লক্ষ্মীপুর-৩ উপনির্বাচনের বেসরকারি ফলাফল ঘোষণার পর সোমবার (৬ নভেম্বর) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি ভিডিও ভাইরাল হয়। একাধিক ব্যালট পেপারে নৌকা প্রতীকে স্ট্যাম্প দিতে দেখা গেছে সাবেক এক ছাত্রলীগ নেতাকে।
আজ সকালে ভাইরাল হওয়া ৫৭ সেকেন্ডের একটি ভিডিওতে দেখা গেছে যে একজন ব্যক্তি ভোটকেন্দ্রে বসে একাধিক ব্যালট পেপারে নৌকা প্রতীকে সিল মারতে দেখা গেছে। তার গলায় নৌকার কার্ড ঝুলছে।
কক্ষের আরেকজন তাকে নৌকা সীলমোহর করতে সাহায্য করছে। এ সময় তাদের মধ্যে ৪৩ ব্যালটে নৌকা প্রতীকে সিল দিতে দেখা যায়।
তদন্ত করে জানা যায়, একাধিক সিলধারী ব্যক্তির নাম আজাদ হোসেন। তিনি নির্বাচনী এলাকার সদর উপজেলা দিঘলী ইউনিয়নের দক্ষিণ খাগুরিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে নৌকার এজেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন।
আজাদ চন্দ্রগঞ্জ থানা ছাত্রলীগের সহসভাপতি ছিলেন। সম্প্রতি দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে তাকে বহিষ্কার করে জেলা ছাত্রলীগ। তবে কে তাকে সাহায্য করেছে তার পরিচয় জানা যায়নি।একাধিক ভোটের বিষয়ে আজাদ কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি।
তিনি বলেন, আমি ভোট দিয়ে কেন্দ্র ছেড়েছি। ভিডিও সম্পর্কে কিছুই জানি না। দেখলেই বলতে পারব।
চন্দ্রগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল ওহাব বলেন, “দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে সম্প্রতি আজাদকে ছাত্রলীগের পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করতে প্রকাশ্যে নৌকায় সিল মা”রা হয়েছে।”
তারা দলের জন্য বিপজ্জ”নক। কিন্তু ভিডিওটা দেখিনি।
উপ-নির্বাচনে লাঙ্গল প্রতীকের প্রার্থী ও জেলা জাতীয় পার্টির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ রাকিব হোসেন বলেন, যারা ক্ষমতায় আছে তারা কেন্দ্রে প্রভাব বিস্তার করে জাল ভোট দেয়। নৌকায় সিল মারার ভিডিও তার বড় প্রমাণ। জাল ভোটসহ নানা অভিযোগে নির্বাচনের সময় ভোটদান থেকে বিরত ছিলাম।
এদিকে কুমিল্লার আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা ফরহাদ হোসেন এ ধরনের কোনো ভিডিও নজরে আসেনি বলে দাবি করেন। তিনি বলেন, “সাংবাদিকদের মাধ্যমে ভিডিওটি সম্পর্কে জানতে পেরেছি। এখনো নজরে আসেনি। কেউ এ বিষয়ে অভিযোগ করলে ট্রাইব্যুনালে যাওয়া উচিত।
ঘোষিত ফলাফল অনুযায়ী লক্ষ্মীপুর-৩ (সদর) সংসদীয় আসনের উপনির্বাচনে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী গোলাম ফারুক পিংকু ১২০ হাজার ৫৯৯ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী লাঙ্গল প্রতীকের প্রার্থী মুহাম্মদ রাকিব হোসেন পেয়েছেন ৩ হাজার ৮৪৬ ভোট।
তবে জাল ভোট, কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন দলের বলপ্রয়োগ, কেন্দ্রীয় এজেন্টদের ঢুকতে না দেওয়া ও এজেন্টদের অভিযোগে রোববার দুপুরে লক্ষ্মীপুর প্রেসক্লাবে পৃথক সংবাদ সম্মেলনে জাতীয় পার্টি ও জাকের পার্টির প্রার্থীরা নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেন।