ছোট পর্দার অভিনেত্রী হোমায়রা হিমু গত ২ নভেম্বর মারা যান। অনেকে মনে করেন তিনি রাজধানীর উত্তরায় নিজ বাসায় আত্মহত্যা করেছেন। যদিও এরই মধ্যে তার মৃত্যুকে ঘিরে প্রকাশ্যে এসেছে নানা চাঞ্চল্যকর তথ্য। গ্রেফতার করা হয় তার বন্ধুকেও। কিছুতেই তার মৃত্যুর রহস্য উদঘাটন হচ্ছে না।
মৃত্যুর কয়েক মাস আগে হিমু ডিপ্রেশনে ছিলেন। তাকে সর্বশেষ দেখা গেছে ‘স্বপ্নের রানী’ নামের একটি ধারাবাহিক নাটকে। কাকতালীয়ভাবে হিমুর মৃত্যুর দিন নাটকটির শেষ পর্ব প্রচারিত হয়। মৃত্যুর ১০-১২ দিন আগে সিরিয়ালের শুটিং শেষ করেন হিমু। শুটিং সেটে একদিনের ঘটনা বর্ণনা করতে গিয়ে এমনই কিছু তথ্য জানালেন অভিনেত্রী স্বর্ণলতা দেবনাথ।
স্বর্ণলতা বলেন, হোমায়রা হিমু আপুর সঙ্গে দুটি ধারাবাহিক নাটক করেছি। একটি “বকুলপুর” আরেকটি “স্বপ্নের রানী”। বকুলপুরে তোমার সঙ্গে আমার খুব বেশি দৃশ্য ছিল না, কিন্তু ‘স্বপ্নের রানী’ নাটকে অভিনয় করতে গিয়ে তোমার খুব ঘনিষ্ঠ হয়েছিলাম। নাটকের কথা বলতে হতো পুরান ঢাকার ভাষায়। পুরান ঢাকার ভাষায় খুব পারদর্শী ছিলেন অপু। একটু কম করতে পারতাম। আপু আমাকে পড়াতেন আমাদের চরিত্র ননদ ভাবীর সাথে সম্পর্কিত। চরিত্রের পাশাপাশি আপনার সঙ্গে আমার ভালো সম্পর্ক রয়েছে।
জানান, অনেক আগে থেকেই হতাশায় ছিলেন হিমু। শুটিং সেটে হিমু তুলেছিলেন নিজের চলে যাওয়ার কথাও। সেসব জানিয়ে স্বর্ণলতা বলেন, তিন থেকে চার মাস আগে স্বপ্নের রানীর শুটিং সেটের মেকাপ রুমে আপু হঠাৎ করেই বলছিল,আচ্ছা আমি যদি মারা যাই বা চলে যাই তাহলে এই যে আমার গাড়ি, ফ্ল্যাটটা এটা কি আমি অনাথ আশ্রমে দিয়ে যেতে পারবো। আপুর ওই কথাটা শুনে আমরা সবাই থমকে যাই। যে হঠাৎ করে কেন এই কথা বলছে। ওই দিন আমাদের পরিচালক থেকে শুরু করে মেকাআপ রুমে অনেকেই ছিল। তারপর আপুকে আমরা জিজ্ঞেস করছিলাম কেন এসব কথা বলছো। তখন আপু বলেছিল, মানুষের তো অনেক কিছু হতে পারে। আমার না আর বাঁচতে ইচ্ছে হচ্ছে না। আমি যদি মরে যাই তাহলে এগুলো অনাথ আশ্রমে দিয়ে যেতে চাই।’ তখন আমরা আপুকে অনেক কিছু বোঝানোর চেষ্টা করি। যতদিন শুটিং থাকতো আপুকে খুব ব্যস্ত রাখতাম।
হিমুর মৃত্যুর কয়েকদিন আগে ‘স্বপ্নের রানী’ নাটকের শুটিং শেষ হয়। সেই প্রসঙ্গ তুলে ধরে স্বর্ণলতা বলেন, মৃত্যুর ১০-১২ দিন আগে আমরা একসঙ্গে কাজ করেছি। এটি ছিল সিরিয়াল ড্রিম কুইন এর শেষ শুটিং। গত দিন তোমাকে একটু অন্যরকম লাগছিল। একটু অন্যরকম। কারণ আপনি অনেক অভিজ্ঞ। যেকোন চিত্রনাট্য আপনার হয়ে যাবে একবার আপনি এটি পড়লে, আপনি দৃশ্যটি খুব সুন্দর করে তৈরি করতে পারবেন না আবার নেওয়ার দরকার নেই। কিন্তু সেদিন বারবার অমিল হয়েছিল তোমার সিকোয়েন্স করতে। দৃশ্যটি করতে অনেক সময় লেগেছিল। শেষের দিকে ভিগো নিয়ে ব্যস্ততা কম ছিল অপু। শুটিং সেট আমাদের পরিবার, সবার সঙ্গে আপনার ভালো সম্পর্ক ছিল। তিনি সবসময় হাসিখুশি থাকতেন। তিনি খুব আত্মবিশ্বাসী ছিলেন। অপু মারা যাওয়ার দিন ড্রিম কুইন এর শেষ পর্ব প্রচারিত হয়