১৭ থেকে ২২ জুলাই পর্যন্ত সারাদেশে সংঘটিত সন্ত্রাস, ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনাগুলোকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা চলছে। আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে সরকারের বিরুদ্ধে অসত্য, মিথ্যা এবং অপপ্রচার করা হচ্ছে নজিরবিহীনভাবে। বিশেষ করে জাতিসংঘ, যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা এসব ঘটনাকে সম্পূর্ণ ভিন্নভাবে তুলে ধরার চেষ্টা করছে। বিশেষ করে জাতিসংঘ, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠনে এ ঘটনাগুলোকে সম্পূর্ণ ভিন্নভাবে চিত্রিত করার চেষ্টা করা হচ্ছে। আর এর ফলে আন্তর্জাতিক মহলে আবারও বাংলাদেশ সম্পর্কে নেতিবাচক ধারণা তৈরি হচ্ছে বলে মনে করছে কূটনৈতিক মহল। পরিস্থিতি দ্রুত সামাল দিতে হবে, তা না হলে মানবাধিকার, সুশাসন ইত্যাদি বিষয়ে বাংলাদেশের ওপর বিদেশি চাপ আসতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করছেন অনেকে।
উল্লেখ্য যে, নির্বাচনের আগে বাংলাদেশের ওপর বিদেশি চাপ সৃষ্টির পরিকল্পিত চেষ্টা হয়েছিল এবং বিএনপি জামায়াত সেই চেষ্টায় বেশ সফল হয়েছিল। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশকে গণতন্ত্র সম্মেলনে আমন্ত্রণ জানায়নি। বাংলাদেশের র্যাবের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল। এছাড়াও বাংলাদেশের সুশাসন এবং গণতন্ত্র নিয়ে তারা অনেক নেতিবাচক মন্তব্য করেছিল। এমনকি নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু না হলে ভিসা নিষেধাজ্ঞার প্রয়োগের ঘোষণাও দেয়া হয়েছিল যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সরকারের বিচক্ষণতায় এবং কূটনৈতিক তৎপরতার কারণে সেই চাপ বাস্তবে রূপ নেয়নি।
কিন্তু এখন আবারও সরকারের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনসহ নানা অভিযোগ উঠছে এবং বাংলাদেশের ওপর নতুন করে নিষেধাজ্ঞা ও চাপ সৃষ্টির ষড়যন্ত্র চলছে।
সবচেয়ে বেশি ষড়যন্ত্র হচ্ছে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের প্রতীক সেনাবাহিনীকে বিতর্কিত করার জন্য। সহিংসতা এবং বীভৎস নাশকতা ঠেকানোর জন্য সরকার বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তা করার জন্য সেনা মোতায়েনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। দেশজুড়ে শান্তিপূর্ণভাবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেনাবাহিনী কাজ করছে। এখন পর্যন্ত সেনাবাহিনী কোথাও আগ্রাসী আচরণ করেনি।
কিন্তু কিছু আন্তর্জাতিক মিডিয়া পরিকল্পিতভাবে ভুল তথ্য ছড়াচ্ছে। বিশেষ করে ডয়চে ভেলেতে জাতিসংঘের লোগো ব্যবহার করে ট্যাঙ্কের বিষয়টি সামনে এসেছে৷ কিন্তু ট্যাংকগুলো কখনোই কোনো পাল্টা-অভ্যুত্থান বা আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবহার করা হয়নি এবং সাঁজোয়া যানগুলোও বাংলাদেশের মালিকানাধীন।
কিন্তু এটিকে নিয়ে এখন জাতিসংঘ পর্যন্ত ইস্যু তৈরি করার চেষ্টা করা হচ্ছে। এর মূল লক্ষ্য হল শান্তি মিশনে যেন বাংলাদেশের অন্তর্ভুক্তি বিতর্কিত করা যায় সেই চেষ্টা। আর পাশাপাশি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কাছে প্রতিনিয়ত নানারকম মনগড়া অসত্য তথ্য উপস্থাপন করা হচ্ছে।
এসব ইস্যুতে নতুন করে চাপে পড়তে পারে সরকার। বিশেষ করে সরকারকে দুর্বল করতে তারা মানবাধিকারের বিষয়টি তুলে আনছে। বাংলাদেশের ওপর নানা ধরনের নিষেধাজ্ঞা আরোপের চেষ্টা চলছে। আর এ কারণে এসব বিষয়ে সরকারের কূটনৈতিক তৎপরতা বাড়ানো উচিত বলে মনে করছেন অনেকে।
বাংলাদেশ থেকে কিছু স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তি দোসর, বিএনপি-জামায়াতের পেরোলে থাকা বুদ্ধিজীবীরা এসব ভুল, অসত্য এবং অতিরঞ্জিত তথ্য বিদেশে পাঠাচ্ছেন। বিষয়টি এখনই নজরদারিতে আনা উচিত বলে অনেকে মনে করেন। নাহলে সরকার আরেকটি নতুন সংকটের মুখোমুখি হতে পারে বলে অনেকে ধারণা করছেন।