Tuesday , December 24 2024
Breaking News
Home / International / মাঝ আকাশে শিশুকে বাঁচাতে এলেন ‘ঈশ্বরের দুই দূত’

মাঝ আকাশে শিশুকে বাঁচাতে এলেন ‘ঈশ্বরের দুই দূত’

চিকিৎসার জন্য সন্তানকে নিয়ে বিমানে ভারতের রাজধানী দিল্লি যাচ্ছিলেন মা। ৬ মাস বয়সী শিশুটি জন্মের পর থেকেই হৃদরোগে ভুগছিল। কিন্তু মাঝ আকাশে তার শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। সন্তানকে বাঁচাতে মরিয়া হয়ে অসহায় মা ফ্লাইট ক্রুদের কাছে মিনতি করেন। সেই সময়, রাঁচির এক আমলা ডাক্তার এবং তাঁর সঙ্গী ‘ঈশ্বরের বার্তাবাহক’ হিসাবে এগিয়ে আসেন। তাদের চিকিৎসার পর অবশেষে শিশুটি শঙ্কামুক্ত হয়েছে।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়ার মতে, গত শনিবার (৩০ সেপ্টেম্বর) সকালে জাতীয় বিমান সংস্থা ইন্ডিগোর রাঁচি-দিল্লি ফ্লাইটের যাত্রীরা এমন ঘটনার সাক্ষী হন।

বিমান সূত্রের বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঘটনার দিন সকালে একজন মহিলা তার ৬ মাসের শিশুকে নিয়ে রাঁচি থেকে দিল্লিগামী একটি ফ্লাইটে উঠেছিলেন। যখন বিমানটি মাঝামাঝি বাতাসে থাকে, তখন শিশুর শ্বাস নিতে অসুবিধা হতে শুরু করে। পাইলটরা বুঝতে পারছেন পরিস্থিতি আরও খারাপ হচ্ছে। শিশুটিকে বাঁচানোর জন্য বিমানে ডাক্তার আছে কিনা জানতে চেয়ে তারা মাইকে ঘোষণা দেন।

ঘোষণা শোনার পর আইএএস অফিসার-চিকিৎসক নিতিন কুলকার্নি ও ড.মোজাম্মিল ফিরোজ। বর্তমানে ঝাড়খণ্ডের রাজ্যপালের মুখ্য সচিব থাকা সত্ত্বেও কুলকার্নি একজন ডাক্তার হিসেবে তার কর্তব্য ভুলে যাননি। তাই শিশুটিকে বাঁচাতে এগিয়ে আসেন রাঁচি সদর হাসপাতালের চিকিৎসক ফিরোজের সঙ্গে।

ডাঃ কুলকার্নি বলেন, বিমানটিতে শিশুদের জন্য অক্সিজেন মাস্ক ছিল না। ফলস্বরূপ, প্রাপ্তবয়স্কদের মুখোশের মাধ্যমে শিশুকে অক্সিজেন দেওয়া হয়। তার মেডিকেল রিপোর্ট অনুযায়ী, তিনি হৃদরোগ নিয়ে জন্মগ্রহণ করেছেন। তাকে চিকিৎসার জন্য দিল্লির এইমস হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।

এটি বোঝা যায় যে শিশুটির শ্বাসকষ্টের জন্য অবিলম্বে বিশেষ ইনজেকশনের প্রয়োজন ছিল, যার মধ্যে একটি ছিল তার মায়ের কাছে। শিশুটিকে সেই ইনজেকশন দিয়েছেন ডা. কুলকার্নি। তিনি বলেছিলেন যে এটি তখন খুব দরকারী ছিল।

জানা যায়, অক্সিমিটার না থাকায় শিশুটির শরীরে অক্সিজেনের পরিমাণ জানা যায়নি। তবে নানাভাবে শিশুটিকে সুস্থ করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন ডা. কুলকার্নি এবং ড. ফিরোজ। তাদের প্রচেষ্টায় শিশুটির অবস্থা ধীরে ধীরে স্থিতিশীল হয় এবং স্টেথোস্কোপে হৃদস্পন্দন ধরা পড়ে।

বিমানের ক্রুরাও শিশুটিকে নানাভাবে সাহায্য করেছেন বলে জানিয়েছেন ড. কুলকার্নি। এরপর রাত ৯টা ২৫ মিনিটে বিমানটি দিল্লি বিমানবন্দরে নামার সঙ্গে সঙ্গে শিশুটিকে সম্পূর্ণ অক্সিজেন সহায়তায় এইমস হাসপাতালে পাঠানো হয়। এক ঘণ্টার বেশি চেষ্টার পর শিশুটি আশঙ্কামুক্ত হওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করেন ডা. কুলকার্নি এবং ড. ফিরোজ।

আইএএস কর্মকর্তা হয়ে ডা. নীতিন কুলকার্নি যেভাবে শিশুটিকে বাঁচাতে ঝাঁপিয়ে পড়েন, তাতে ধন্যবাদ জানিয়েছেন ওই বিমানের অন্য যাত্রীরা। ডা. কুলকার্নি ও ডা. ফিরোজ ৬ মাসের শিশুটিকে বাঁচাতে ‘ঈশ্বরের দূত’ হয়ে এসেছিলেন বলে টুইট করেছেন অনেকেই।

About Zahid Hasan

Check Also

‘গণহারে’ বাতিল হচ্ছে ভারতীয়দের ভিসা, জানা গেল কারণ

উপসাগরীয় দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাত ভারতীয় নাগরিকদের ভিসা আবেদন আশঙ্কাজনক হারে বাতিল করছে। দেশটির নতুন …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *