Friday , November 22 2024
Breaking News
Home / International / মাঝ আকাশে শঙ্কটাপন্ন শিশুকে বাঁচাতে এগিয়ে এলেন ‘ঈশ্বরের দুই দূত’

মাঝ আকাশে শঙ্কটাপন্ন শিশুকে বাঁচাতে এগিয়ে এলেন ‘ঈশ্বরের দুই দূত’

চিকিৎসার জন্য সন্তানকে নিয়ে বিমানে ভারতের রাজধানী দিল্লি যাচ্ছিলেন মা। ৬ মাস বয়সী শিশুটি জন্মের পর থেকেই হৃদরোগে ভুগছিল। কিন্তু মাঝ আকাশে তার শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। সন্তানকে বাঁচাতে মরিয়া হয়ে অসহায় মা ফ্লাইট ক্রুদের আর্জি জানান। সেই সময়, রাঁচির এক আমলা ডাক্তার এবং তাঁর সঙ্গী ‘ঈশ্বরের দূত’ হয়ে এগিয়ে আসেন। তাদের চিকিৎসার পর অবশেষে শিশুটি শঙ্কামুক্ত হয়।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়ার মতে, গত শনিবার (৩০ সেপ্টেম্বর) সকালে জাতীয় বিমান সংস্থা ইন্ডিগোর রাঁচি-দিল্লি ফ্লাইটের যাত্রীরা এমন ঘটনার সাক্ষী হন।

বিমান সূত্রের বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঘটনার দিন সকালে একজন মহিলা তার ৬ মাসের শিশুকে নিয়ে রাঁচি থেকে দিল্লিগামী একটি ফ্লাইটে উঠেছিলেন। যখন বিমানটি মাঝ আকাশে অবস্থান করে, তখন শিশুর শ্বাস নিতে অসুবিধা হতে শুরু করে। পাইলটরা বুঝতে পারছেন পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে যাচ্ছে। শিশুটিকে বাঁচানোর জন্য বিমানে ডাক্তার আছে কিনা জানতে চেয়ে তারা মাইকে ঘোষণা দেন।

ঘোষণা শোনার পর আইএএস অফিসার-চিকিৎসক নিতিন কুলকার্নি ও ড.মোজাম্মিল ফিরোজ সাড়া দেন। বর্তমানে ঝাড়খণ্ডের রাজ্যপালের মুখ্য সচিব থাকা সত্ত্বেও কুলকার্নি একজন ডাক্তার হিসেবে তার কর্তব্য ভুলে যাননি। তাই শিশুটিকে বাঁচাতে এগিয়ে আসেন রাঁচি সদর হাসপাতালের চিকিৎসক ফিরোজের সঙ্গে।

ডাঃ কুলকার্নি বলেন, বিমানটিতে শিশুদের জন্য অক্সিজেন মাস্ক ছিল না। ফলস্বরূপ,ফলে প্রাপ্তবয়স্কদের মাস্ক দিয়েই ওই শিশুকে অক্সিজেন দেওয়া হয়। তার মেডিক্যাল রিপোর্টগুলো দেখে জানা যায়, সে জন্মগতভাবেই হৃদরোগী। চিকিৎসার জন্য তাকে দিল্লির এইমস হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল।

তখন বোঝা যায় যে শিশুটির শ্বাসকষ্টের জন্য অবিলম্বে বিশেষ ইনজেকশনের প্রয়োজন ছিল, যার মধ্যে একটি ছিল তার মায়ের কাছে। শিশুটিকে সেই ইনজেকশন দেন ডা. কুলকার্নি। তিনি বলেছিলেন যে এটি তখন খুব দরকারী ছিল।

জানা যায়, অক্সিমিটার না থাকায় শিশুটির শরীরে অক্সিজেনের পরিমাণ জানা যায়নি। তবে নানাভাবে শিশুটিকে সুস্থ করার চেষ্টা চালিয়ে যান ডা. কুলকার্নি এবং ড. ফিরোজ। তাদের প্রচেষ্টায় শিশুটির অবস্থা ধীরে ধীরে স্থিতিশীল হয় এবং স্টেথোস্কোপে হৃদস্পন্দন ধরা পড়ে।

বিমানের ক্রুরাও শিশুটিকে নানাভাবে সাহায্য করেছেন বলে জানিয়েছেন ড. কুলকার্নি। এরপর রাত ৯টা ২৫ মিনিটে বিমানটি দিল্লি বিমানবন্দরে নামার সঙ্গে সঙ্গে শিশুটিকে সম্পূর্ণ অক্সিজেন সহায়তায় এইমস হাসপাতালে পাঠানো হয়। এক ঘণ্টার বেশি চেষ্টার পর শিশুটি আশঙ্কামুক্ত হওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করেন ডা. কুলকার্নি এবং ড. ফিরোজ।

আইএএস অফিসার ড. নিতিন কুলকার্নি যেভাবে শিশুটিকে বাঁচাতে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন, তাতে ধন্যবাদ জানিয়েছেন বিমানের অন্যান্য যাত্রীরা। অনেকেই টুইট বার্তায় জানিয়েছেন যে, এই সময়ে ডাঃ কুলকার্নি এবং ডাঃ ফিরোজ ৬ মাসের শিশুটিকে বাঁচাতে ‘ঈশ্বরের দূত’ হয়ে এসেছেন।

About bisso Jit

Check Also

বাংলাদেশ নিয়ে ভারতীয় সাংবাদিকের অভিযোগ, যা বলল যুক্তরাষ্ট্র

বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতনের অভিযোগ নিয়ে ভারতীয় মিডিয়া এবং সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে ধারাবাহিকভাবে বিভিন্ন দাবি তোলা …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *