গত ২৭ আগস্ট রাত সাড়ে ১০ টার দিকে পানি আনতে বাসা থেকে নিচে নেমে রীতিমতো নিখোঁজ হন রহিমা বেগম। এরপর অনেক খোজ-খুঁজি করেও তার কোনো হদিস না পেয়ে ঘটনার একদিন প্রিয় থানায় জিডি করেন মেয়ে মরিয়ম মান্নান। আর এরই আলোকে অভিযান চালিয়ে অবশেষে প্রায় ২৮ দিন রহিমাকে উদ্ধার করেছে পুলিশ।
শনিবার (২৪ সেপ্টেম্বর) রাত পৌনে ১১টার দিকে ফরিদপুরের বোয়ালমারীর সৈয়দপুর গ্রামের কুদ্দুসের বাড়ি থেকে তাকে উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনার পরপরই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এক স্ট্যাটাস দিয়েছেন মরিয়ম মান্নান।
যেখানে তিনি লিখেছেন, সন্তান মা’কে খুজবে খুব স্বাভাবিক। আপনার মা হারিয়ে গেলে আপনিও খুজতেন।ফুলপুরের লাশ পর্যন্ত গিয়েছি মা’কেই খুজতে।ফুলপুর থানার অসি কে আমি তাদের দেয়া একটা বিজ্ঞাপনের মাধ্যমেই কল দেই। ওখানে যাই ডিএনএ টেস্টের জন্য আবেদন করি।আমার মা’কে আমি খুজেছি,সব যায়গায় যেয়ে একটা কথাই বলেছি আমার মা’কে চাই।মা যদি আত্নগোপন করেন তাকে এনে শাস্তি দিন তাও আমার মা আমার চোখের সামনে এনে দিন দয়াকরে।
আজকে মা’কে পাওয়া গিয়েছে,আমি মায়ের উদ্দেশ্যে যাচ্ছি। মায়ের সাথে এখনো দেখা হয়নি,কথাও হয়নি।মায়ের কোন ভিডিও অথবা অডিও পাইনি যেখানে মা বলেছেন তিনি আত্মগোপন করেছেন। সকলের কাছে কাছে গিয়েছি মা’কে খুজে পেতে, যাদের কাছে গিয়েছি তারা জানেন কি চেয়েছি আমি।মা’কে চাওয়া ছাড়া আর কিছু চাওয়া আমার ছিলো নাহ।এখনো নেই।দয়াকরে আমার মা’কে আমার মায়ের সাথে আমার দেখা নাহ হওয়া পর্যন্ত আমাকে ভুল বুঝবেন নাহ।আমি মাকে খুঁজেছি,সন্তান হিসেবে আমার দায়িত্ব তাঁকে খোঁজা। মা এই তিরিশ দিন কোথায় ছিলো কিভাবে ছিলো সেটা আপনাদের মতো আমারও প্রশ্ন। আমার মায়ের সাথে আমাকে কথা বলতে দিন। আমার মায়ের কাছে পৌঁছানো পর্যন্ত আমাকে সহোযোগিতা করুন।মা যদি আত্নগোপন করেও থাকেন তবুও তাকে খোঁজার দায়িত্ব আমার।
আমি মা’কে খুজতেছি বলে আমাকে বলা হচ্ছে মায়ের আত্নগোপনে আমি জরিত? তাহলে আমার কি করা উচিত ছিলো? যখন শুনেছি আমার মা নিখোঁজ তখন চুপ করে বসে থাকা উচিত ছিলো?যারা প্রথমদিন থেকে বলছিলেন মা আত্মগোপন করেছেন তাদের কথা শুনে মা’কে আর খুজতাম নাহ?মা’কে খুজেছি বলে আমাকে আমাকে দোষী করা হবে?
আপনারা আমাকে যে যাই দোষ দিন নাহ কেন,প্রথম দিন থেকে আমি ছুটিতেছি মা’য়ের জন্য।আজকে পেয়েও গিয়েছি।বারবার বলেছি মা আত্মগোপন করলে সামনে আনুন শাস্তি দিন আমার কলিজা জুরাক।আমার কলিজা শান্ত হইছে।মায়ের চেহারাটা দেখেই আমার শান্তি।আপনারা যে যাই বলেন, এখন আমার মা আমার সামনে। মা’কে খুঁজে পাওয়ার লড়াই ছিলো আমার। আপনারা সহোযোগিতা করেছেন।আপনাদের সহোযোগিতায় আজকে আমার মা’কে খুজে পেয়েছি।
প্রথম দিনের মতোই আজকেও আমার একটাই চাওয়া মা’কে ছাড়া কিছুই চাইনা।মাকে নিয়ে এই খুলনা শহর ছেড়ে দিবো,মাকে নিয়ে দূরে চলে যাবো।মা’কে চাওয়া ছাড়া কিছুই চাওয়ার নাই।যে যায়গা নিয়ে মামলা সেই জায়গাও চাই নাহ।শুধু মাত্র মা’কে চাই।মা’কে আমার কাছে নাহ পাওয়া পর্যন্ত আপনাদের সকলের সহোযোগিতা কামনা করছি।এবং আমি জানি একজন মা’কে তার সন্তানদের কাছে ফিরিয়ে দিতে পৃথিবীর সকল মানুষ আমার পাশে থাকবেন। আমি খুশি, এক মুহুর্তের জন্যও বিচলিত নই।মাকে খুজতে যেয়ে যদি আমাকে দোষী হতে হয় আমি সেই দোষ মাথা পেতে নেওয়ার শক্তি এবং সাহস রাখি, ইনশাআল্লাহ।
তবে এর আগে গত শুক্রবার (২৩ সেপ্টেম্বর) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাসে নিজের মায়ের মৃত্যুর কথা নিশ্চিত করেছিলেন তিনি তিনি নিজেই। তবে ওই নারীই তার মা নয়, তা প্রথম থেকেই সন্দেহ ছিল পুলিশের।