ডোনাল্ড লু যিনি যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ও দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক সহকারী সচিব হিসেবে রয়েছেন তিনি এই প্রথমবার ঢাকা সফরে আসছেন। তিনি ঢাকায় দুই দিন অবস্থান করবেন বলে জানা গেছে। তবে আজ শনিবার (১৪ জানুয়ারি) তিনি প্রথমে ভারত যাবেন এবং সেখান থেকে ঢাকায় আসবেন। লুর সফরে দুটি গুরুত্বপূর্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে বলে জানা গেছে। আর তার একটি হলো র্যাবের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার এবং অন্যটি হলো নতুন কোনো নিষেধাজ্ঞা আরোপ না করা। এই দুটি বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রকে অনুরোধ করবে বাংলাদেশ।
অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্র গণতন্ত্র, নির্বাচন, মানবাধিকার, ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশল, প্রতিরক্ষা সহযোগিতা, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন এবং ঢাকায় দেশের কূটনীতিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার ওপর জোর দিতে পারে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, শনিবার রাতে ঢাকায় আসবেন ডোনাল্ড লু। পরদিন রোববার (১৫ জানুয়ারি) পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন ও পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন। সরকারি পর্যায়ে আলোচনার পাশাপাশি বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলবেন লু।
কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে, লুর সফরে দুই পক্ষের দ্বিপাক্ষিক ও বহুপাক্ষিক বিষয় নিয়ে আলোচনা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এই ক্ষেত্রে, প্রতিটি অগ্রাধিকার বিষয় আলোচনার টেবিলে থাকবে। ঢাকায় র্যাবের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার, জিএসপি সুবিধা পুনরায় চালু, ব্যবসা-বাণিজ্য, শ্রম অধিকার ও মানবাধিকার রক্ষায় সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগ, অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের বিষয়ে এ পর্যন্ত গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপ, কূটনীতিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।এছাড়াও ভিয়েনা সনদ, মিয়ানমার থেকে আগত শরনার্থী ইস্যুতে সহযোগিতা।
এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের বোস্টনে পুলিশের হাতে বাংলাদেশির প্রয়ানের ঘটনা তুলে ধরবে ঢাকা। সেখানে বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত ও মৃ”ত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত খু”/নি রাশেদ চৌধুরীর প্রত্যাবর্তনও হবে।
কূটনৈতিক সূত্র আরও বলছে, ডোনাল্ড লু মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের একজন গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তা। ওয়াশিংটন সফরে তিনি অবশ্যই কিছু এজেন্ডা নিয়ে আসবেন। লু অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন এবং বাংলাদেশের সব দলের অংশগ্রহণের বার্তা দেবেন বলে আশা করা হচ্ছে। এছাড়া মানবাধিকার পরিস্থিতি, গু’ম, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন, ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশল নিয়ে আলোচনা হবে।
উল্লেখ্য, গত ৩০ বছর ধরে, ডোনাল্ড লু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সরকারের জন্য একজন পররাষ্ট্র কর্মকর্তা হিসেবে কাজ করছেন। ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে, লু দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক সহকারী সেক্রেটারি অফ স্টেট নিযুক্ত হন। এর আগে তিনি এ অঞ্চলের বেশ কয়েকটি দেশ সফর করলেও এটিই তার প্রথম ঢাকা সফর হতে যাচ্ছে।
এখন দেখার বিষয় লু বাংলাদেশ সফরে আসার পর তিনি কোন বিষয় নিয়ে আলোচনা করবেন। এছাড়া বাংলাদেশের পক্ষ থেকে যে বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা চলবে সেই বিষয়ে তিনি কতটা গুরুত্ব দিবেন কিংবা বাংলাদেশের চাও্যার বিষয়ে তিনি কতটা সাড়া দিবেন। এদিকে রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা এই বিষয়টিকে ঠিক ইতিবাচক দেখছেন কিনা সে বিষয়েও তেমন কিছু জানা যায়নি।