মুক্তিপণ আদায়ের লক্ষ্যে সম্প্রতি আলিনা ইসলাম আয়াত নামে এক ছোট্ট শিশুকে অপহরণের পর শ্বা’স’রো’ধে’ হ”ত্যা’ ‘করে আবির আলী নামে এক যুবক। তবে শুধু ‘হ’ত্যা’ই করেনি, ছোট্ট আয়াত’কে ৬ ‘টু’ক’রো করে সাগ’রে ভা’সিয়ে দে’য় ‘ঘা’ত’ক আবির। ইতিমধ্যে তাকে আটক করেছে পুলিশ। তার বিরুদ্ধে আইনি প্রক্রিয়া চলমনা।
তবে প্রতি বছর জন্মদিনের আগে আলিনা ইসলাম আয়াতের বায়না থাকে কেক কাটার আর বেড়াতে নিয়ে যাওয়ার। মাস দুয়েক আগে থেকে সুন্দর জামা আর কেকের আবদার করা আয়াত এ বছর জন্মদিনের জন্য জামাও বাছাই করে রেখেছিল।
তুলে রাখা সেই জামা আর আগের বছরের জন্মদিনের স্মৃতি ঘিরেই এখন দিন কাটছে আয়াতের শোকাতুর বাবা-মায়ের।
ছোট্ট আয়াত তার জন্মদিনের এক মাস আগে এক তরুণ প্রতিবেশীর “লোভের বলি” হিসাবে পৃথিবী ছেড়ে চলে যায়।
২০১৭ সালের ১৪ ডিসেম্বর আয়াতের জন্ম। সেদিন ছিল বৃহস্পতিবার, এবার বুধবার এল তার জন্মদিন।
আয়াতের মা শাহেদা আক্তার তামান্না বলেন, “বুঝতে শেখার পর থেকেই আয়াত জন্মদিনের আগে নানা ধরনের বায়না করতো। এ বছরও জন্মদিন উদযাপনে সিরিয়াস ছিল সে। তাই বাবাকে কেকের জন্য টাকা পাঠাতে বলে। .
“কয়েক মাস আগে তার বাবা একটি সাদা পোশাক কিনেছিলেন। কিন্তু জন্মদিনে পরবে বলে সে তা পরেনি। আয়াতকে কাপড় পরতে বলা হলে সে বলে, পরলে কাপড় পুরনো হয়ে যাবে। সে তার জন্মদিনে সেই পোশাকটি পরবে এবং কেক কাটবে।”
আয়াতের বাবা সোহেল রানা জানান, “আমি দুই ভাই ও এক বোনের মধ্যে বড়। ছোট ভাইয়ের এখনো বিয়ে হয়নি। বোনের কোন সন্তান নেই। যার কারণে আয়াত আমাদের পরিবারের সকলের প্রিয়।
সোহেল রানা বলেন, “আমার শ্বশুর ওমান প্রবাসী। আয়াতের বয়স যখন ৯ মাস তখন তিনি ইন্তেকাল করেন। কিন্তু নাতনির সঙ্গে প্রায়ই মোবাইল ফোনে কথা বলেন তিনি। মৃত্যুর কয়েকদিন আগে তিনি নানাকে চকলেট পাঠাতে এবং কেক কিনতে বলেন।
“এই বছর আয়াতের সবকিছুই আমাদের জন্য স্মৃতি হয়ে আছে। আমাদের আয়াত আমাদের কাছ থেকে কেড়ে নেওয়া হয়েছে। আমরা তার ‘হ’ত্যা”কারীর বিচার চাই।”
গত ১৪ নভেম্বর পাঁচ বছর বয়সী আলিনা ইসলাম আয়াত নিখোঁজ হওয়ার পর তার পরিবার ইপিজেড থানায় অভিযোগ দায়ের করে। তা খুঁজে বের করতে পোস্টার ও প্যামফলেটও বিতরণ করা হয়েছে। তার দাদা তার নাতনির সন্ধানের জন্য পিবিআইয়ের কাছে আবেদন করেছিলেন। পরে পিবিআই তদন্ত শুরু করে এবং প্রতিবেশী ১৯ বছর বয়সী আবির আলীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে।
এরপরই এক এক করে প্রকাশ্যে বেরিয়ে আসতে থাকে সব তথ্য। ছোট্ট আয়াতকে ‘হ”ত্যা’র ঘটনায় ঘাতক আবিরসহ তার বাবা-মা ও বোনকেও গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন তিনি।