ভূয়া অথবা স্বল্প যোগ্যতা নিয়ে রাজনৈতিক প্রভাব ও স্বজনপ্রীতি খাটিয়ে বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার আঞ্চলিক পরিচালকের একটি টেকনিক্যাল পদ দখলের চেষ্টা করছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী কন্যা সায়মা ওয়াজেদ পুতুল।
সায়মা দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার আঞ্চলিক পরিচালক পদে দুই প্রার্থীর একজন। তার মা শেখ হাসিনা বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার করাণে বাংলাদেশ তাকে মনোনীত করেছে। সায়মার সর্বোচ্চ শিক্ষাগত যোগ্যতা যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডার অঙ্গরাজ্যের একটি প্রাইভেট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ব্যারি ইউনিভার্সিটি থেকে ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিতে এমএসসি, যে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে অর্থের বিনিময়ে সনদ বিক্রির অভিযোগ আছে। আঞ্চলিক পরিচালক পদের জন্য অন্য ১১ জন প্রার্থী হয় মেডিকেল ডাক্তার বা পিএইচডি আছে, অথবা মেডিকেল ডাক্তার যাদের পিএইচডি আছে, অথচ সায়মা তার দাদার নামে একটি বাংলাদেশী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সম্মানসূচক ডক্টরেট নিয়ে টুইটার একাউন্ট খুলে নামের সাথে Dr যুক্ত করেছেন।
তার ফিডে এই বছরের শুরুর দিকে দক্ষিণ আফ্রিকায় ব্রিকস সম্মেলনে এবং G20 এর শীর্ষ সম্মেলনে তার মায়ের সাথে তিনি মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং-এর মতো বিশ্ব নেতাদের সাথে তোলা ছবি দিয়েছেন, যা তার নয়, বরং মায়ের প্রধানমন্ত্রীত্ব পদের পারিবারিক ব্যবহার। জনস্বাস্থ্য নেতৃত্ব বিভাগে তার অভিজ্ঞতা নিয়ে সায়মা দাবী করছেন, “আমি বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক সম্মেলন যেমন জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ এবং অন্যান্য জাতীয় সম্মেলনের পার্শ্ব ইভেন্টগুলিতে অংশ নিয়েছি।” এটা তার যোগ্যতা হিসাবে সম্পূর্ণরূপে অগ্রহণযোগ্য, বলছেন বিশেষজ্ঞরা। তাছাড়া, সায়মা তার মায়ের দমনমূলক শাসনব্যবস্থার সুবিধাভোগী, যে শাসনকে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল এবং হিউম্যান রাইটস ওয়াচ, জাতিসংঘ কর্তৃক স্বীকৃত স্বাধীন বিশেষজ্ঞরা সমালোচনা করা হয়েছে।
হার্ভার্ড মেডিকেল স্কুলের (বোস্টন, এমএ, ইউএসএ) গ্লোবাল হেলথ অ্যান্ড সোশ্যাল মেডিসিন ইন দ্য ফিল্ডের অধ্যাপক ড. সালমান কেশবজী মনে করেন, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার জন্য বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার আঞ্চলিক পরিচালক হিসাবে নির্বাচিত হতে গেলে ব্যক্তিটির চিকিৎসা এবং জনস্বাস্থ্যের উন্নত প্রশিক্ষণ থাকা আবশ্যক এবং নেতৃত্বের প্রমানিত রেকর্ড থাকা দরকার। সায়মার তেমন যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতার অভাব রয়েছে। তার উচ্চ পর্যায়ের নেতৃত্বের অভিজ্ঞতা নেই। যদি তিনি আঞ্চলিক পরিচালক হন, তবে WHO স্বজনপ্রীতি সমর্থন করবে। এটা অনেক বিশ্বাসযোগ্যতা হারাবে।” লন্ডনের কুইন মেরি বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক রাজনীতির অধ্যাপক সোফি হারম্যান মনে করেন, বিশ্বস্বাস্থ সংস্থার একটি উচ্চ পর্যায়ের মাঠে অফিসের প্রধান পদের জন্য বাংলাদেশের মনোনয়ন মেধার ভিত্তিতে হয়নি।
সায়মা ওয়াজেদ তার মায়ের প্রধানমন্ত্রীত্বের সুযোগ নিয়ে বিশ্বব্যাপী শীর্ষ সম্মেলনে প্রচারণা চালাচ্ছেন, তাই তিনি সম্ভবত আঞ্চলিক পরিচালকের মনোনয়নের জন্য WHO কোড অফ কন্ডাক্ট লঙ্ঘন করেছেন এবং প্রার্থীতা বাতিল ঘোষণা করা যেতে পারে।
Home / opinion / মেয়ের জন্য স্বজনপ্রীতি করায় হাসিনার হাতে হারিকেন ধরিয়ে দিয়েছে আন্তর্জাতিক মিডিয়া : শামসুল
Check Also
যে কারণে সেনাবাহিনীকে প্রস্তুতি নিতে বললেন সাংবাদিক ইলিয়াস
বিশিষ্ট সাংবাদিক ইলিয়াস হোসেন তার সাম্প্রতিক এক মন্তব্যে সেনাবাহিনীকে প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। বুধবার (২০ …