বান্দরবানের রুমার রৌমারীর মন্ডলপাড়া গ্রামে পর্যটকবাহী জিপ খাদে পড়ে নিহত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী জয়নাবের মরদেহ একনজর দেখতে মানুষের ঢল নামে এবং কান্নার রোল পড়ে যায়। এ সময় তার বাবা-মা আহাজারি করে বলেন, ‘আমার মাকে শীতের পিঠা খাওয়াতে পারলাম না। আমাদের আশা ছিল মেয়েটি শিক্ষিত হয়ে বড় অফিসার হবে কিন্তু আমাদের স্বপ্ন-আশা ভেঙে চুরমার হয়ে গেল।’
রোববার দুপুর ২টার দিকে রৌমারী কেরামতিয়া আদর্শ ফাজিল মাদ্রাসায় জানাজা শেষে কেন্দ্রীয় কবরস্থানে তার মরদেহ দাফন করা হয়। জয়নবের বাবা আব্দুল জলিল পেশায় একজন কাঠমিস্ত্রি। মা জমিলা খাতুন একজন গৃহিণী। তিন সন্তানের মধ্যে জয়বান ছিলেন সবার ছোট। তিনি সিজিজামান উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি এবং রৌমারী ডিগ্রি কলেজ থেকে এইচএসসি পাশ করেন। মেধাবী জয়নবের ইচ্ছার পরিপ্রেক্ষিতে ধারদেনা করে বাবা তাকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি করান। জয়নব খাতুন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাধ বিজ্ঞান বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলে থাকতেন। জয়নব পড়াশোনার পাশাপাশি সহপাঠ্যক্রমিক কার্যক্রমে সক্রিয় ছিলেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় রেঞ্জার ইউনিটের সদস্য, হিমু পরিবহণের যুগ্ম সম্পাদক এবং ভ্রমণ কন্যার সদস্য। এছাড়া ভ্রমণ কন্যা ট্রাভেলস অব বাংলাদেশের সেরা ভলান্টিয়ার এবং সচেতনতামূলক সংগঠন মুভার’স এর শুভেচ্ছা দূত হিসাবেও দায়িত্ব পালন করছিলেন জয়নব। জয়নব বান্দরবানের রুমা উপজেলার কেওক্রাডং এলাকায় পর্যটকবাহী জিপ খাদে পড়ে নিহত হন। উল্লেখ্য, গত শনিবার সকাল ৮টার দিকে বান্দরবন সদর থেকে ফেরার পথে রুমা উপজেলায় বগালেক-কেওক্রাডং সড়কের দার্জিলিংপাড়ায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। এতে ঘটনাস্থলেই ঢাবি ছাত্রী জয়নব মারা যান। আহত হন আরও ১২ জন।