নিজের বয়ফ্রেন্ড দাবি করে এক যুবককে বিয়ে করতে মরিয়া এক তরুণীর সঙ্গে যোগ দিয়েছেন তার মা। মা-মেয়ে দুজনেই অনশন শুরু করেছেন। তদের দাবি সাগর নামে এক যুবকের সাথে তার মেয়ে দীর্ঘদিন যাবত পেমের সম্পর্ক। যার জন্য তার মেয়ে বাসা থেকে পালিয়ে ছেলের বাড়িতে এসেছে। এই নিয়ে এলাকার মধ্যে এক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।
এই ঘটনা সম্পর্কে অনশনে থাকা মেয়ের মা খাকিরুন বেগমকে ( Khakirun Begum ) ঢাকা ( Dhaka ) থেকে নিয়ে আসার পর শুক্রবার বিকেলে ( Friday afternoon ) মাগুরা ( Magura ) সদর উপজেলার মাঝি ইউনিয়নে তাজনুর হোসেন ( Tajnur Hossain ) নামে এক যুবকের বাড়িতে অনশন শুরু করেন তারা। বিয়ে না হওয়া পর্যন্ত তিনি অনশন ভাঙবেন না বলে জানিয়েছেন।
খাকিরুন নিউজবাংলাকে জানান, তিনি একটি পোশাক কারখানায় কাজ করেন। স্বামীর সাথে তার বিবাহ বিচ্ছেদ হয়েছে অনেক আগেই। এরপর থেকে তিনি তার মেয়েকে নিয়ে বসবাস করছেন। তাজনুরের প্রতি ভালোবাসার কথা তিনি জানতেন তার মেয়ের কাছ থেকে। ১৮ বছর বয়সী ওই তরুণী বলেন, ছেলেটি বিয়ে করতে ইচ্ছুক। আমি তার সঙ্গে কথা বলেছি, কিন্তু তার বাবা-মা কেউ রাজি হননি। তারা আমাকে পছন্দ করেন না।
না, আমার একটা ছেলে দরকার। বিয়ে করলে সব ঠিক হয়ে যাবে। আমি বিয়ে না করলে আমার মাও এখানে থাকবে না। তরুণী মাকে আনার পর তাজনুর পরিবার বাড়ি ছেড়ে চলে যায়। তাজনুর মামা স্থানীয় গ্রাম্য চিকিৎসক বাবুল হোসেন জানান, ছেলের পরিবার গ্রামেই ছিল। লোকলজ্জার ভয়ে তারা নিজেদের শরীর ঢেকে রেখেছে। তিনিই মা-মেয়ের সঙ্গে কথা বলেছেন।
বাবুল বলেন, এভাবে বিয়ে করা সম্ভব নয়। আমরা তাদের এখান থেকে বের করার চেষ্টা করছি। ছেলেটির বাবা-মা বিয়েতে রাজি হননি। তারা বিয়ের দাবিতে আসলেও ছেলের চাচাতো ভাই এক ভাই সাগরকে ঢাকায় রাখে। বিয়ে না করলে সাগরকে ছাড়বেন না বলে জানিয়েছেন তিনি। আমরা মহা বিপদে আছি। ”
সাগর সম্পর্কে ওই তরুণীর মা বলেন, “সাগর ছেলে সব কিছুর জন্য দায়ী। সে সব জানে। সাগর জানে আমার মেয়ের সঙ্গে তাজনুর কতটা প্রেমের সম্পর্ক ছিল। সে আমাদের প্রমাণ। এজন্য তাকে নিরাপদে ঢাকায় রেখেছি। এখানে বিয়ে করলে ওকে ছেড়ে দেব। বিয়ের দাবিতে গত ২২ মে সন্ধ্যায় প্রথমে তাজনুর বাড়িতে অবস্থান নেন ওই তরুণী। তার বাড়ি তাজনুর পাশে ইউনিয়ন রাঘবদাউরে। মায়ের সাথে ঢাকায় থাকে।
এ সময় তিনি বলেন, তাজনুরের সঙ্গে ৯ মাস ধরে তার প্রেমের সম্পর্ক চলে আসছে। তাদের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক তৈরি হয়। একপর্যায়ে ছেলেকে বিয়ের কথা বললে সে পিছিয়ে যায়। এরপর তিনি ঢাকায় তাজনুর কর্মস্থলে যান। সেখান থেকে ২২ মে মাঘিতে ফেরেন দুজনে।
ছেলের পরিবার তাদের সম্পর্ক মেনে নেয়নি। তারা মেয়েটিকে বাসায় যেতে বলে। ১২ ঘণ্টা পর বিয়ে না করলে আত্মহত্যার হুমকি দিয়ে মাকে আনতে যায় মেয়ে। স্থানীয় মাঝি ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য তোরাব আলী বলেন, “আমার এলাকায় এমন ঘটনা ঘটেছে শুনেছি। একটি মেয়ে বিয়ের দাবিতে এসেছে। আমাকে ফোন করলে আমি সেখানে যাব।’
শনিবার সকালে ছকিরুন নিউজবাংলাকে বলেন, “এখন পর্যন্ত ছেলেটির পরিবারের কেউ আমাদের কিছু জানায়নি।” স্থানীয় মাতব্বররা আমাদের চলে যাওয়ার জন্য চাপ দিচ্ছে। মেয়েকে বিয়ে না করে ছাড়ব না। আমরা শুধু জল খাচ্ছি। সমাধান না হলে আমরা কিছু খাব না। আজকের মধ্যে তারা রাজি না হলে স্থানীয় থানায় মামলা করতে যাব। ‘
এই ঘটনা সম্পর্কে মেয়ের মা আরো বলেন, এর আগে আমার মেয়ে একাই বিয়ের দাবিতে এসেছিল। এখন আমি এখানে এসে ছেলের সাথে বিয়ের বিষয়ে কথা বলি। এরপর সে অভিভাবক নিয়ে এসে কথা বলার প্রতিশ্রুতি দেন তারা। তাই আমি আমার মেয়েকে নিয়ে এখানে অবস্থান করছি। আমি এই বারান্দায় বসে আছি, কেউ আমাদের সাথে কথা বলছে না। আমি আমার মেয়েকে বিয়ে না করে এখান থেকে যাব না।