মালয়েশিয়ার জোহর প্রদেশে চীনারা ফরেস্ট সিটি কমপ্লেক্স নামে একটি উচ্চাভিলাষী প্রকল্প চালু করেছিল। বর্তমানে শহরে বসবাসকারী কয়েকজনের দাবি, পর্যাপ্ত জায়গা থাকলেও লোকের অভাবে জায়গাটি অসহনীয় হয়ে উঠেছে।
যারা ফরেস্ট সিটিতে বসবাস করেছেন তাদের মধ্যে, নাজমি হানাফিয়া, একজন 30 বছর বয়সী আইটি ইঞ্জিনিয়ার, সম্প্রতি বিবিসির সাথে তার 100 বিলিয়ন ডলারের প্রকল্পে থাকার অভিজ্ঞতা সম্পর্কে কথা বলেছেন। তিনি বললেন, আমি ঐ স্থান থেকে পালিয়ে এসেছি।
পালানোর কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে হানাফিয়া বলেন, এখানকার চারপাশের এলাকা জনশূন্য।
এ বিষয়ে বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চীনের সবচেয়ে বড় ডেভেলপার কোম্পানি ‘কান্ট্রি গার্ডেন’ ২০১৬ সালে বন শহরটির উদ্বোধন করে। কোম্পানিটি সেই সময়ের বিজ্ঞাপনে শহরটিকে পরিবেশবান্ধব ‘স্বপ্নের স্বর্গ’ বলে অভিহিত করেছিল। বলা হয়েছিল, এই গ্রিন সিটিতে থাকবে ওয়াটার পার্ক, গলফ কোর্স, দেশি-বিদেশি খাবারের রেস্তোরাঁ এবং অন্তত এক মিলিয়ন বাসিন্দা।
কিন্তু আট বছর পেরিয়ে গেলেও প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হয়নি। শহরে বসবাসকারী মুষ্টিমেয় মানুষ এখন একে ‘ভূতের শহর’ বলে।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এ পর্যন্ত ফরেস্ট সিটি নির্মাণ পরিকল্পনার মাত্র ১৫ শতাংশ বাস্তবায়িত হয়েছে। শহরের মাত্র 1 শতাংশ অ্যাপার্টমেন্ট এখন ব্যবহারযোগ্য। কিন্তু এরই মধ্যে নির্মাণ প্রতিষ্ঠান ‘কান্ট্রি গার্ডেন’ প্রায় ২০০ বিলিয়ন ডলার ঋণের মুখে পড়েছে।
তারপরও ডেভেলপার কোম্পানির কর্মকর্তারা বলছেন, বন নগরীর পুরো প্রকল্প একদিন বাস্তবায়িত হবে বলে তারা আশাবাদী।
হানাফিয়া ফরেস্ট সিটিতে সমুদ্রের দৃশ্যে একটি 1 বেডরুমের ফ্ল্যাট ভাড়া নেন। কিন্তু ছয় মাস অতিবাহিত হওয়ার আগেই তিনি অনুভব করেছিলেন যে খুব বেশি কিছু হয়ে গেছে। সে আর এই ভুতুড়ে শহরে থাকতে চায় না।
হানাফিয়া বিবিসিকে বলেছেন, “সেই জায়গাটি নিয়ে আমার অনেক বেশি প্রত্যাশা ছিল। কিন্তু এটা আমার জন্য খারাপ অভিজ্ঞতা। সেখানে কিছু করার নেই।’
হানাফিয়া দাবি করেন যে তিনি এখন সেখানে যেতে চান না।
ফরেস্ট সিটির আরেক বাসিন্দা জোয়ান কাউর বলেন, ‘ওই মানুষগুলোর জন্য আমি দুঃখিত। যারা আসলে এখানে বিনিয়োগ করে জায়গা কিনেছেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘জনগণের কাছে প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী এটি একটি প্রকল্প হওয়া উচিত। এটা বাস্তবায়িত হয়নি।’