মেজর ডালিমের এক হাতে একটি আঙুল নেই, কী ঘটেছিল?

দীর্ঘদিন আড়ালে থাকার পর প্রবাসী সাংবাদিক ইলিয়াস হোসেনের লাইভ টকশোতে হাজির হয়ে নিজের জীবনের নানা দিক তুলে ধরেছেন বীর মুক্তিযোদ্ধা লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) শরিফুল হক ডালিম (বীর বিক্রম)। শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার অভিযোগে অভিযুক্ত মেজর ডালিম লাইভে ৫০ বছরের পুরোনো অনেক প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন।

লাইভের এক পর্যায়ে তিনি তার বাম হাত দেখিয়ে জানান, মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ের এক সংঘর্ষে তিনি আহত হয়ে বাম হাতের একটি আঙুল হারিয়েছিলেন। এছাড়াও তার শরীরে মুক্তিযুদ্ধের সময়ের বেশ কিছু আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।

মেজর ডালিম বলেন, “যুদ্ধের সময় আমি তিন-চারবার আহত হয়েছিলাম। তার একটি প্রমাণ হলো আমার বাম হাতের অবস্থা।” তিনি তার হাত দেখালে দেখা যায়, তার বাম হাতে একটি আঙুল নেই।

লাইভে মেজর ডালিম আরও বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের ঘটনা কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়; এর শিকড় মুক্তিযুদ্ধের সময় থেকে গভীরভাবে প্রোথিত। তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধকালীন ভারতের সঙ্গে প্রোভিশনাল গভর্নমেন্টের সাত দফা চুক্তি এবং শেখ মুজিবের স্বৈরাচারী আচরণই পরবর্তী পরিস্থিতির পথ তৈরি করেছিল।

তিনি দাবি করেন, “১৫ আগস্টের সামরিক অভ্যুত্থানে মুজিব নিহত হন। এটি কোনো মার্বেল খেলার মতো ঘটনা ছিল না। দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে হতাহতের ঘটনা ঘটেছিল। তবে বিপ্লবীরা বিজয়ী হয়ে ক্ষমতা নিজেদের হাতে নেয়।”

শেখ মুজিবের মৃত্যু এবং বাকশালের পতনের খবরের পর জনগণের প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে তিনি বলেন, “শহর-বন্দর-গ্রামের মানুষ আনন্দ মিছিল করেছিল। এমনকি আন্ডারগ্রাউন্ড থাকা রাজনৈতিক দলগুলোও জনসমর্থন নিয়ে প্রকাশ্যে আসে। এভাবেই ১৫ আগস্টের সামরিক অভ্যুত্থান জনসমর্থন পেয়েছিল।”

বর্তমান প্রজন্মের বিপ্লবীদের উদ্দেশে মেজর ডালিম বলেন, “আমি নতুন প্রজন্মের ছাত্র-জনতার প্রতি লাল শুভেচ্ছা জানাই। তাদের বিপ্লবী কর্মকাণ্ডে যদি কোনো অবদান রাখতে পারি, তাহলে আমরা প্রস্তুত। তাদের বিজয়ের জন্য দোয়া করি এবং আশা করি, তারা একটি সুখী, সমৃদ্ধ, এবং শক্তিশালী বাংলাদেশ গড়ে তুলবে।”

এ সময় তিনি ২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানের নেপথ্যের নায়কদের প্রতি তার পরামর্শ এবং সমর্থনও প্রকাশ করেন।