বৃটেনের বার্মিংহামের প্রতিষ্ঠান নিউ হোপ গ্লোবাল-এর চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ফয়েজ উদ্দিন এমবিই জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসকে একটি চিঠি লিখেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে মুক্তি দিতে বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানানোর জন্য। চিঠিতে তিনি মোট চারটি বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। এর মধ্যে রয়েছে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সহ সকল রাজনৈতিক বন্দীদের অবিলম্বে মুক্তি, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে আসন্ন ২০২৪ সালের নির্বাচন অনুষ্ঠান, বিরোধী দলীয় কর্মীদের বিরুদ্ধে সহিং”সতা উস্কে দেয় এমন সমস্ত সরকার-নেতৃত্বাধীন কর্মসূচি বন্ধ করা এবং রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে আইনি ব্যবস্থার অপব্যবহারের পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত।
চিঠির শুরুতে জাতিসংঘ মহাসচিবকে উদ্দেশ্য করে ফয়েজ উদ্দিন বলেন, আশা করি আপনি ভালো ও সুস্থ আছেন। ২০২৪ সালের জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে বাংলাদেশের অবনতিশীল রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে অত্যন্ত জরুরি এবং উদ্বেগের কিছু বিষয় আপনার নজরে আনতে আমি এই চিঠিটি লিখছি। বিরোধীদলীয় নেতা মির্জা ফখরুল ইসলামসহ অন্যান্য রাজনৈতিক নেতা ও কর্মীদের গ্রেপ্তার ও হয়রানি বন্ধে আমি আপনার হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
চিঠিতে বলা হয়, সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশে রাজনৈতিক সহিংসতা, ভয়ভীতি ও হয়রানি উদ্বেগজনক হারে বেড়েছে। ক্ষমতাসীন দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ বিরোধী দল ও তাদের সদস্যদের দমন করতে এসব করছে বলে অভিযোগ রয়েছে। সরকার পরিচালিত কর্মসূচিতে সহিংসতা উস্কে দেওয়ার আহ্বান জানানো হচ্ছে, বিরোধী দলের কর্মীদের জন্য প্রতিকূল পরিবেশ তৈরি হচ্ছে।
এটা খুবই দুর্ভাগ্যজনক যে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার বিরুদ্ধেও এসব সহিংস কর্মকাণ্ডে জড়িতদের আশ্রয় ও সহায়তা করার অভিযোগ উঠেছে।র চেয়েও খারাপ বিষয় হচ্ছে, সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে যে তারা বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা ও বানোয়াট মামলা দায়ের করছে, রাজনৈতিক ভিন্নমত দমন করছে এবং আসন্ন নির্বাচনের বিশ্বাসযোগ্যতা ক্ষুণ্ন করতে আইনি ব্যবস্থার অপব্যবহার করছে। এই কাজগুলো গণতন্ত্র, মানবাধিকার এবং আইনের শাসনের মূল নীতিগুলোকে স্পষ্টভাবে উপেক্ষা করে।
এমতাবস্থায়, আমি আপনাকে (জাতিসংঘের মহাসচিব) জরুরীভাবে অনুরোধ করছি আপনার সম্মানজনক পদ ব্যবহার করে কয়েকটি বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারকে অনুরোধ করার জন্য। এগুলো হলো- ১/ মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ রাজনৈতিক কারণে কারাবন্দী অন্যান্য রাজনৈতিক নেতা-কর্মীদের অবিলম্বে মুক্তি দিতে হবে।
২। ২০২৪ সালের নির্বাচনে সকল রাজনৈতিক দলের স্বচ্ছতা, ন্যায্যতা এবং অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার জন্য একটি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন করুন। ৩/ বিরোধী দলের কর্মীদের হয়রানি এবং সহিংসতা উস্কে দেয় এমন সমস্ত সরকারী নেতৃত্বাধীন কর্মসূচি বন্ধ করতে হবে ৪/ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে আইনি ব্যবস্থার অপব্যবহার তদন্ত করতে হবে এবং বিরোধী নেতা ও কর্মীদের বিরুদ্ধে থাকা সকল রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মামলা প্রত্যাহার করতে হবে।
জাতিসংঘ মহাসচিবকে উদ্দেশ্য করে লেখা চিঠিতে বলা হয়েছে, আপনার নেতৃত্বে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক নীতি ও মানবাধিকার সমুন্নত রাখতে বিশেষ করে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন নিশ্চিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। চিঠির শেষে ফয়েজ উদ্দিন আশা প্রকাশ করেন, বাংলাদেশে একটি সুষ্ঠু ও ন্যায্য নির্বাচন প্রক্রিয়া নিশ্চিত করতে জাতিসংঘ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে।