বাংলাদেশ নিয়ে আবারো নতুন করে শুরু হয়েছে নানা ধরনের আলোচনা সমালোচনা। বিশেষ করে গেলো কয়দিন আগে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মনোনীত রাষ্ট্রদূত পিটার হাঁসের সাথে ঘটে যায় একটি অনাকাঙ্খিত ঘটনা। আর এই ঘটনায় এবার বেশ চটেছে যুক্তরাষ্ট্র। এবার নিয়ে বিবৃতি দিয়েছে দেশটি। এ নিয়ে লেখা পুরো প্রতিবেদন তুলে ধরেছেন মুশফিকুল ফজল আনসারী। পাঠকদের উদ্দেশ্যে তার সেই লেখনী তুলে ধরা হলো হুবহু:-
গুম হওয়া ব্যক্তিদের পরিবারগুলোর সঙ্গে ঢাকায় নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার ডি হাসের সাক্ষাতে সরকার সমর্থক কর্মীদের বাধা এবং বিশৃঙ্খলা তৈরি করায় কড়া উদ্বেগ প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। বাংলাদেশের অব্যাহত মানবাধিকার লংঘনের ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্র যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ অব্যাহত রাখবে বলে জানিয়েছে দেশটি। পাশাপাশি শান্তি এবং নিরাপত্তা রক্ষায় পদক্ষেপ নিতে যুক্তরাষ্ট্র প্রতিশ্রুতিবদ্ধ বলেও বুধবারের এক বিশেষ ভার্চুয়াল ব্রিফ্রিংয়ে কড়া বার্তা দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিল (এনএস সি )’র স্ট্র্যাটিজিক কমিউনিকেশন পরিচালক অ্যামিরাল জন কিরবি।
<iframe src=”https://www.facebook.com/plugins/post.php?href=https%3A%2F%2Fwww.facebook.com%2Fmushfiqansarey%2Fposts%2Fpfbid0JyG2yAspFd5qejVLEn4BHFCQEznWyMHNFwmjAP9LHSZXxQoVZRP9KzPUeKtZeQNol&show_text=true&width=500″ width=”500″ height=”258″ style=”border:none;overflow:hidden” scrolling=”no” frameborder=”0″ allowfullscreen=”true” allow=”autoplay; clipboard-write; encrypted-media; picture-in-picture; web-share”></iframe>
এক প্রশ্নের জবাবে কোনোরকম রাখ-ঢাক না করেই কিরবি বলেন, বাংলাদেশের যেসব বিষয়গুলোতে মানবাধিকারের উন্নতি হচ্ছেনা নিশ্চিতভাবে সেগুলো নিয়ে আমাদের উদ্বেগ আছে।বাংলাদেশ নির্বাচন প্রসঙ্গেও কথা বলেন এই ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা।
তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র চায় নিরপেক্ষ এবং সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন করার পরিবেশ বাংলাদেশে তৈরি হোক।
ব্রিফিংয়ে সাংবাদিক মুশফিকুল ফজল আনসারী জানতে চান: “আমার প্রশ্ন বাংলাদেশ ইস্যুতে। বুধবার সকালে বিরোধীদলের নিখোঁজ কর্মী সাজেদুল ইসলামের বাসায় পরিদর্শনের সময় সেখানে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করেছিলো ক্ষমতাসীনদের সমর্থকরা। সাজেদুল ২০১৩ সাল থেকে নিখোঁজ রয়েছেন। বাংলাদেশে গুম আর বিচারবর্হিভূত হত্যা একটা নৈমত্তিক ঘটনা। যুক্তরাষ্ট্র ইতিমধ্যে র্যাব এবং এর ৬ অফিসারের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। নিরাপত্তাজনিত কারণে সেখানে বৈঠক শেষ না করেই বের হয়ে আসেন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত, এছাড়া গণমাধ্যমের খবরে জানা গেছে ঘটনাটির পরপরই পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ে গিয়ে তিনি তার উদ্বেগের কথা জানিয়ে এসেছেন। বাংলাদেশে তার নিরাপত্তার বিষয়টি নিয়ে আপনারা উদ্বিগ্ন কীনা? কারণ বাংলাদেশের সরকার বিরোধী দলের ওপর আক্রমণাত্মক হয়ে উঠেছে, বিএনপির মহাসচিব এবং বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দসহ হাজার হাজার কর্মীকে আটক করা হয়েছে। তাদেরকে সমাবেশ করার সুযোগ দেয়া হচ্ছেনা। জনগণ গণতন্ত্র আর ভোটাধিকারের জন্য লড়াই করছে। এবিষয়ে আপনার মন্তব্য কী? আপনি কী রাষ্ট্রদূতের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন?”
জবাবে স্টেট ডিপার্টমেন্ট মুখপাত্র জন কিরবি বলেন: “আমরা অবশ্যই আমাদের রাষ্ট্রদূতের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন। আপনি সঠিক বলেছেন। নিরাপত্তাজনিত কারণেই ঐ বৈঠকটি সংক্ষিপ্ত করা হয়েছিলো। বাংলাদেশ সরকারের শীর্ষ পর্যায়ে আমরা রাষ্ট্রদূতের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ জানাচ্ছি।”
এরপরই যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতির প্রসঙ্গ টেনে তিনি কড়া বার্তার ইঙ্গিত করে বলেন, “আমাদের নীতিসমূহ, বিশেষ করে সমৃদ্ধির পূবশর্ত শান্তি এবং নিরাপত্তা রক্ষায় পদক্ষেপ নিতে যুক্তরাষ্ট্র প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। ”
বাংলাদেশের মানবাধিকার লংঘনের ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্রের পদক্ষেপ অব্যাহত থাকবে জানিয়ে কিরবি বলেন, “আপনি আমাদের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের বিষয়ে খেয়াল করুন। এজায়গাটায় আমরা অনেক খোলাখুলিভাবে কথা বলি। বাংলাদেশের মানবাধিকার ইস্যুতে আমাদের পদক্ষেপ অব্যাহত থাকবে।যেসব বিষয়গুলোতে মানবাধিকারের উন্নতি হচ্ছেনা নিশ্চিতভাবে সেগুলো নিয়ে আমাদের উদ্বেগ আছে।”
বাংলাদেশের গণমাধ্যম, সুশীল সমাজ এবং নির্বাচন এই তিন বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্বেগের অবস্থান স্পষ্ট করে বাইডেন প্রশাসনের এই কর্মকর্তা বলেন, “গণমাধ্যম স্বাধীনভাবে লিখতে পারছেনা, সুশীল সমাজ স্বাধীনভাবে কাজ করার সুযোগ পাচ্ছেনা, তাদেরকে স্বাধীন কাজ করার এবং উদ্বেগ প্রকাশের সুযোগ দিতে হবে। একইভাবে নির্বাচন নিরপেক্ষ এবং সুষ্ঠুভাবে করার পরিবেশ থাকতে হবে।”
যুক্তরাষ্ট্র তার এই মৌলিক নীতিগুলোর ব্যাপারে বিশ্বজুড়েই সোচ্চার উল্লেখ করে জন কিরবি জানান, “বাংলাদেশের ক্ষেত্রেও আমাদের একই অবস্থান।”
প্রসঙ্গত, এ দিকে এবার এ নিয়ে বাংলাদেশে শুরু হয়েছে নানা সমালোচনা। বিশেষ করে নেতাকর্মীরা কি ভাবে একজন রাষ্ট্রদূতকে বাধা দিতে পারে তা নিয়ে তৈরী হয়েছে অনেক প্রশ্ন।একজন রাষ্ট্রদূত হিসেবে তিনি বিরোধী দলের নেতাদের খোঁজ খবর নিতে পারেন এটা সরকার দলের লোকদের বাধা দেয়ার বিষয় নয় বলে জানিয়েছেন সকলে।