সম্প্রতি বাংলাদেশে আটক হয়েছে একজন বড় ধরনের প্রতারক। তার নাম কাদের মাঝি। তবে ঘটনার শেষ এখানেই নয়। এই প্রতারকের নামে সাথে এবার জড়িয়ে গেছে বাংলাদেশের ধনকুবের মুসা বিন সমশের। প্রিন্স মুসা খ্যাত মুসা বিন সমশেরের সচিব পরিচয়ে ছিলেন এই কাদের। আর এই কারনেই এবার প্রিন্স সমশেরকে ডাকা হয়েছে ডিবি কার্যালয়ে।
এই মুহুর্তে আলোচিত ধনকুবের মুসা বিন শমসেরকে (প্রিন্স মুসা) জিজ্ঞাসাবাদ করছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। সচিব পরিচয়ে প্রতারণার অভিযোগে তিন সহযোগীসহ গ্রেফতার আব্দুল কাদেরের সঙ্গে মুসা বিন শমসেরের যোগাযোগ ও লেনদেনের তথ্য পেয়েছিলেন গোয়েন্দা কর্মকর্তারা। এর সূত্র ধরে তাকে হাজির হওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশের মাধ্যমে চিঠি দেওয়া হয়েছিল।
মঙ্গলবার বিকালে স্ত্রী ও ছেলেকে নিয়ে ঢাকার মিন্টো রোডে গোয়েন্দা কার্যালয়ে যান মুসা বিন শমসের।
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের যুগ্ম-কমিশনার হারুন অর রশিদ গণমাধ্যমকে বলেন, প্রতারক আব্দুল কাদেরের সঙ্গে মুসা বিন শমসেরের বিভিন্ন ব্যবসায়িক সম্পর্কের চুক্তিপত্রসহ নানান তথ্য-উপাত্ত পাওয়া গেছে। এ কারণে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। জিজ্ঞাসাবাদে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সূত্র জানায়, প্রতারক কাদের মাঝির মুখোমুখি করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হতে পারে মুসা বিন শমসেরকে। প্রতারক এই আবদুল কাদের ধনকুবের মুসা বিন শমসেরের আইন উপদেষ্টা হিসেবে নিজের পরিচয় দিতেন।
তারা হলেন, আব্দুল কাদের চৌধুরী, শারমিন চৌধুরী ছোঁয়া, শহিদুল আলম ও আনিসুর রহমান। তাদের কাছ থেকে একটি বিদেশি পিস্তল, একটি ম্যাগাজিন ও এক রাউন্ড গুলিসহ একটি ওয়াকিটকি, একটি প্রাডো গাড়ি, অতিরিক্ত সচিবের অফিসিয়াল আইডি কার্ড, ভিজিটিং কার্ডসহ বিভিন্ন জিনিসপত্র উদ্ধার করা হয়।
গ্রেফতার চার প্রতারকের বিরুদ্ধে রাজধানীর পল্লবী থানায় একটি অস্ত্র মামলা ও তেজগাঁও থানায় একটি প্রতারণা মামলা দায়ের করা হয়েছে। দুটি মামলায় সাত দিনের রিমান্ডে নিয়ে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করছে গোয়েন্দা পুলিশ।
আব্দুল কাদেরের প্রতিষ্ঠানে মুসা বিন শমসেরের সঙ্গে তার একাধিক ছবি টানানো রয়েছে। মুসা বিন শমসরের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের পরামর্শক হিসেবে নিজেকে পরিচয় দিয়ে টাকা-পয়সা নিয়ে সমস্যা হবে না বলে প্রতারণা করতেন তিনি।
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, প্রতারক আব্দুল কাদের চৌধুরীর কাছ থেকে মুসা বিন শমসের ও তার স্ত্রীর সঙ্গে করা কিছু চুক্তিপত্র উদ্ধার করা হয়েছে। এছাড়া মুসা বিন শমসেরের সঙ্গে তার ২০ কোটি টাকা লেনদেনের কিছু তথ্য পাওয়া গেছে। কীসের ভিত্তিতে এসব লেনদেন করা হয়েছে তা জানতেই মূলত মুসা বিন শমসেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
এদিকে এর আগে গত বৃহস্পতিবার নিজেকে সচিব পরিচয় দিয়ে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে লাখ লাখ হাতিয়ে নেয়ায় অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয় আব্দুল কাদেরসহ চারজন। এরপর কাদেরের বিরুদ্ধে তদন্ত চালাতেই নানা দুর্নীতির অভিযোগ পায় পুলিশ। এছাড়া জানা গেছে, তার রয়েছে তিনজন স্ত্রী। অনেক তরুণীর সঙ্গেও সম্পর্ক রয়েছে কাদেরের।