পুলিশের ওপর হামলা, কাজে বাধা, ককটেল বিস্ফোরণ ও অগ্নিসংযোগসহ নাশকতার অভিযোগে ৩ মাসে ৪৪টি মামলায় বিএনপির ৭৮৭ নেতাকর্মীকে কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। বিভিন্ন মেয়াদে সাজাপ্রাপ্তদের মধ্যে রয়েছেন কেন্দ্র থেকে ওয়ার্ড পর্যায়ের দলীয় নেতারাও। মৃতরাও বাদ যায়নি।
গত ২৩ ও ২৯ নভেম্বর বিএনপির দুই মৃত সদস্যকে সাজা দেন আদালত। ২০১২ সালের সবুজবাগ থানায় দায়ের করা মামলায় বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের ১৫ নেতাকর্মীকে ২ বছর ৬ মাসের কারাদণ্ড দেন আদালত। এতে ২০২১ সালের ১৩ জুলাই মারা যাওয়া ৭৩ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপি নেতা সোহরাওয়ার্দী চেয়ারম্যানকেও সাজা দেওয়া হয়েছে।
এ মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত অন্যরা হলেন- বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মো. হাবিবুর রশিদ হাবিব, বিএনপি নেতা মোরসালিন, মনির হোসেন, কাজী বাবু, আলমাস হোসেন চেয়ারম্যান, আতাউর রহমান, মোঃ মাকসুদ, বিডিও বাবু, আলমত, সালামত, ওমর ফারুক, শাজাহান, রশিদুল হাসান নোমান ও মোঃ গোলাম হোসেন প্রমুখ। ঢাকা মহানগর হাকিম মইনুল ইসলাম এ রায় ঘোষণা করেন।
এ প্রসঙ্গে নিহত সরোয়ারের চেয়ারম্যানের স্ত্রী সাদিয়া সারওয়ার বলেন, এখন তারা যদি পারে তাকে কবর থেকে উঠিয়ে এনে সাজা কার্যকর করুক। এছাড়া তো কিছু বলার নেই। তিনি বলেন, সে যে মারা গেছে এটা আমরা আগেই থানায় জানিয়েছি। তার মামলার বিষয়ে বহুবার পুলিশ এসেছে। তার ডেথ সার্টিফিকেটও দিয়েছি।
এ ছাড়া ২০১৭ সালের পল্টন থানার একটি মামলায় ২৩ নভেম্বর বিএনপির ৩৬ নেতাকর্মীকে ৪ বছরের কারাদণ্ড ও ৫ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে ১৭ দিনের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। তার আইনজীবী আবু বক্করের মতে, ১২ নম্বর আসামি তানভীর আদিল খান বাবু মারা গেছেন।
আবু বকর যুগান্তরকে বলেন, তানভীর আদিল খান বাবু অনেক আগেই মারা গেছেন। তার বিরুদ্ধে প্রায় ৬০টি মামলা ছিল। আমরা আদালতে জানিয়েছিলাম যে তিনি মারা গেছেন।
এ প্রসঙ্গে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের মহাসচিব ও বিএনপির আইন বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল যুগান্তরকে বলেন, নিহতের বিরুদ্ধে সাজা ঘোষণা আইন ও সংবিধান পরিপন্থী। এগুলো গায়েবি মামলার রায়। যে ব্যক্তির অস্তিত্ব নেই তাকে শাস্তি দেওয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, নতুন আদালত সরকার নিয়ন্ত্রণ করছে। এসব রায়ে সরকারের উদ্দেশ্য প্রতিফলিত হয়।
ঢাকা অধস্তন আদালতের পাবলিক কৌঁসুলি আবদুল্লাহ আবু যুগান্তর আদালতকে বলেন, তাদের মৃত্যুর কোনো খবর পাওয়া যায়নি। পুলিশ এ ধরনের কোনো প্রতিবেদন দেয়নি। যদি দেওয়া হয়, তাহলে তাদের শাস্তি হবে না। এখানে আদালতের কোনো অবহেলা নেই।
তিনি আরও বলেন, কেউ মারা গেলে তার পরিবারকে আদালতকে জানাতে হবে। তারা জানিয়েছে কি না তাও যাচাই করা উচিত।