প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মুরাদ হাসানকে মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগের নির্দেশ দেওয়ার পর তথ্য প্রতিমন্ত্রী ও জামালপুর-৪ আসনের সংসদ সদস্য ডা. মুরাদ হাসান পদত্যাগ পত্র জমা দিয়েছেন। সাম্প্রতিক সময়ে তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লাইভে এসে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য এবং একজন অভিনেত্রীকে নিয়ে অডিও ফাঁস হওয়ার পর তিনি আলোচনা-সমালোচনায় পড়েন।
গতকাল (সোমবার) রাতের দিকে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের তার সরকারি বাসভবন থেকে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা পাওয়ার পর এই ধরনের ঘোষণা দেন। বিতর্কিত মন্তব্য করার কারণে বেশ কয়েকদিন ধরে আলোচনার কেন্দ্রে ছিলেন ড. মুরাদ হাসান। তাছাড়া তিনি অভিনেত্রীর সাথে অশালীন কথা বলেন।
এর আগে সংসদ সদস্য এবং জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক মাশরাফীকে নিয়ে চিকিতসকদের সম্পর্কে বাজে মন্তব্য করে স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী থেকে সরিয়ে ডা মুরাদকে তথ্য প্রতিমন্ত্রী দায়িত্ব দেয়া হয়।
ঘটনাটি ঘটেছিল দুই বছর আগে। সে সময় এক ঝটিকা সফরে নড়াইল সদর হাসপাতাল যান নড়াইল-২ আসনের সংসদ সদস্য মাশরাফি বিন মুর্তজা। বিনাছুটিতে চার চিকিৎসক অনুপস্থিত থাকায় চিকিৎসককে প্রথমে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেন মাশরাফি।
এরপরে এই ঘটনার পর জাতীয় দলের অধিনায়ক মাশরাফিকে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ট্রল করতে থাকেন চিকিৎসকরা। পরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উপলক্ষে এক অনুষ্ঠানে এই বিষয়ে চিকিতসকদের প্রতি ক্ষোভ উগরে দেন ডা. মুরাদ।
ডাক্তারদের উদ্দেশ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘একজন মাশরাফি সৃষ্টি করতে পারবেন! পারবেন আপনারা? হতে পারবেন নাকি জাতীয় দলের ক্যাপ্টেন। হতে পারবেন একজন জাতীয় ডাক্তার! হয়ে প্রমাণ করেন যে, আপনি জাতীয় ডাক্তার তাই মাশরাফিকে নিয়ে কথা বলার যোগ্যতা রাখেন। পারবেন না তো।’
তার বক্তব্য দেওয়ার পর চিকিৎসক সমাজ এবং সমাজের বিভিন্ন স্তরে নানা ধরনের প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। পরবর্তীতে স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রীর পদ থেকে ডাঃ মুরাদ হাসানকে সরিয়ে দেওয়ার মাধ্যমে তথ্য প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হয়। মুরাদ হাসান পেশায় একজন চিকিৎসক ও আওয়ামী লীগ সমর্থিত চিকিৎসকদের সংগঠন স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ (স্বাচিপ) এবং ১৯৭১ সালের ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটির কেন্দ্রীয় সদস্য। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন হওয়ার পর আ.লীগ সরকার গঠন করলে মুরাদ হাসানকে প্রথমে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর হিসেবে দায়িত্ব প্রদান করা হয়।