নির্বাচন সামনে রেখে সকল রাজনৈতিক দলগুলো সক্রিয় হচ্ছে রাজনৈতিক প্রাঙ্গণে। আর নির্বাচনকে কেন্দ্র ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগ ও বিএনপি বিভিন্ন পরিকল্পনা করছেন এবং সে ভাবে নিজেদের প্রস্তুুত করে অগ্রসর হচ্ছেন। তবে নির্বাচন পদ্ধতি নিয়ে দুটি দল ভিন্ন অবস্থান নিয়েছেন। আওয়ামীলীগ বলছে সংবিধানের বাহিরে নির্বাচন নয় কিন্তু বিএনপি নিরপেক্ষ সরকারের দাবি করছে। বিএনপি নিরপেক্ষ সরকারে দাবিতে আন্দোলনের লক্ষে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সাথে ঐক্যেমতে পৌছছে বৃহ্ত্তর আন্দোলনের পরিকল্পনার প্রস্তুতি নিচ্ছে। গণতন্ত্র মঞ্চের আত্মপ্রকাশ আন্দোলনে সাফল্য দেখছে বিএনপি বলে মন্তব্য করে যা বললেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান।
গণতন্ত্র মঞ্চের আত্মপ্রকাশ ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের সাফল্য হিসেবে দেখছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান।
মঙ্গলবার সকালে জাসদ, নাগরিক ঐক্য, বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, গণসংহতি আন্দোলন, গণঅধিকার পরিষদ ও রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন, ভাসানী অনুসারী পরিষদের সমন্বয়ে গঠিত গণতন্ত্র মঞ্চের আত্মপ্রকাশ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি এ প্রতিক্রিয়া জানান।
তিনি বলেন, গণতন্ত্রের মঞ্চে আত্মপ্রকাশকে আমরা স্বাগত জানাই। আমরা দীর্ঘদিন ধরে তাদের উল্লেখ করা দাবিগুলো জানিয়ে আসছি।
এই সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন হতে পারে না, সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে, সংসদ বিলুপ্ত করতে হবে, নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন করতে হবে, নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন করতে হবে—এই সবগুলো কথা তাদের দাবিতে আছি আমরা দেখলাম। তাই আমাদের ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের যে প্রয়াস। আমরা মনে করি এটি ভবিষ্যতে আরও ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের অগ্রগতি।
সোমবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডি সভাপতি আসম আবদুর রব আনুষ্ঠানিকভাবে সাতটি রাজনৈতিক দলের সমন্বয়ে ‘গণতন্ত্র মঞ্চ’-এর আত্মপ্রকাশের ঘোষণা দেন।
নজরুল ইসলাম খান বলেন, ২০১৪-১৫ সালে কী আন্দোলন হয়েছিল? প্রয়াত সাংবাদিক এবিএম মুসা বলেছিলেন- এটা গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার নয়, গণপ্রজাতন্ত্রী ঢাকার সরকার। কারণ সমগ্র বাংলাদেশে এই সরকারের কোনো প্রভাব নেই। তারপরও মন্ত্রীরা বলেছেন, আমরা প্রতিবাদ করতে পারি না। এখন তারা আন্দোলন করতে যা বুঝেন এগুলো যদি সবাই বুঝতে চান তাহলে আমরা বিপদের মধ্যে আছি। আন্দোলন মানে হচ্ছে জনগণের সংঘবদ্ধ প্রতিবাদ-প্রতিরোধ। সেটা হরতালের মাধ্যমে হতে পারে, আরো বিভিন্ন মাধ্যমে হতে পারে। আমরা হরতাল করি না বা করতে পারি না তা নয়, কিন্তু যখন তখন করব কেন? আমরা অবরোধের আগে করি নাই বা করতে পারি নাই তা নয় কিন্তু যখন তখন করব কেন? যখন করার সিদ্ধান্ত হবে আপনারা জানতে পারবেন।
বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোকে নিয়ে বিএনপির বৃহত্তর প্লাটফর্ম গঠনের বিষয়ে জানতে চাইলে নজরুল ইসলাম খান বলেন, আপনারা সাংবাদিকরা এটা ভালো করেই জানেন। এই ব্যাপারগুলো আলোচনার মাধ্যমে হয় এবং এটা আগে থেকে বোঝা গেলে পরে এটা ব্যর্থ করে দেওয়ার লোক আছে। এজন্য আমরা কাজ করছি এবং আপনারা খুব শীঘ্রই জানতে পারবেন। মানুষ যখন ভয় পায়, অন্ধকারের মধ্যে রাত্রে হাঁটতে গেলে জোরে জোরে গান গায়। এটা এই কারণে যে, তারা ভয় পাচ্ছে। ওদের কথা বিভ্রান্ত হওয়ার কিছু নেই। বড় বিপদে আছে তারা।
দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরফত আলী সপু, যুগ্ম প্রচার সম্পাদক আসাদুল করিম শাহীন, শামীমুর রহমান শামীম, যুগ্ম সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল খালেক, ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক মো. বক্তব্য রাখেন সহযোগী সম্পাদক আব্দুল বারী দানি, উলামা দলের যুগ্ম আহ্বায়ক মাওলানা মাহমুদুল হাসান শামীম।
উলামা দলের সদস্য সচিব নজরুল ইসলাম তালুকদারের সভাপতিত্বে এ মিলাদ ও দোয়া মাহফিলে উপস্থিত ছিলেন স্বেচ্ছাসেবক দলের রফিক হাওলাদার, জাসার জাকির হোসেন রোকন, মৎস্যজীবী দলের আবদুর রহিম, শ্রমিক দলের সুমন ভূইয়া প্রমুখ।
প্রসঙ্গত, ক্ষমতাসীন সরকারকে ঐক্যের মাধ্যমে আন্দোলন করে ক্ষমতা থেকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করা হবে বলে মন্তব্য করেন স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান। তিনি আরও বলেন, সরকাকে নামাতে ঐক্যের মাধ্যমে আন্দোলন মূল্য লক্ষ হবে আমাদের।