ্গন করতে সক্ষম হয়েছেন। তাদের মধ্যে কানাডার জাস্টিন ট্রুডো, লুক্সেমবার্গের জেভিয়ার বেটেল এবং আরও অনেকে ছিলেন।
দেশে হোক বা বিদেশে, যে কোনো রাষ্ট্রনেতার সঙ্গে সাক্ষাতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি প্রথমেই নিবিড় আলিঙ্গনে আবদ্ধ হন। তার শুভানুধ্যায়ী, গুণমুগ্ধেরা বলে থাকেন এটা নাকি প্রধানমন্ত্রীর ‘আলিঙ্গন-কূটনীতি’। বিশ্বের চলমান পরিস্থিতির কারনে সেই ‘আলিঙ্গন’ই প্রশ্নের মুখে পড়েছে। জলবায়ু সম্মেলনে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর আলিঙ্গনে দৃশ্যতই ‘অস্বস্তি’তে জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিয়ো গুতেরেস।
জলবায়ু সম্মেলনে ২০৭০ সালের মধ্যে কার্বন নিঃসরণ শূন্যের কোটায় নিয়ে আসার প্রতিশ্রুতি দিলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম বিবিসি জানায়, গ্লাসগো জলবায়ু সম্মেলনে এ প্রতিশ্রুতি দেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এছাড়া মোদি আরও পাঁচটি প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
বিবিসি জানাচ্ছে, এই প্রথম কোনো দেশ এমন প্রতিশ্রুতি দিল। শূন্যের কোঠা বা কার্বন নিরপেক্ষতা মানে নিয়ে যাওয়া মানে বায়ুমণ্ডলে আর গ্রিন হাউস গ্যাস যোগ হবে না। আগেও অন্যান্য প্রধান দূষণকারী দেশগুলোর মতো কার্বন নিঃসরণ কমিয়ে আনার প্রতিশ্রুতি দিয়েও তা রক্ষা করেনি ভারত। চীন, ইইউর পর বিশ্বের অন্যতম কার্বন ডাই অক্সাইড নির্গমনকারী দেশ ভারত।
চীন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের পরে ভারত বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম কার্বন ডাই অক্সাইড নির্গমনকারী দেশ। কিন্তু এর বিশাল জনসংখ্যার দেশ মাথাপিছু নির্গমন বিশ্বের অন্যান্য প্রধান অর্থনীতির দেশের তুলনায় তুলনায় অনেক কম।
ভারত ২০১৯ সালে মাথাপিছু কার্বন ডাই অক্সাইড নির্গতের পরিমান যেটা সেটা ১.৯ টন, আর সেইখানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মাথাপিছু কার্বনডাই অক্সাইড নি:সরনের পরিমান ১৫.৫ টন এবং রাশিয়ায় ১২.৫ টন। এদিকে, আন্তর্জাতিক মিডিয়া রিপোর্টের তরফ থেকে বলছে যে, মোদির ঘোষণা দিয়েছে যে আগামি ২০৫০ সালের মধ্যে কার্বন নিঃসরনের যে পরিমান সেটা শূন্যে নামিয়ে আনা সম্ভব হবে কিন্তু তিনি যে বিবেচনায় এমন ধরনের মন্তব্য করেছেন সেটা বিশ্বের জন্য কতটা কার্যকর হবে তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে।
আন্তর্জাতিক মিডিয়া অনুসারে, এই বছরের সম্মেলনের লক্ষ্য হলো ২০৫০ সালের মধ্যে কার্বন নিঃসরণের যে পরিমান সেটা শূন্যে নামিয়ে আনা। যাইহোক, নরেন্দ্র মোদি এই বিষয়টিকে কিছুটা পিছিয়ে নেন যেটা ২০৭০ সাল। এই সাল নাগাদ কার্বন নির্গমনকে শূন্যের কোঠায় নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছেন।