Tuesday , December 24 2024
Breaking News
Home / Countrywide / মোটা বেতন শুনে ভুয়া কাবিনামা করে সরকারি কর্মকর্তা বিয়ের দাবী যুবতীর, হলো না শেষ রক্ষা

মোটা বেতন শুনে ভুয়া কাবিনামা করে সরকারি কর্মকর্তা বিয়ের দাবী যুবতীর, হলো না শেষ রক্ষা

মাঝে মাঝে গণমাধ্যমে বিয়ে নিয়ে প্রতারণার বিষয়টি সামনে আসে, যেখানে দেখা যায় ভুয়া কাবিননামা তৈরি করার মাধ্যমে ধন্যাঢ্য ব্যক্তিদের বিবাহ দেখিয়ে অর্থ আত্মসাতের ঘটনা। এই সকল কাজে নারীসহ একটি চক্র যুক্ত থাকে এবং ভুক্তভোগী ব্যক্তিকে হয়রানির মাধ্যমে চক্রান্তকারীরা হাতিয়ে নিয়ে থাকে বিপুল পরিমাণ অর্থ। এবার এক সরকারি কর্মকর্তার নিকট থেকে এমনই প্রতারণার মাধ্যমে অর্থ হাতিয়ে নিয়ে নিতে গিয়ে বিপাকে পড়ে কনে এবং তার সহযোগীরা।

জয়পুরহাটের অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে স্বামীর বিরুদ্ধে যৌতুক, নারী নি/’র্যাতন ও মোটা অংকের চাঁদা দাবির মামলায় স্বামীসহ পাঁচ সহযোগীকে হেফাজতে পাঠিয়েছে আদালত। বুধবার (২২ জুন) বিকেলে অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আবদুল্লাহ আল মামুন এ আদেশ দিলে সন্ধ্যায় অভিযুক্ত কনেসহ আটজনকে কারাগারে পাঠানো হয়।

দিনাজপুরের হাকিমপুর উপজেলার বাসুদেবপুর গ্রামের প্রয়াত রুবেল শেখের মেয়ে রিনি আক্তার (২৮), একই গ্রামের উত্তর পাড়ার এবারত আলীর ছেলে ইসরাইল শেখ (ইছা), একই উপজেলার চন্ডিপুর গ্রামের প্রয়াত নজরুল ইসলামের ছেলে আবু সাঈদ (৩০)। জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলার উত্তরে মো. গোপালপুর গ্রামের হায়দার আলীর ছেলে সোহেল রানা, একই উপজেলার রতনপুর গ্রামের প্রয়াত কেরামত আলীর ছেলে পারভেজ আলী ও বগুড়া সদর উপজেলার আতাপাড়া গ্রামের প্রয়াত ইমান আলী সরদারের ছেলে রবিউল ইসলাম।

মামলা সূত্রে জানা গেছে, রিনি আক্তার ব্যবসায়িক কাজে বগুড়া জেলা শহরে যাতায়াত করতেন। রিনি তার মোটরসাইকেল নিবন্ধনের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে বগুড়া সদর পোস্ট অফিসের একজন সরকারি কর্মকর্তা আল আমিনের সাথে দেখা করেন। রিনি পরে জানতে পারে যে আল-আমিন একজন ভালো বেতনের সরকারি কর্মচারী। অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার কৌশল হিসেবে প্রথমে তার ব্যবসায় পুঁজি বিনিয়োগ করতে আলআমিনকে প্রলুব্ধ করেন।

আল-আমিন এতে রাজি না হলে রিনী আক্তার তার সহযোগীদেরকে স্বাক্ষী করে শহরের পাটারপাড়া এলাকার প্রয়াত কাজী নূরল ইসলামকে বিয়ের কাজী দেখিয়ে বিয়ের ভুয়া রেজিষ্ট্রি ও ৫ লাখ টাকার দেনমোহরের কাবিননামা তৈরি করেন। পরে ২০২১ সালের ২২ আগস্ট দিনাজপুর নারী সংশ্লিষ্ট ট্রাইব্যুনালে মাম”লা করেন রিনি। ওই মামলায় হাজিরা দিতে একই বছরের ১৯ অক্টোবর আল-আমিনকে দিনাজপুর কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয় এবং ৩১ অক্টোবর জামিনে মুক্তি পান।

এদিকে ভুয়া কাবিনকে চ্যালেঞ্জ করে আল-আমিন গত বছরের ৯ আগস্ট জয়পুরহাট চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে রিনি ও তার সহযোগীদের (কেবিনের সাক্ষী) বিরুদ্ধে মামলা করেন। আদালত বিষয়টি তদন্তের জন্য জেলা সাব-রেজিস্ট্রারকে নির্দেশ দেন এবং গত বছরের ১১ অক্টোবর সদর সাব-রেজিস্ট্রার দোস্ত মোহাম্মদ আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেন। ওই তদন্ত প্রতিবেদনে রিনি ও আল আমিনের বিয়ের সনদ জাল প্রমাণিত হয়।

বুধবার (২২ জুন) বাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মানিক হোসেন ও আসামিপক্ষের আইনজীবী এসএম আশফাকুল আলম রাজু যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন। তদন্ত প্রতিবেদনে মিথ্যা তথ্য দিয়ে আল আমিনের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করায় রিনি ও তার ছয় সহযোগীকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন অতিরিক্ত প্রধান বিচারিক আদালতের বিচারক আবদুল্লাহ আল মামুন।

আসা/মিদের পক্ষে উপস্থিত হয়ে অ্যাডভোকেট এসএম আশফাকুল আলম রাজু বলেন, তারা এই আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করবেন। জয়পুরহাট কোর্ট থানার পরিদর্শক আব্দুল লতিফ খান জানান, আইনি প্রক্রিয়া শেষে সন্ধ্যায় আসা’মিদের জে’লহা”জতে পাঠানো হয়েছে।

উল্লেখ্য, ভুয়া কাবিননামার মাধ্যমে এই ধরনের প্রতারণা যাতে আর না ঘটে থাকে, সে বিষয়ে সংশ্লিষ্ট বিভাগকে আরো সতর্ক হওয়ার আহবান জানিয়েছেন বিশিষ্টজনেরা। এর আগেও এই ধরনের প্রতারণার মাধ্যমে ভুয়া কাবিননামা তৈরি করে প্রবাসী এক ধনাঢ্য ব্যক্তিকে নি:স্ব করে দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে, যেটা উঠে এসেছে দেশের সংবাদ মাধ্যমের প্রতিবেদনে।

About bisso Jit

Check Also

দীর্ঘ ১৭ বছর পর কারাগার থেকে মুক্তি পেলেন বিএনপি নেতা পিন্টু

২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় খালাস পাওয়া বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও সাবেক শিক্ষা উপমন্ত্রী আবদুস …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *