সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি অডিও ক্লিপ সাম্প্রতিক সময়ে ভাইরাল হওয়ার পর তোলপাড় চলছে নেট দুনিয়া। ভাইরাল হওয়া এই অডিওটি মূলত একটি ফোনালাপ। এই ফোনালাপে একপ্রান্তে ছিলেন তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী ড. মুরাদ হাসান এবং অন্য প্রান্তে কথা বলতে শোনা যায় অভিনেতা ইমন ও অভিনেত্রী মাহিয়া মাহি।
ওই ফোনালাপে অভিনেত্রী মাহিয়া মাহির সঙ্গে দেখা করতে চান প্রতিমন্ত্রী মুরাদ হাসান এবং সেই কথা হওয়ার সময় তিনি অশালীন ভাষায় কথা বলেন। তিনি অভিনেতা ইমনকে বলেছিলেন মাহিকে ঘাড় ধরে তার কাছে নিয়ে যেতে। এদিকে নেট জগতে এই ক্লিপটি ভাইরাল হওয়ার পর সমালোচনার মুখে পড়েছেন চিত্রনায়ক ইমন। তাকে নিয়ে চলেছে ব্যাপক ট্রল। এ অবস্থায় গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেছেন তিনি।
অভিনেতা ইমন বলেন, “আমি খুবই হতাশ যে আমাকে যারা চেনেন কিংবা জানেন ভালো করে, তারাও হতা’শাজনক এবং আজেবা’জে মন্তব্য করছেন। এত বড় একজন মন্ত্রী যখন আমাকে ফোন করেন, তখন আমি তাকে এড়াতে পারি না। অডিও ক্লিপটি সবাই শুনেছেন। কণ্ঠস্বর শুনতে পেয়েছেন আপনারা এবং সেখানে তার কথা শোনার পর বুঝতেই পারছেন কে কোন অনুভূতির কথা বলছেন।’
“আমাকেই ওই রাতের আগের দিনও তিনি কল দিয়েছিলেন। আমি ধরতে পারিনি। ওইদিন রাতে ওয়াজেদ আলী সুমন ভাইয়ের ‘ব্লাড’ সিনেমার মিটিং করছিলাম। তখন উনি (প্রতিমন্ত্রী) হঠাৎ ফোন দেন। অডিওতে কিন্তু আছে উনি প্রথমেই বলেছেন, ‘তুই ফোন ধরস নাই কেন?’ আগের দিন ফোন ধরিনি বলে রেগেছিলেন।”
“একজন মন্ত্রী বারবার ফোন দিচ্ছেন আমি না ধরে তো থাকতে পারি না। তাই অনুষ্ঠানের মধ্যেই ধরেছি। বাকি আলাপ তো সবাই শুনেছেন। উনার আলাপ শুনেই কিন্তু আমি বাধ্য হয়ে বলেছি, ‘হ্যাঁ, ভাই আসতেছি। দেখছি ভাই’। খারাপ কিছু কিন্তু বলিনি।”
উনি কল দেওয়ার অনেক সময় পার হয়ে গেছে। আমি কিন্তু বারবার বলছি, ‘দু’মিনিট ভাইয়া, নামছি’। আমি চাইছিলাম যেন উনি ফোনটা রাখেন। মাহির সঙ্গে কি আলাপ হয়েছে সেটা কিন্তু আমি জানতে পারিনি। কারণ আমি মাহির হাতে ফোন দিয়ে ডিরেক্টরের সঙ্গে আলাপ করছিলাম। মাহি কিন্তু আমাকে কিছুই বলেনি এ ব্যাপারে। আমার জানার অপশনও ছিল না। এখন অডিওটা শুনে আমি জানতে পারলাম সেদিন মাহি কতোটা বিব্রত ছিলে।
সত্যি কথা বলতে ওই মুহূর্তে ফোন আসাটা আসলে আমি আশা করিনি। আমি বা মাহি কেউই কিন্তু যাইনি পরে। আমি শুধু ওই সিচুয়েশনটা ট্যাকেল দেওয়ার চেষ্টা করেছি। কারণ এখন যেই যত কথা বলুক একজন মন্ত্রী কল দিলে তার সঙ্গে বেয়াদবি করা যায় না, তাকে যা খুশি তা বলা যায় না। ভেবেছিলাম একটু পর সব ভুলে যাবেন। হয়েছিল তাই। এনিয়ে তিনি আর পরে কোনো কথা বলেননি।’
ইমন আরও জানান, সেদিনের মিটিং হয়েছিল বনানীর একটি রেস্তোঁরায়। এরপর ইমন ও মাহি দুজনই যার যার বাসায় চলে যান। ইমনের দাবি, একজন তথ্য প্রতিমন্ত্রী যেকোনো শিল্পীকে ফোন দিতেই পারেন। কিন্তু এমন আচরণ অগ্রহণযোগ্য। তিনি নিজেও হতাশ মাহির সঙ্গে প্রতিমন্ত্রীর ফোনালাপ শুনে।
ইমন বলেন, ‘আমাকে নিয়ে অনেকেই কথা বলছে। দীর্ঘদিন যাবৎ বিনোদন জগতে কাজ করছি। সবাই আমাকে বেশ ভালোভাবেই চেনেন। আমি এটা বুঝতে পারছি না কেন তারা আমাকে এই ধরনের আজেবাজে কথা বলছে। আশা করছি আপনারা সবাই বিবেকবান এবং বিবেক দিয়ে পরিস্থিতি বোঝার চেষ্টা করবেন। ‘
উল্লেখ্য, প্রকাশ পাওয়া ফোনালাপ সত্যিই ঘটেছে বলে স্বীকার করেছেন চিত্রনায়ক ইমন। তবে এটা যদি বলেন সাম্প্রতিক সময়ের তাহলে আপনাদের ভূল হবে, এটা দুই বছর আগের ঘটনা। এদিকে অভিনেত্রী মাহিয়া মাহি বর্তমান সময়ে স্বামীর সাথে সৌদি আরবে অবস্থান করছেন। স্বামীর সাথে তিনি সেখানে ওমরাহ পালন করতে গিয়েছেন। তবে তিনি কবে দেশে ফিরে আসবেন সেটা এখনো জানা যায়নি।