চাকরিতে তার আরো এক বছর মেয়াদ রয়েছে। কিন্তু তার মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার আগেই মোঃ মকবুল হোসেন যিনি তথ্য সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন, তাঁকে সরকার আগেভাগেই অবসরে পাঠিয়ে দিয়েছে। জানা গেছে আগামী ২০২৩ সালের ২৫ অক্টোবর তার স্বাভাবিক নিয়মে অবসরে যাওয়ার কথা, কিন্তু তাকে গতকাল রবিবার অর্থাৎ ১৬ অক্টোবর অবসরে পাঠিয়ে দেয়ার প্রজ্ঞাপন জারি করা হলো এবং প্রজ্ঞাপনের স্বাক্ষর করেন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব কে এম আলী আজম। তবে তাকে অবসর পাঠানোর ঠিক কি কারণে রয়েছে সে বিষয়ে কিছু জানা যায়নি।
তথ্য মন্ত্রণালয়ের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, কেন বাধ্যতামূলক অব্যাহতি দেওয়া হলো তা আমি জানি না। তবে তার চাকরির বয়স বাকি ছিল আরও এক বছর। এ বিষয়ে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদেরও কোনো সদুত্তর পাওয়া যায়নি। সাংবাদিকরা জানতে চাইলে তিনি বলেন, তিনি অবসরে গেছেন এবং প্রজ্ঞাপন জারি হয়েছে-এটা আমি জানি। তবে কেন অবসর দেওয়া হলো সে বিষয়ে আমি অবগত নই।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মকবুল হোসেন (৫৫১৪) সরকারি চাকরি আইন ২০১৮ এর ৪৫ ধারা অনুযায়ী জনস্বার্থে সরকারি চাকরি থেকে অবসরপ্রাপ্ত হয়েছেন। এই আদেশ জনস্বার্থে অবিলম্বে কার্যকর হবে।
আইনের ৪৫ ধারায় বলা হয়েছে যে ২৫ বছর চাকুরী পূর্ণ করার পর, সরকার জনস্বার্থে প্রয়োজন মনে করলে কোনো কারণ দর্শানো ছাড়াই যে কোনো সময় কোনো সরকারি কর্মচারীকে চাকরি থেকে অবসর দিতে পারে। তবে শর্ত থাকে যে, যেসব ক্ষেত্রে রাষ্ট্রপতি নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ, সে ক্ষেত্রে রাষ্ট্রপতির অনুমোদন প্রাপ্ত হবে।
মোঃ মকবুল হোসেন ৩১ মে, ২০২১ তারিখে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ে সচিব হিসাবে যোগদান করেন। এই পদে যোগদানের আগে তিনি জয়েন্ট ভেঞ্চার কোম্পানি ও ফার্মস অধিদপ্তরে রেজিস্ট্রার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। এর আগে তিনি বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ে অতিরিক্ত সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
মকবুল হোসেন বিসিএস (প্রশাসন) ক্যাডারের ১০ম ব্যাচের কর্মকর্তা হিসেবে ১৯৯১ সালে বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসে যোগ দেন। তিনি বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ময়মনসিংহ থেকে কৃষি অর্থনীতিতে অনার্স এবং পরে ব্যবসায় প্রশাসনে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার বল্লভপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।
সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মাঝে মাঝেই উচ্চ পর্যায়ের সরকারি কর্মকর্তাদের বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠিয়ে দেয়া হয়। তবে অবসরে পাঠানোর ঠিক কী কারণ থাকে সবসময় সে সমস্ত কারণ প্রকাশ পায় না। অনেক সময় কারণ প্রকাশ করা হলেও বেশিরভাগ ক্ষেত্রে কারণ অপ্রকাশ্যেই থাকে। মোঃ মকবুল হোসেনকে ঠিক কি কারণে অবসরে পাঠিয়ে দেয়া হল সে বিষয়ে তেমন কোনো কিছুই প্রকাশ করা হয়নি।