মাদারীপুরে অতিরিক্ত ম/দ্যপানে পারুল (২৫) ও সাগরিকা (২০) নামে দুই তরুণীর মৃত্যু হয়েছে। আরও তিনজনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তারা নিহত দুজনই ঘনিষ্ঠ বন্ধু।
শনিবার (১৪ অক্টোবর) রাতে মাদারীপুর পৌরসভার কলেজ রোড এলাকার লুৎফর রহমান মোল্লার বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। অসুস্থরা হলেন, সাগরিকার মা সাবিনা ইয়াসমিন পান্না (৪৫), মামা বাবু (৪৪) ও সাগরিকার মায়ের বান্ধবী ডালিয়া (৪২)।
নিহতরা হলেন পারুল ডাসার উপজেলার বালিগ্রাম এলাকার ইয়াদ আলী মাতুব্বরের স্ত্রী এবং সাগরিকা মাদারীপুর শহরের বটতলা এলাকার মজিবুর রহমানের স্ত্রী। সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনোয়ার হোসেন চৌধুরী ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শনিবার রাতে সাগরিকা, তার বান্ধবী পারুল আক্তার, মা সাবিনা ইয়াসমিন পান্না ও মামা বাবু অতিরিক্ত মদ্যপান করে ঘুমিয়ে পড়েন। গভীর রাতে হঠাৎ তাদের চিৎকার শুনতে পান বাড়ির তত্ত্বাবধায়ক হেলাল সরদার।
এ সময় তিনি সাগরিকাকে মেঝেতে পড়ে থাকতে দেখেন। এ ছাড়া সাগরিকার বান্ধবী পারুল আক্তার রুপা, সাগরিকা ও তার মা সাবিনা ইয়াসমিন পান্না ও চাচা বাবুকে উদ্ধার করে জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক পারুল আক্তার ও সাগরিকাকে মৃত ঘোষণা করেন।
স্থানীয়রা জানান, চলতি মাসে সাবিনা ইয়াসমিন পান্না, তার মেয়ে ও ভাই এই বাসা ভাড়া নেন। শনিবার রাতে ওই বাড়িতে অজ্ঞাত আরও ৩-৪ জন মহিলা আসে। এর পরেই এই ঘটনা ঘটে। তবে ঘটনার পর থেকে অপরিচিতদের হদিস পাওয়া যাচ্ছে না।
স্থানীয় আবেদুর রহমান জানান, বাড়ির ভেতরে যা কিছু পাওয়া গেছে তাতে ধারণা করা হচ্ছে অতিরিক্ত মদ্যপানের কারণে তাদের এ অবস্থা হয়েছে।
সাবিনা ইয়াসমিন পান্না বলেন, আমরা ভুল করে মদ খেয়েছিলাম। এরপর আর কিছু মনে নেই। চোখ খুলে হাসপাতাল দেখলাম। তারা দুজনেই মারা যান।
সাগরিকার মামা বাবু বলেন, ভাতিজি আমাকে খাওয়ার জন্য পীড়াপীড়ি করে সেখান থেকে মদ এনেছি। পরে ভাতিজির মন বাঁচাতে বাধ্য হয়ে মদ পান করি। এরপর আর কিছু মনে নেই। চোখ খুলে হাসপাতাল দেখলাম। আমি কিছু খেয়েছি তারা অনেক পান করেছে। পরে জানতে পারি আমার ভাগ্নি ও তার বন্ধু অতিরিক্ত মদ্যপানের কারণে মারা গেছে।
মাদারীপুর সদর হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক রিয়াজ মাহমুদ জানান, গভীর রাতে এখানে ৪-৫ জন মহিলা ভর্তি হন। তাদের মধ্যে ইতিমধ্যে দুজন মারা গেছেন এবং দুজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। ময়নাতদন্তের পর বিস্তারিত বলা যাবে।
খবর পেয়ে মাদারীপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনোয়ার হোসেন চৌধুরী ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেন তিনি। ওসি বলেন, রাতে বাড়িতে মদের আসর বসে বলে জানতে পেরেছি। এদের মধ্যে তিনজন রোগী পুলিশ হেফাজতে চিকিৎসাধীন রয়েছে।