জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) দর্শন বিভাগের অধ্যাপক নাসরিন সুলতানা ১৮ জুলাইয়ের আন্দোলনে নিহত হওয়া মীর মাহফুজুর রহমান মুগ্ধ সম্পর্কে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। শনিবার (২৩ নভেম্বর) রাতে ফেসবুকে দেওয়া একটি পোস্টে তিনি দাবি করেন, “শুনলাম মুগ্ধ নাকি ফ্রান্সে রয়েছে।”
তিনি তার পোস্টে লিখেন, ‘কিছুদিন আগে একজন মেসেজ দিয়ে বললো, সবাই আবু সাঈদের কবরে যায়, কিন্তু মুগ্ধর কবরে যায় না কেন? আমি বললাম, কারণ, আবু সাঈদ জামায়াতের লোক ছিল, তাদের লোক ছিল। এরপর সে আমার উত্তরে হা হা রিয়েকশন দিলো। হা হা রিয়েকশনের অর্থ তখন বুঝিনি। কাল একজন বললো, মুগ্ধর লাশ, কবরের নাকি হদিস পাওয়া যায়নি। মুগ্ধর পরিবার নাকি কোনও মামলাও করেনি। মুগ্ধর ভাই নাকি বিদেশে ঘুরেফিরে ছবি আপলোড করে বেড়াচ্ছে।’ তিনি আরও লেখেন, ‘আজ শুনলাম মুগ্ধ নাকি ফ্রান্সে। নিজের কানকে তো বিশ্বাস করতে পারছি না।’
এ পোস্টের পর ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েন নাসরিন সুলতানা। শিক্ষার্থীরা তার স্ট্যাটাসটি ডিলিট করার জন্য চাপ দেন, পরে তিনি এটি মুছে দিয়ে আরেকটি পোস্টে লিখেন, “আমার আগের স্ট্যাটাস অনেকের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করেছে, তাই এটি ডিলিট করা হয়েছে। আমি শুধু বলেছি, লোকজন কী বলেছে, আমার কোনও মতামত আমি দিইনি। কারো অনুভূতিতে আঘাত দিয়ে থাকলে আমি দুঃখিত।”
এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা তাকে চাকরি থেকে বরখাস্তের দাবি জানান। ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী সিফাত বলেন, “এ আওয়ামী দোসরকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করার দাবি জানাচ্ছি।”
উল্লেখযোগ্য, মীর মাহফুজুর রহমান মুগ্ধ গত ১৮ জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালীন গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন। তিনি আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের পানি বিতরণ করছিলেন, যখন হঠাৎ সংঘর্ষ শুরু হয় এবং তাকে গুলি করা হয়। হাসপাতালে নিয়ে গেলে তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়। মুগ্ধর মৃত্যু নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিভিন্ন প্রতিক্রিয়া দেখা দেয় এবং তার বড় ভাই মীর মাহমুদুর রহমান দীপ্ত একটি ভিডিও শেয়ার করেন, যেখানে মুগ্ধ আন্দোলনকারীদের পানি বিতরণ করছেন।
এ ঘটনার পর জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠিত হয়, যেখানে মুগ্ধের যমজ ভাই মীর মাহবুবুর রহমান স্নিগ্ধ বর্তমানে প্রধান নির্বাহী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।