চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার এক স্কুল ছাত্রীর সাথে আপত্তিকর কাজ করার সময় হাতেনাতে ধরা খাওয়া এক শিক্ষককে আটক রেখেছে স্থানীয় জনগণ। পরবর্তীতে এই ঘটনার প্রেক্ষিতে ঐ শিক্ষক এবং ছাত্রীকে পুলিশের হাতে তুলে দেয়। গতকাল মঙ্গলবার অর্থাৎ ২৩ আগস্ট দুপুরের পর শিবগঞ্জ উপজেলার উচ্চ বিদ্যালয় এ ধরনের অসামাজিক ঘটনা ঘটেছে বলে জানা যায়। এই ঘটনার পর ওই ছাত্রী অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলেন।
অভিযুক্ত শিক্ষক গোলাম কবির (৪৫)ছত্রাজিতপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের শারীরিক শিক্ষার শিক্ষক ও ছত্রাজিতপুর ইউনিয়নের কাঠালিয়াপাড়া গ্রামের প্রয়াত তাজেমুল হকের ছেলে।
স্থানীয় বাসিন্দা, বিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী, প্রত্যক্ষদর্শী, বিদ্যালয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে স্থানীয় কয়েকজন যুবক শিক্ষক গোলাম কবির ও ছাত্রীকে ছত্রাজিতপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রবেশ করতে দেখেন। পরে স্থানীয়রা একটি কক্ষে বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীকে দেখতে পান। বিদ্যালয়ের শারীরিক শিক্ষা বিভাগের সরঞ্জাম রাখার কক্ষে আপত্তিকর অবস্থায় তাদের আটক করা হয়। পরে বিক্ষুব্ধ জনতা প্রতিবাদে বিদ্যালয়ে ইট-পাথর নিক্ষেপ করে।
খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে স্কুল কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয় বাসিন্দারা দুজনকে পুলিশের কাছে সোপর্দ করে। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী এক প্রাক্তন ছাত্র নাম প্রকাশ না করার শর্তে সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, আমরা স্থানীয় কয়েকজন যুবক দীর্ঘ দিন ধরে তাদের অনুসরণ করছি। আমি প্রায়ই স্কুল ছুটির পর তাদেরকে বিকেলে স্কুলে ঢুকতে দেখি। শারীরিক শিক্ষা বিভাগের শিক্ষক গোলাম কবিরের কাছে বিদ্যালয়ের প্রধান ফটকসহ বিভিন্ন কক্ষের চাবি রয়েছে, প্রবেশের পর বাইরের তালা দেওয়া হয়। যাতে মনে হয় ভিতরে কেউ নেই। আজ সুযোগ মতো পেয়েছি বলে ধরতে সক্ষম হয়েছি।
ছত্রাজিতপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহা. সাদিকুল ইসলাম বলেন, বিকেলে হঠাৎ আমার মোবাইলে কল আসে, শিক্ষক গোলাম কবির ও এক ছাত্রীকে একটি কক্ষে আটকে রাখা হয়েছে। সবার সঙ্গে কথা বলে পরিস্থিতির অবনতি হলে তাদের পুলিশে সোপর্দ করা হয়। একই কক্ষে দুজনকে পাওয়া গেলেও কী অবস্থায় পাওয়া গেছে তা আমরা নিশ্চিত নই। ১৯৯৫ সালে যোগদানের পর থেকে অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ ওঠেনি।
স্থানীয় যুবক নয়ন আলী সংবাদ মাধ্যমকে জানান, আটকের পর ওই ছাত্রী আমাদের জানায়, শিক্ষক গোলাম কবির তাকে অনেক আগেই স্কাউটের পোশাক দিয়েছিলেন। এ সময় একটি কক্ষে পোশাক পরা অবস্থায় কিছু আপত্তিকর ছবি তোলেন ওই শিক্ষক। পরে এ ছবি নিয়ে তাকে ব্ল্যাকমেইল করে কয়েক দফা শারীরিক সম্পর্ক করে শিক্ষক গোলাম কবির।
আসাদুজ্জামান যিনি শিবগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন, তিনি ঘটনার বিষয়ে জানান, ছত্রাজিতপুর স্কুলে একটি ঝামেলার কথা শোনার পর সেখানে পুলিশ পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। সেখানে ভিড় করা জনতার একটি অংশ ওই শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীকে আটক করে রাখে এবং এরপর থানায় নিয়ে আসেন। তারা অভিযোগ করছেন, ওই শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীকে খারাপ কাজের সময় হাতেনাতে হয়েছে।