বর প্রবাসী বাসিন্দা, কনে দেশে কলেজের ছাত্রী। পরিবারের পক্ষ থেকে বিয়ের আয়োজন করা হয়। কিন্তু কনের মায়ের সখ ছিল মেয়ে শশুড় বাড়িতে যাবে হেলিকপ্টারে চরে। শাশুড়ীর এই শখ মেটাতেই কনে তাসলিমা আক্তার সুরভীকে হেলিকপ্টারে করে নিজের বাড়িতে নিয়ে গেলেন বর আবদুল আহাদ। হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার ভরগাঁও গ্রামে এমন ঘটনা ঘটে।
মায়ের স্বপ্ন ছিল মেয়ে হেলিকপ্টারে করে বরের বাড়ি যাবে। সবাইকে তাক লাগিয়ে দিন! মায়ের স্বপ্ন পূরণে হেলিকপ্টারে চড়ে হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার পানিউমদা ইউনিয়নের ভরগাঁও গ্রামের তাসমিয়া আক্তার সুরভী। বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) দুপুর আড়াইটার দিকে হেলিকপ্টারটি নবীগঞ্জ উপজেলার পানিউমদা ইউনিয়নের ভরগাঁও গ্রামের ফুটবল মাঠে অবতরণ করে। এ সময় ফুটবল মাঠের চারপাশে ছিল উৎসাহী মানুষের ভিড়। এ সময় ভরগাঁও গ্রামের পর্তুগিজ বাসিন্দা আকলাছ মিয়ার মেয়ে তাসমিয়া আক্তার সুরভী হেলিকপ্টারে চড়ে সিলেটের কুশিয়ারা কনভেনশন হলে গিয়েছিলেন বিয়ের অনুষ্ঠানস্থল। সেখানে হেলিকপ্টার অবতরণ করে, কনেকে বহনকারী হেলিকপ্টার। পরে কুশিয়ারা কনভেনশন হলে বিয়ের অনুষ্ঠান হয়। অনুষ্ঠান শেষে কনেকে হেলিকপ্টারে করে নিজ বাড়িতে নিয়ে যান বর আবদুল আহাদ। যুক্তরাজ্য প্রবাসী বর আব্দুল আহাদ সিলেটের ওসমানী নগর উপজেলার তাজপুর গ্রামের যুক্তরাজ্য প্রবাসী আব্দুল ওয়াহিদের ছেলে।
জানা যায়, সিলেটের ওসমানী নগর উপজেলার তাজপুর গ্রামের ব্রিটিশ প্রবাসী আব্দুল ওয়াহিদের ২ ছেলে ও ৩ মেয়ে। পরিবারের বড় ছেলে আব্দুল আহাদ তার বিয়ের জন্য পরিবার নিয়ে বাংলাদেশে এসেছেন। নবীগঞ্জ উপজেলার ভরগাঁও গ্রামের পর্তুগিজ প্রবাসী আকলাছ মিয়ার একমাত্র মেয়ে তাসমিয়া আক্তার সুরভীকে পাত্রী হিসেবে বেছে নেওয়া হলে উভয় পরিবারের সম্মতিতে দিন-তারিখ নির্ধারণ করা হয়। গত (১৩ জুলাই) কনের বাড়িতে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হয়। বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) সিলেটের কুশিয়ারা কনভেনশন হলে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হয়। সুরভীর মা সুলতানা বেগম বলেন, সুরভী আমার একমাত্র মেয়ে। অনেক দিনের স্বপ্ন ছিল আমার মেয়ে হেলিকপ্টারে করে স্বামীর বাড়িতে যাবে। বিয়েটা খুব জমকালো হবে। আল্লাহ আমাদের ইচ্ছা পূরণ করেছেন। আমরা দোয়া করেছি। আমাদের মেয়ে সুরভী, ভগবান যেন আমাদের মেয়ে ও জামাইকে সুখে শান্তিতে রাখেন। এ ব্যাপারে সুরভীর চাচাতো ভাই দিনারপুর কলেজের প্রভাষক আলী আমজাদ বলেন, কনের মায়ের ইচ্ছানুযায়ী সুরভীকে হেলিকপ্টারে করে বরের বাড়িতে পাঠানো হয়েছে। আমার বোন সুরভীর বিয়ে খুব সুন্দরভাবে সম্পন্ন হয়েছে। সবার জন্য দোয়া করবেন।
উল্লেখ্য, কনে উক্ত গ্রামের বাসিন্দা আকলাছ মিয়ার মেয়ে এবং পর্তুগাল প্রবাসী। স্বামী আব্দুল আহাদের বাড়ি সিলেটের ওসমানীনগর উপজেলার তাজপুর গ্রামে। বিয়ের জন্য আনা লাল হেলিকপ্টার নবীগঞ্জের ভরগাঁও গ্রামের ফুটবল মাঠে পৌঁছালে উৎসুক জনতা সেখানে ভিড় জমায়। হেলিকপ্টারযোগে কনেকে সিলেটের কুশিয়ারা কনভেনশন হলে নিয়ে যায় এবং সেখানে বিয়ের অনুষ্ঠান হয়। অনুষ্ঠান শেষে হেলিকপ্টারে আবার বর-কনেকে নিয়ে যায় ছেলের বাড়িতে।