বিএনপি সভানেত্রী বেগম জিয়ার নাতনী জাইমা রহমানকে নিয়ে অশালীন মন্তব্য করার অভিযোগে সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান এবং ইউটিউবার মহিউদ্দিন হেলাল নাহিদের বিরুদ্ধে ঢাকা এবং রাজশাহীতে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়ের করার জন্য আবেদন করা হয়, সেই মামলার আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন মাননীয় আদালত।
আজ (সোমবার) অর্থাৎ ১৩ ডিসেম্বর বিকেলের দিকে আসসামছ জগলুল হোসেন যিনি ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক হিসেবে রয়েছেন তার আদালত মামলা গ্রহণের কোনো ধরনের গ্রহনযোগ্য উপকরণ না থাকায় মামলাটি খারিজ করে দিয়েছেন। অপরদিকে আজ (সোমবার) একই দিনে রাজশাহী সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক জিয়াউর রহমান এ ঘটনার প্রেক্ষিতে কোনো ধরনের মামলা দায়ের হতে পারে না এমনটি জানিয়ে মামলার আবেদনটি খারিজ করে দেন।
গতকাল রোববার ঢাকা সাইবার ট্রাইব্যুনালে মামলা করেন জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের নেতা ওমর ফারুক ফারুকী। তবে বিচারক না থাকায় শুনানি হয়নি। সোমবার শুনানির জন্য ধার্য করা হয়েছে। আজ সকালে মামলার শুনানি হয়। মাসুদ আহমেদ তালুকদার বাদীর পক্ষে শুনানি করেন। আদালত বাদীর বক্তব্য গ্রহণের পর আদেশ জারি করবেন বলে জানিয়েছেন। পরে বিকেলে আদালত মামলাটি খারিজ করে দেন।
রবিবার রাজশাহীতে মামলাটি করেন বগুড়া আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও জেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম।
মুরাদ ও নাহিদের বিরুদ্ধে মামলায় অভিযোগে বলা হয়, আসামি ডা. মুরাদ হাসান বর্তমান সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী ছিলেন এবং ২নং আসামি নাহিদ একজন মিডিয়া উপস্থাপক। গত ১ ডিসেম্বর আসামি নাহিদ আসামি ডা. মুরাদ হাসানের সাক্ষাৎকার গ্রহণ করেন, যা পরবর্তীতে আসামি ডা. মুরাদ হাসান তার ফেসবুক ভেরিফাইড পেজে প্রচার ও প্রকাশ করেন। ওই সাক্ষাৎকারে ডা. মুরাদ হাসান উদ্দেশ্যমূলকভাবে জিয়া পরিবার এবং ব্যারিস্টার জাইমা রহমানকে নিয়ে কুরুচিপূর্ণ, মিথ্যাচার, নারী বিদ্বে’ষী, মানহানিকার অশ্লী’ল মন্তব্য করেন।
মামলায় আরও বলা হয়, আসামি ডা. মুরাদ হাসান সংবিধানের ১৪৮ অনুচ্ছেদের তৃতীয় তফসিল অনুয়ায়ী যে সাংবিধানিক শপথ গ্রহণ করেছিলেন এসব কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে তিনি সেই শপথ ভঙ্গ করেছেন। আসামিদের এমন কর্মকাণ্ড ফেসবুকের মাধ্যমে সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছে, যা সর্বমহলে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। এর মধ্যে বিভিন্ন মহল থেকে আসামি ডা. মুরাদের মন্তব্যের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে এবং জানাচ্ছে। আসামিদের এমন কর্মকাণ্ডে জিয়া পরিবার ও ব্যারিস্টার জাইমা রহমানসহ সমগ্র নারী সমাজের জন্য মানহানিকার ও অপমানজনক। উক্ত মিথ্যা ও কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটিয়েছে। তাই এ অপরাধ ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ২৫/২৯/৩১/৩৫ ধারায় শাস্তিযোগ্য হওয়ায় আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগটি আমলে নিয়ে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা প্রয়োজন।
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া, তার ছেলে তারেক রহমান ও নাতনি ব্যারিস্টার জাইমা রহমানকে নিয়ে অশালীন মন্তব্য করায় এমপি মুরাদের বিরুদ্ধে ঢাকা, সিলেট, খুলনা ও রাজশাহীতে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের (বিজেএএফ) নেতারা অন্তত চারটি মামলা দায়ের করেন। বিজেএএফ নেতা ওমর ফারুক ফারুকী রবিবার ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের (ডিএসএ) অধীনে ঢাকা সাইবার ট্রাইব্যুনালে একটি পিটিশন দাখিল করেন সংসদ সদস্য এবং মোহাম্মদ মহিউদ্দিন হেলাল নাহিদের বিরুদ্ধে, নাহিদ ফে’সবুক লাইভ হোস্ট করেছিলেন।
এদিকে, এ কে এম সাইফুল ইসলাম নামে একজন আইনজীবী বাদী হয়ে রাজশাহী সাইবার ট্রাইব্যুনালে ডিএসএ-তে মামলা করেন।