দুই ভাই বোনের ঝগড়ার রেশে প্রাণ ঝড়ে গেল ছোট বোনের এমনই এক শোকাবহ ঘটনায় বাকরুদ্ধ হয়ে গেছে বগুড়া জেলার শেরপুর উপজেলার এক পরিবার। ছোট বোনের সাথে বড় ভাইয়ের ঝগড়ার কারনেই ঘটেছে এমন ঘটনা বলে স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে। ঘটনার দিন দুই ভাই বোনের ঝগড়ার মিমাংসা করেন তাদের মা নিজেই। কিন্তু তখনও ভাই বা তার মাসহ পরিবারের অন্যান্যরা কেউই বুজতে পারেননি যে ঘটনার পরের দিন তাদের পরিবারে এমন এক ঘটনার সৃষ্টি হবে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে পরিবারের সবাই রীতিমতো হতবম্ব হয়ে গেছে।
বগুড়ার শেরপুর উপজেলায় মৌসুমী আক্তার নামে এক স্কুলছাত্রী গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহনন করেছে বলে জানা গেছে। বুধবার সকাল ৯টার দিকে উপজেলার সুঘাট উপজেলার চকদিনাই গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে মৌসুমীর ঝুলন্ত নিথরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। মৌসুমী একই গ্রামের মোজাম হোসেনের মেয়ে। সে উপজেলার কল্যাণী উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী ছিল। তার নিথরদেহ উদ্ধারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন শেরপুর থানার ওসি মো. শহিদুল ইসলাম। প্রয়ানের মা পারুল আক্তার ও স্থানীয় ইউপি সদস্য নূর নবী মন্ডল জানান, মঙ্গলবার দুপুরে মৌসুমীর সঙ্গে তার বড় ভাই পারভেজ হোসেনের কথা কাটাকাটি হয়। এ সময় পারভেজ ক্ষিপ্ত হয়ে তার (মৌসুমী) মোবাইল ফোন ভেঙে দেন।
পরে তাদের মা পারুল আক্তার এসে বাধা দেন। এসময় পারুল তার মেয়ে মৌসুমী ও ছেলে পারভেজকে বকাঝকা করেন। পরে তারা একসঙ্গে রাতের খাবার খেয়ে নিজ নিজ ঘরে ঘুমিয়ে পড়েন। বুধবার সকালে মৌসুমীর ঘুম থেকে উঠতে দেরি হওয়ায় পারুল তার দরজায় গিয়ে চিৎকার করতে থাকে। অনেক ডাকাডাকি করেও মেয়ের কাছ থেকে কোনো সাড়া পাননি তিনি। সন্দেহ হলে তিনি মৌসুমীর ঘরের জানালায় যান। এ সময় বাড়ির পাশে গলায় স্কার্ফ পেঁচিয়ে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পান মৌসুমী। খবর পেয়ে পুলিশ এসে মৌসুমীর নিথরদেহ উদ্ধার করে। শেরপুর থানার ওসি মো. শহিদুল ইসলাম জানান, নিথরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় থানায় একটি অপপ্রয়ান মামলা হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, আত্মহনন করা মৌসুমি আক্তার এক জন স্কুলছাত্রী। দুই ভাই বোনের ভিতরে ঝগড়ার জেরে এক পর্যায়ে ছোট বোনের মোবাইল ফোন বড় ভাই ভেঙ্গে ফেললে ঝগড়া তীব্রতা আরো প্রখর হয়। ঝগড়ার এই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রন করতে তাদের মা নিজেই ঘটনা স্থলে এসে তাদের দুইজনকেই শাশন করার মধ্যে দিয়ে পরিস্তিতি নিয়ন্ত্রনে আনেন। ঘটনার পরের দিন মৌসুমিকে ডাকাডাকি করে কোন সাড়া না পেলে ঘড়ের দরজা ভেঙ্গে ঢুকে দেখে মৌসুমি গলায় স্কার্ফ দিয়ে ঝুলে আছে। স্থানীয় পুলিশ প্রাথমিকভাবে ঘটনাটি নিছক আত্মহনন এমনটাই নিশ্চিত করেছেন।