পুরো গ্যালারি জুড়ে প্রতিধ্বনিত হয় ‘ভুয়া ভুয়া’ দুয়োধ্বনি। ঢাকা বা সিলেট, শহর বদলালেও সাকিব আল হাসানের প্রতি দর্শকদের দৃষ্টিভঙ্গি বদলায় না। আজও (শনিবার) সিলেট স্ট্রাইকার্সের বিপক্ষে ম্যাচ শুরুর আগে মাঠে শেষ অনুশীলনে সাকিবকে লক্ষ্য করে ছুড়ে দিচ্ছিলেন বিষ-বাণ।
কী করছেন শাকিব? তিনি কি এখন বাংলাদেশ ক্রিকেটের ভিলেন? আসলেই কি তাই? এদেশের ক্রিকেট ইতিহাস লিখতে চাইলে সাকিবের নাম আড়াল করা যাবে না। চাইলেই কি মুছে দিতে পারবেন তার সব অর্জন?
সাকিব জটিল চোখের সমস্যায় ভুগছেন। বোলিং আর ফিল্ডিংয়ে চালিয়ে নেওয়া গেলেও এই সমস্যা নিয়ে ব্যাটিং করা দূরহ। তিনি পারছেন না। তবে অনুশীলনে চেষ্টা করে যাচ্ছেন অবিরত। তিনি যে হারতে শিখেননি!
কিন্তু সাকিব ইদানীং কোথাও হাল ছেড়ে দিচ্ছেন। অলরাউন্ডার পরিচয় ভুলে রংপুর রাইডার্সের হয়ে আগের দুই ম্যাচে শুধু বোলিং ও ফিল্ডিং করেছেন। আজ দুই ম্যাচ পর নেমেছিলেন ব্যাটিংয়ে। এলবিডব্লিউ হয়ে ফিরেছেন গোল্ডেন ডাকে (১ বলে ০)।
হ্যারি টেক্টরের যে বলটিতে সাকিব লেগবিফোর উইকেটের ফাঁদে পড়েছেন, রিপ্লেতে দেখা যায় সে বলটি স্ট্যাম্প আঘাত করতো না; কিন্তু সাকিব রিভিউ নিতেও যেন ভুলে গেলেন। মাথা নিচু করে ছাড়লেন মাঠ। ওদিকে গ্যালারিজুড়ে দুয়োধ্বনি তো চলছিলই।
সাকিব কতটা চাপে, চেহারা দেখেই বোঝা যাচ্ছিল। মাঠ ছাড়ার সময় পা যেন চলছিল না। মাথা নিচু করে কোনোমতে বের হলেন।
তিনি বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার। দুনিয়ার তাবৎ প্রতিপক্ষকে যিনি একাই তুড়ি মেরে উড়িয়ে দিয়েছেন বহুবার। সেই সাকিব যেন এখন ভীষণ অসহায়। সাকিবকে ক্রিকেট মাঠে এতটা অসহায় অবস্থায়, সম্ভবত এর আগে কেউই দেখেননি।
আগের দিন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের কোচ ও সাকিবের মেন্টর মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন বলেছিলেন, ‘যদি সে ব্যাটিংয়ে ফিরতে না পারে, তাহলে আর ক্রিকেটই খেলবে না। ফিরতে পারবে বলেই সে এখনও মাঠে আছে বলে আমি মনে করি।’
সত্যিই কি ফিরতে পারবেন সাকিব? নাকি সালাউদ্দিনের প্রথম কথাটা সত্যি করে হঠাৎ বলে ফেলেন- আমি আর ক্রিকেট খেলব না!
বাংলাদেশের এত বড় ক্রিকেট তারকার এত বড় বিদায় নিশ্চয়ই বেশির ভাগ মানুষই চায় না। গুটিকয়েক নিন্দুকের দুয়োধ্বনিতে তাতে কী আসে যায়!