নোয়াখালীর পুলিশ সুপার মো. আসাদুজ্জামান বলেন, “সুবর্ণচর উপজেলার চরওয়াপদা ইউনিয়নে ঘরের সিধ কেটে মা-মেয়েকে ধর্ষণের ঘটনাটি আসামিদের পূর্বপরিকল্পিত ছিল। ধর্ষণের ঘটনা আড়ালে রাখতে আগে থেকেই সিঁধ কাটার পরিকল্পনা করা হয় এবং সে অনুযায়ী পরিকল্পিতভাবে ঢুকে মা-মেয়েকে ধর্ষণ করে আসামিরা। তাদের উদ্দেশ্য চুরি করা ছিল না, ছিল ধর্ষণ করা।”
বুধবার (৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে নোয়াখালী পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন মো. আসাদুজ্জামান।
এ ঘটনায় দায়ের করা মামলায় এ পর্যন্ত দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানান পুলিশ সুপার। তারা হলেন- আবুল খায়ের মুন্সী মেম্বার (৬৭) ও মেহরাজ (৪৮)। হারুন প্রকাশ অরুফে গৌরু হারুন নামে আরেক আসামি পলাতক রয়েছে। তাকে গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলেও জানান পুলিশ সুপার।
তিনি বলেন, “মুন্সী মেম্বার ওই গৃহবধূকে নাতনি বলে সম্বোধন করতেন। তিনি দীর্ঘদিন ধরে ওই নারীকে প্রলুব্ধ করে আসছিলেন। স্ত্রী না থাকায় মুন্সী গৃহবধূকে তার যত্ন নিতে বলে তাকে বেশ কিছু খারাপ প্রস্তাবও দেয়। কিন্তু মহিলা সাড়া না দিলে মুন্সী রেগে যান। কিছুদিন আগে গরু বিক্রি করে গৃহবধূর স্বামী। ওই টাকা তাদের ঘরে আছে, এটাকে কৌশলে কাজে লাগিয়ে মেহেরাজকে লোভ দেখিয়ে মুন্সি ও হারুন ঘরে প্রবেশের পরিকল্পনা করে। যদিও তাদের দুইজনের উদ্দেশ্য ছিল গৃহবধূকে ধর্ষণ করা।”
পুলিশ সুপার আরও বলেন, পরিকল্পনা অনুযায়ী সোমবার দুপুর ২টার দিকে তারা দরজা কেটে গৃহবধূর বাড়িতে প্রবেশ করে। এ সময় মুন্সি ও হারুন প্রথমে গৃহবধূর হাত-পা ও মুখ বেঁধে খাট থেকে নামিয়ে পায়ের বাঁধন খুলে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। একই সময় মেহেরাজ পাশের কক্ষে থাকা গৃহবধূর পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ুয়া মেয়েকে একই কায়দায় ধর্ষণ করে। এরপর তারা ঘটনাটি চুরি বলে চালিয়ে নিতে ওই ঘর থেকে নগদ টাকা ও স্বর্ণ লুট করে নিয়ে যায়। কিন্তু গৃহবধূ ও তার মেয়ে মুন্সি ও হারুনকে চিনে ফেলেন।”
পুলিশ সুপার আরও জানান, সিধ কাটার জন্য ব্যবহৃত একটি কোদাল, একটি দা এবং ঘটনার সময় ব্যবহৃত মুন্সি সদস্যের মাঙ্কি ক্যাপ ও প্যান্ট জব্দ করা হয়েছে।
তিনি বলেন, বুধবার বিকেলে আসামিদের ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি রেকর্ড করে রিমান্ডের আবেদন করতে আদালতে পাঠানো হবে।