Thursday , December 26 2024
Breaking News
Home / National / মিত্র ও শরিকদের সাথে আসন ভাগাভাগি নিয়ে যা ভাবছে আওয়ামী লীগ

মিত্র ও শরিকদের সাথে আসন ভাগাভাগি নিয়ে যা ভাবছে আওয়ামী লীগ

জাতীয় সংসদের ২৫০টি আসনে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে আওয়ামী লীগ। দলটি বাকি ৫০টি আসন ছেড়ে দিতে চায় ১৪ দলীয় জোটের শরিক ও সমমনা রাজনৈতিক জোটকে। তবে প্রয়োজন হলে ৬০ আসন ছাড়তেও প্রস্তুত অথবা সমঝোতার বাইরে কিছু আসন উন্মুক্ত রাখবে আওয়ামী লীগ। সে লক্ষ্যে অনানুষ্ঠানিক আলোচনা শুরু হয়েছে। বিএনপি নির্বাচনে আসবে না ভেবে আসন বণ্টন ও উন্মুক্ত রাখার পরিকল্পনা করছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও সরকারের নীতিনির্ধারকরা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আওয়ামী লীগ ও সরকারের একাধিক নীতিনির্ধারক এ তথ্য জানান।

বর্তমানে সংসদে আওয়ামী লীগের ১৪টি দলের সরাসরি ভোটে নির্বাচিত আটজন প্রতিনিধি রয়েছেন। এর মধ্যে ওয়ার্কার্স পার্টির ৩ জন, জাসদের ৩ জন, তরিকত ফেডারেশনের ১ জন এবং বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি-জেপির ১ জন। এ ছাড়া আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক মিত্র বিকল্পধারা বাংলাদেশের সংসদ সদস্য রয়েছেন ২ জন। এই সংসদে জাতীয় পার্টির ২৩ জন সংসদ সদস্য রয়েছেন, যারা সরাসরি ভোটে নির্বাচিত হয়েছেন। ওয়ার্কার্স পার্টির ১ জন, জাসদের ১ জন এবং জাতীয় পার্টির ৪ জন সংরক্ষিত আসনে প্রতিনিধিত্ব করছেন।

সূত্র জানায়, বর্তমানে আওয়ামী লীগের সঙ্গে ১৪ দলীয় জোটে থাকা রাজনৈতিক দলগুলো ১৬ থেকে ১৮টি আসন পাওয়ার বিষয়ে সমঝোতায় আসতে পারে। তবে প্রাথমিকভাবে তারা (১৪ দলের সদস্য) বেশি আসন চাইবে। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তারা ১৩টি আসনে জয়ী হয়েছে। ১৪টি দলের মধ্যে ২টি বিকল্প ধারা এবং সর্বোচ্চ ২টি আসন গণফোরামকে ছেড়ে দেওয়া যেতে পারে। আর সবশেষে জাতীয় পার্টি নির্বাচনে এলে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারকরা তাদের ২৫ থেকে ৩০টি আসন রাখতে চাইবেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আওয়ামী লীগের একজন নীতিনির্ধারক আরও বলেন, বিভিন্ন ইসলামি দল, ‘কিংস পার্টি’ হিসেবে পরিচিত তৃণমূল বিএনপি, বিএনএম, বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টিকে কয়েকটি আসন ছেড়ে দিতে বলবে। তবে তাদের সঙ্গে আসন ভাগাভাগি নিয়ে সরকার ও আওয়ামী লীগের মধ্যে এখনো জোরালো কোনো আলোচনা হয়নি। তিনি বলেন, বিএনপি থেকে বের হয়ে কেউ নির্বাচন করতে চাইলে সেক্ষেত্রে কী কৌশল গ্রহণ করা হবে তা এখনো ঠিক হয়নি।

ইতোমধ্যে ১৪ দলের সদস্যরা নৌকা প্রতীকে আওয়ামী লীগের সঙ্গে জোটবদ্ধ হয়ে ভোট দেবেন বলে নির্বাচন কমিশনে চিঠি দিয়েছেন। শনিবার নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ওয়ার্কার্স পার্টি, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ), জাতীয় পার্টি-জেপি, তরিকত ফেডারেশন, সাম্যবাদী দল ও গণতন্ত্রী পার্টি নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করবে বলে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। জোটগতভাবে নির্বাচন পরিচালনার জন্য আওয়ামী লীগও ইসিকে জানিয়েছে।

এদিকে নির্বাচন কমিশন (ইসি) দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফশিল ঘোষণার পর থেকেই পুরোদমে নির্বাচনি প্রস্তুতি শুরু করেছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। আওয়ামী লীগের জাতীয় নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রথম বৈঠকে ১৫টি উপকমিটি গঠন করা হয়েছে। সেই সঙ্গে দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফর উল্লাহকে নির্বাচন পরিচালনা কমিটির কো-চেয়ারম্যান করা হয়েছে। আওয়ামী লীগের মনোনয়ন ফরম বিক্রির কার্যক্রম চলছে। এটি আগামীকাল মঙ্গলবার পর্যন্ত চলবে। দলীয় মনোনয়নপ্রত্যাশীরা নিজে অথবা তাদের প্রতিনিধিরা ২১ নভেম্বর বিকাল ৪টার মধ্যে আবেদনপত্র সংগ্রহ ও জমা দিতে পারবেন। জানা গেছে, আওয়ামী লীগ দুই দিন ধরে (শনি ও রোববার) ৩০০ আসনেই তাদের দলীয় মনোনয়ন ফরম বিক্রি করছে। দলটির নীতিনির্ধারকরা বলছেন, মনোনয়ন ফরম বিক্রি ও জমা নেওয়া হলেও জোটবদ্ধ নির্বাচনের ক্ষেত্রে কোনো সমস্যা হবে না। কারণ শরিক ও মিত্রদের ছেড়ে দেওয়া আসনগুলো সম্পর্কে নির্বাচন কমিশনকে অবহিত করা হবে।

আওয়ামী লীগের একটি সূত্র জানায়, দলীয় মনোনয়ন ফরম বিক্রি ও জমা দেওয়ার পর শরিক ও সমমনা রাজনৈতিক দলের নেতাদের সঙ্গে আসন ভাগাভাগি নিয়ে আলোচনা করবেন বর্তমান নেতারা। ১৪ দলের সমন্বয়ক আমির হোসেন আমু, আওয়ামী লীগের জাতীয় নির্বাচন পরিচালনা কমিটির কো-চেয়ারম্যান কাজী জাফর উল্লাহ ও দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে প্রাথমিক আলোচনা হতে পারে। প্রয়োজনে কথা বলবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আবদুর রহমান বলেন, গতবার ১৪ দলের সদস্য নিয়ে জোটগত নির্বাচন হয়েছে এবারও হবে। তবে কোন দলকে কতটি আসন দেওয়া হবে সে বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। শিগগিরই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

দলটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ বলেন, ১৪ দলের সদস্যদের কোন আসন দেওয়া হবে তা নিয়ে এখনো আলোচনা শুরু হয়নি। সময় তো চলে যায়নি, শিগগির বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হবে। জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) সভাপতি হাসানুল হক ইনু বলেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আসন বণ্টন নিয়ে অনানুষ্ঠানিক আলোচনা শুরু হয়েছে। শিগগিরই এ বিষয়ে (আসন ভাগাভাগি) আনুষ্ঠানিক আলোচনা শুরু হতে পারে উল্লেখ করে তিনি বলেন।

About bisso Jit

Check Also

মারা যায়নি আবু সাঈদ, আছেন ফ্রান্সে রনির এমন মন্তব্যে নিয়ে যা জানা গেল

সম্প্রতি টিকটকে পটুয়াখালী-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য গোলাম মাওলা রনির একটি ভিডিও শেয়ার করা হয়। …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *