মার্কিন রাষ্ট্রদূতের গাড়িতে হামলা : বদিউল আলমের শ্যালকের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা

সাবেক মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্শা বার্নিকাটের গাড়িবহরে হামলার মামলায় সিটিজেন ফর গুড গভর্নেন্স (সুজন) পত্রিকার সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদারের শ্যালক মুহাম্মদ ইশতিয়াক মাহমুদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত। বুধবার ঢাকা মহানগর হাকিম মো. জাকি আল ফারাবী এ আদেশ দেন।

গত ১৯ সেপ্টেম্বর গোয়েন্দা পুলিশ এ মামলায় সম্পূরক চার্জশিট দাখিল করে। সম্পূরক চার্জশিটে নতুন করে মোহাম্মদ ইশতিয়াক মাহমুদকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। মোহাম্মদপুর থানা আওয়ামী লীগের তৎকালীন সভাপতি মুজাহিদ আজমী তান্না মারা যাওয়ায় অভিযোগপত্রে আসামির সংখ্যা কমে দাঁড়িয়েছে নয়জন।

মামলার বাকি আসামিরা হলেন, মোহাম্মদপুর থানা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক (বর্তমানে সভাপতি) নাইমুল হাসান, একই থানার তৎকালীন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মীর আমজাদ হোসেন, ফিরোজ মাহমুদ, মো: সাজু ইসলাম, রাজিবুল ইসলাম রাজু, শহিদুল আলম। খান কাজল, সিয়াম, অলি আহমেদ ওরফে জনির নাম ছিল। এ ছাড়া অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের নাম-ঠিকানা জানা না থাকায় ১৫-২০ আসামির নাম চার্জশিটে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। এতে ১৯ জন সাক্ষী ছিলেন।
আসামি ইশতিয়াক মাহমুদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আবেদন করা হয়। অন্যদিকে মুজাহিদ আজমিকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়ার সুপারিশ করা হয়। সম্পূরক চার্জশিট গ্রহণ করে আজ পলাতক আসামি ইশতিয়াক মাহমুদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আদেশ দেন আদালত।
মোহাম্মদপুর থানার সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা পুলিশের এসআই এশারত আলী সিএমএম আদালতে এ তথ্য জানান।

এর আগে ২০১৮ সালের ১৮ জানুয়ারি মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) পরিদর্শক মোঃ আব্দুর রউফ এ মামলায় চার্জশিট দাখিল করেন। ওই চার্জশিটে ছাত্রলীগ নেতাসহ নয়জনের নাম ছিল।

অভিযোগপত্রে বলা হয়, ২০১৮ সালের ৪ আগস্ট রাতে সুজনের সম্পাদক ড. বদিউলের মোহাম্মদপুর ইকবাল রোডের বাসায় নৈশভোজে অংশ নিতে যান। যেখানে গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন ও বিএনপি নেতা মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বীর বিক্রমও অংশ নেন। খবর পেয়ে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা সরকারবিরোধী ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তুলে বদিউলের বাড়িতে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। রাতের খাবারের পর বার্নিকাটের গাড়ির পেছনে ধাওয়া করলে তিনি দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।

ওই চার্জশিটের ভিত্তিতে নয়জনের বিরুদ্ধে বিচার শুরু হওয়ার পর রাষ্ট্রপক্ষে পাঁচজন সাক্ষ্য দেন। তাদের জবানবন্দিতে ইশতিয়াক মাহমুদ নামে এক ব্যক্তির সম্পৃক্ততার কথা জানা যায়। তাই মামলার অধিকতর তদন্তের আবেদন করেন ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর আবদুল্লাহ আবু। সেই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে চলতি বছরের ১ জানুয়ারি ঢাকা মহানগর হাকিম মামুনুর রহমান ছিদ্দিকী অধিকতর তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন।

২০১৮ সালের ১০ আগস্ট রাতে ডাঃ বদিউল আলম মজুমদার বাদী হয়ে মোহাম্মদপুর থানায় একটি মামলা করেন। মামলার বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ওই রাতে বার্নিকাটের গাড়িতে ৩০-৪০ জন দুর্বৃত্ত হামলা চালায়। তারা বার্নিকাটের চালক ও বদিউলের ছেলের ওপর হামলা চালায়। বার্নিকাটের গাড়ি ধাওয়া করে ইট ছুড়ে মারে। এ সময় পিস্তল ও লাঠিসোঁটা নিয়ে দুর্বৃত্তরা মার্কিন রাষ্ট্রদূতের গাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে।