বেলা ১১টায় বিচারক কোর্টরুমে এসে চেয়ারে বসলেন। তিনি একটি হ”ত্যা মামলার রায় পড়া শুরু করেন। পাঁচ আসামিকে মৃ”ত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। মুহূর্তের মধ্যেই এজলাস চত্বর এলাকায় পড়ে গেল কান্নার রোল। আসামিদের হাজতে নেওয়ার সময় অনেকে জড়িয়ে ধরার চেষ্টা করলেও পারেনি। তবে মাকে পা ছুঁয়ে সালাম করতে ভুললেন না ছেলে। হাতকড়া পরা অবস্থায় ছেলে হাঁটু গেড়ে মাকে সালাম করেন।
জয়পুরহাট জেলা ও দায়রা জজ চত্বর এলাকায় এমন ঘটনা ঘটেছে। সোমবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১১টার দিকে জেলার পাঁচবিবি উপজেলায় আবু হোসেন নামে এক ব্যক্তিকে হ”ত্যার ঘটনায় মা-ছেলেসহ ৫ জনের মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেন অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ নুরুল ইসলাম। প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানাও করেন তিনি।
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- মো. রব্বানী, রাফিউল, মোজাফফর হোসেন, আমিনা বেগম ও সহিদা বেগম। তারা সকলেই পাঁচবিবির কোকতারা ও দরগাপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। এদের মধ্যে রব্বানী-সহিদা ও রাফিউল-আমিনা সম্পর্কে মা-ছেলে। এদের মধ্যে চারজন আদালতে উপস্থিত ছিলেন।। আর আমিনাকে পলাতক দেখানো হয়েছে।
আদালত ও মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০১০ সালের ২৫ মার্চ পূর্ব শত্রুতার জের ধরে পাঁচবিবির দরগাপাড়া এলাকায় আবু তাহেরদের সঙ্গে প্রতিপক্ষের মারামারি হয়। এ সময় শত্রুরা আবু তাহেরের ছেলে আবু হোসেনের মাথায় লোহার শাবল দিয়ে আঘাত করে এবং দুই পা জখম করে। এ সময় স্থানীয়দের সহায়তায় আবু হোসেনকে পাঁচবিবি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। সেখান থেকে তাকে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে তাকে ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে নেওয়া হয়। ঘটনার ৯ দিন পর সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আবু হোসেন মা”রা যান।
এ ঘটনায় আবু তাহের বাদী হয়ে থানায় মামলা করেন। থানার তৎকালীন উপ-পরিদর্শক (এসআই) মমিনুল হক মামলাটি তদন্ত করে ওই বছরের ৩০ জুলাই চার্জশিট দাখিল করেন। দীর্ঘ বিচারিক প্রক্রিয়া শেষে গতকাল এ রায় দেন বিচারক।