মরণঘাতী ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে গত বৃহস্পতিবার (২৬ জানুয়ারি) রাত ৯ টার দিকে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন ক্সবাজারের চকরিয়া পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি শাহজাহান মনি। তার অকাল মৃত্যুতে যেন কান্নার সাগরে ভাসছে গোটা পরিবার।
তবে বিএনপির অন্যতম এই নেতার মৃত্যুর মাত্র কয়েক ঘণ্টার মধ্যে শাহজাহানের গর্ভবতী স্ত্রীকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তিনি একটি কন্যা সন্তানের জন্ম দেন। পিতা নবজাতক সন্তানকে দেখতে পাননি, আর মেয়ের দেখা হলো না তার জন্মদাতা বাবাকে।
বৃহস্পতিবার (২৮ জানুয়ারি) রাত ৯টার দিকে মনির শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। পরদিন শুক্রবার সকাল ১১টার দিকে চকরিয়া পৌরসভা দক্ষিণ লক্ষাচর সিকদারপাড়া কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ সংলগ্ন মাঠে তার জানাজা সম্পন্ন হয়। লাশ দাফনের সাড়ে আট ঘণ্টা পর গতকাল সন্ধ্যায় চকরিয়া শহরের ম্যাক্স হাসপাতালে কন্যা সন্তানের জন্ম দেন শাহজাহান মনিরের স্ত্রী রুশনি জান্নাত।
জানা যায়, শাহজাহান পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি ছিলেন। তার চলে যাওয়ায় স্ত্রী রুশনি জান্নাত দুই মেয়েকে নিয়ে অথৈ সাগরে পড়েছেন। মৃত্যুর কয়েক মাস আগে শাহজাহানের লিভার ক্যান্সার ধরা পড়ে। বাংলাদেশে কয়েকদিন চিকিৎসার পর তাকে ভারতের হায়দ্রাবাদের এআইজি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
সেখানে চিকিৎসকরা তাকে কেমোথেরাপি দেওয়ার পরামর্শ দেন। দেশে ফিরে তিনি চট্টগ্রামের ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ আবদুল আউয়ালের তত্ত্বাবধানে ছয়টি কেমোথেরাপি নেন। যাইহোক, পরিস্থিতি খারাপ হলে শাহজাহানকে আবার হায়দরাবাদে নিয়ে যাওয়া হয়। তবে সেখানকার চিকিৎসকদের পরামর্শে গত মঙ্গলবার বাসায় ফিরেছেন শাহজাহান।
শাহজাহানের স্ত্রী রুশনি জান্নাত জানান, সানজিদা হক রাফা নামে তাদের আড়াই বছরের মেয়ে রয়েছে। পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি ছিলেন শাহজাহান। এখন দুই মেয়েকে নিয়ে অথৈ সাগরে পড়েছেন তিনি। শাহজাহানের চিকিৎসার জন্যও প্রচুর অর্থ ব্যয় হয়। এখন কিভাবে সংসার চালাবেন তা নিয়ে চিন্তিত তিনি।
২০১৯ সালের ২৭ জানুয়ারি পারিবারিকভাবে রুশনির সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবধ্য হন শাহজাহান। তবে কাকতালীয় বিষয়টি হলো- একই দিনেই তার লাশ দাফন হলো। শুধু তাই নয়, তার দ্বিতীয় সন্তানের জন্মও হলো একই তারিখে।