সম্প্রতি মার্কিন রাষ্ট্রদূতের সাথে বাংলাদেশে যে ঘটনা ঘটেছে তা নিয়ে এখনো শেষ হয়নি আলোচনা সমালোচনা। বিশেষ করে মার্কিন রাষ্ট্রদূতের একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিবৃতি প্রকাশ করতে হয়েছে দেশটিকে। জানা গেছে ‘মায়ের কান্না’ নামের একটি সংগঠনের ব্যানারে সদস্যগন গতকাল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার ডি হাসের সঙ্গে দেখা করে কথা বলতে চান যখন রাষ্ট্রদূত নিখোঁজ বিএনপি নেতা সাজেদুল ইসলামের বাসায় গিয়েছিলেন।আর সেখানেই একদল কর্মীর কাছে তাকে হতে হয় হেনস্থা। এবার এ নিয়ে একটি লেখনী লিখেছেন মঞ্জুর কাদের। পাঠকদের উদ্দেশ্যে তার সেই লেখনী তুলে ধরা হলো হুবহু:-
‘মায়ের কান্না’ নামের একটি সংগঠনের ব্যানারে সদস্যগন গতকাল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার ডি হাসের সঙ্গে দেখা করে কথা বলতে চান যখন রাষ্ট্রদূত নিখোঁজ বিএনপি নেতা সাজেদুল ইসলামের বাসায় গিয়েছিলেন।
সেটি নিয়ে নিরাপত্তা জনিত পরিস্থিতি সৃষ্টি হয় যার কারণে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের এনএসসি’র স্ট্র্যাটিজিক কমিউনিকেশন পরিচালক অ্যাডমিরাল জন কিরবি ওয়াশিংটনে সংবাদ ব্রিফিংয়ে গতকাল বলেন, ‘আমরা অবশ্যই আমাদের রাষ্ট্রদূতের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন।’
বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখছে তা তাদের নড়াচড়া দেখেলেই বুঝা যাচ্ছে।
রাষ্ট্রদূত আলোচনা করেন ‘মায়ের ডাক’ সংগঠনের নেতৃবৃন্দদের সঙ্গে।
সংগঠনটির নেতৃবৃন্দদের সঙ্গে আলোচনর পর মার্কিন দূতাবাস ফেসবুকে আজ পোস্ট ( ডিসেম্বর ১৫, ২০২২) দিয়েছে যাতে বর্ণনা করা হয়েছে:
‘মানবাধিকার মার্কিন পররাষ্ট্র নীতির কেন্দ্রে রয়েছে।
রাষ্ট্রদূত হাস মায়ার ডাকের সদস্যদের সাথে দেখা করেছেন; কথিত বলপূর্বক গুমের শিকার ব্যক্তিদের পরিবারের জন্য একটি প্ল্যাটফর্ম, তাদের গল্প শুনতে এবং তাদের অভিজ্ঞতা সম্পর্কে জানতে।
বেঁচে থাকা সমস্ত লোকের কণ্ঠস্বর শোনা খুবই গুরুত্বপূর্ণ—তাদের সংশ্লিষ্টতা যাই হোক না কেন।’
গতকাল ‘মায়ের কান্না’ সৃষ্ট ঘটনার পরপরই আজকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাসের ফেসবুকের পোস্ট সম্পর্কে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মূল্যায়ন করছেন যে, কোনো ঘটনাকেই এখন আর তুচ্ছতাচ্ছিল্য মনে করা হচ্ছে না।
” ‘মায়ের ডাক’ সংগঠনের মাধ্যমে বিএনপি মার্কিন রাষ্ট্রদূতকে বিতর্কিত করেছে: তথ্যমন্ত্রী”
উক্ত শিরোনামে যমুনা টেলিভিশন আজ রিপোর্ট দিয়েছে। এতে বলা হয়েছে, ” ‘মায়ের ডাক’ সংগঠনের মাধ্যমে বিএনপি মার্কিন রাষ্ট্রদূতকে বিতর্কিত করেছে বলে মন্তব্য করেছেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। তিনি বলেন, দেশের মানুষ বিএনপিকে আর দেশ পরিচালনার দায়িত্ব দেবে না।
বৃহস্পতিবার (১৫ ডিসেম্বর) সচিবালয়ে ক্যাবল অপারেটরদের সংগঠন কোয়াব এর নবনির্বাচিত কমিটির সাথে মত বিনিময় শেষে তথ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে বাংলাদেশের উষ্ণ সম্পর্ক রয়েছে। যারা রাষ্ট্রদূত পিটার হাসকে বিতর্কিত করতে চাচ্ছে, তারা কাজটি ঠিক করেননি।
তথ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ‘মায়ের ডাকে’ এর কারণে ‘মায়ের কান্না’ সংগঠনের ক্ষতিগ্রস্তরা গিয়েছিল মার্কিন রাষ্ট্রদূতের কর্মসূচিতে। তিনি তাদের কথা শোনেনি। একপক্ষের কথা শুনেই চলে গেছেন। তবে এই ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কের অবনতি হবে না বলে দাবি করেছেন মন্ত্রী।”
গতকাল আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস সাহেব আজকে (১৪ ডিসেম্বর) সকালে বুদ্ধিজীবী দিবসে সাজ্জাদুল সুমনের বাড়িতে গেলেন।
২০১৩ সালে গুম হয়েছিল। তার বাড়িতে উনি গেলেন, আমি সবিনয়ে তাকে জিজ্ঞেস করি যুক্তরাষ্ট্রে প্রতি মাসে কতজন গুম হয়, কত জন নারী ধর্ষিত হয়, কতজন খুন হয় সেই চিত্রটা কিন্তু সিএনএনে আমরা দেখেছি।’
ডিসেম্বর ৯, ২০২২ তারিখে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশে সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বন্ধুত্বটা নষ্ট করবেন না’ ।
কিন্তু কোন কিছুতেই কিছু হচ্ছে না, মন্ত্রীদের কথার কোন গুরুত্বও মার্কিনীদের কাছে নেই বলে জানাচ্ছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
প্রসঙ্গত, এ দিকে মার্কিন রাষ্ট্রদূতের সাথে এমন ঘটনা ঘটার ফলে অনেকেই প্রকাশ করেছেন দুঃখ। সরকার থেকেও এ নিয়ে জানানো হয়েছে সংবাদ। তারা এ বিষয়ে হবে আরো বেশি সতর্ক।