গাজীপুর সিটি করপোরেশনের নবনির্বাচিত প্রথম নারী মেয়র জায়েদা খাতুন দায়িত্ব গ্রহণের পর মঙ্গলবার দায়িত্ব গ্রহণ করেন।
তিনি বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেন এবং অফিসের কাজের অগ্রগতি বাড়াতে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পরামর্শ দেন।
সেদিন তিনি বেশ কিছু ফাইল খুঁজে পাননি। এ সময় মায়ের সঙ্গে ছিলেন সাবেক মেয়র মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম।
সূত্র জানায়, গাজীপুর সিটি করপোরেশনের নবনির্বাচিত মেয়র জায়েদা খাতুন সোমবার (১১ সেপ্টেম্বর) তার দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন। দায়িত্ব গ্রহণের পরদিন সকাল সাড়ে ১০টার দিকে তিনি নগর ভবনে নিজ কার্যালয়ে পৌঁছান এবং দৈনন্দিন কাজকর্মের মধ্য দিয়ে ব্যস্ত দিন কাটান।
এদিকে, সিটি হলে নতুন মেয়রের আগমনের খবর পেয়ে আশপাশের নগরীর নারী-পুরুষরা ভিড় জমায়। এ সময় তাদের সঙ্গে কথা বলেন মেয়র জায়েদা খাতুন।
তাদের বিভিন্ন সমস্যার কথা শোনার পাশাপাশি সমাধানের আশ্বাস দেন। দিনভর অফিসে অবস্থান করে তিনি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতাসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ফাইলে স্বাক্ষর করেন।
এ সময় সাবেক মেয়র মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আমি ২০২১ সালে সিটি করপোরেশনের তহবিলে প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকা রেখেছি। আমার মা জায়েদা খাতুন দায়িত্ব নেওয়ার সময় ৭০ থেকে ৮০ কোটি টাকা রেখে গেছেন। এর মধ্যে ৭০০ কোটি টাকা বকেয়া রয়েছে। গত ২১ মাসে ব্যাপক অনিয়ম-দুর্নীতি ও লুটপাট হয়েছে। তদন্ত ও হিসাব-নিকাশের পর বিস্তারিত জানা যাবে।
এ ছাড়া ৫ শতাধিক গুরুত্বপূর্ণ ফাইল গায়েব হয়ে গেছে, যার কোনো হদিস পাওয়া যাচ্ছে না।
সাবেক ভারপ্রাপ্ত মেয়র আসাদুর রহমানের নেতৃত্বে তার লোকজন এসব অপকর্ম করেছে। এসব কারণে সিটি করপোরেশনের স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। তা ছাড়া মঙ্গলবার নতুন মেয়রের কার্যালয়ের প্রথম দিনেও অনুমতি ছাড়াই অনুপস্থিত রয়েছেন কয়েকজন কর্মকর্তা-কর্মচারী। তারা নানা অনিয়ম-দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত। তাদেরও তদন্ত করা হচ্ছে। নগরবাসী ধীরে ধীরে তাদের সম্পর্কে জানতে পারবে।
এর আগে ২৫ মে গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে জায়েদা খাতুন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচিত হন। নির্বাচনে তিনি নানা প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি হয়ে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আজমত উল্লা খানকে ১৬ হাজার ১৯৭ ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করেন।
এর আগে, জায়েদা খাতুনের ছেলে মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম ২০১৮ সালে অনুষ্ঠিত গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে মেয়র নির্বাচিত হন। কিন্তু বিতর্কিত মন্তব্যের কারণে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ১৯ নভেম্বর, ২০২১ তারিখে মেয়র জাহাঙ্গীরকে দল থেকে বহিষ্কার করে।
তার বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন জেলায় মামলা রয়েছে। এরপর গত ২৫ নভেম্বর তাকে সাময়িকভাবে মেয়র পদ থেকে সাময়িক বরখাস্ত করে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়।
বহিষ্কারের পর নগরীর ৪৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আসাদুর রহমান কিরণ ভারপ্রাপ্ত মেয়রের দায়িত্ব নেন।