মাছে ভাতে বাঙালী কথাটি এদেশের মানুষের জন্য যথার্থ।তবে বর্তমান সময়ে অনেকে আছেন এই মাছ খেতে অনিহা প্রকাশ করে থাকেন এবং এর প্রধান কারন হল মাছের কাঁটা, মাছের কাটা নিয়ে অনেকে নানা বিড়ম্বনায় পড়েন এবং এর ফলে মাছের প্রতি তাদের অনিহা কাজ করে করে তবে এই মাছ কিভাবে কাটা ছাড়া খাওয়া যায় তা শেখালেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন ‘মাছের কাঁটা একটা সমস্যা। অনেকেই মাছ খেতে চান না। কিন্তু প্রক্রিয়াজাত করা হলে কাটা নরম করে খাওয়া যায়। এটা খুব কঠিন না. এমনকি আপনি বাড়িতে এটি করতে পারেন. এক ঘণ্টা প্রেসার কুকারে রান্না করলে মাছের কাঁটা নরম হবে, মাছ মাছের মতোই থাকবে কিন্তু কাঁটা নরম থাকবে। বাচ্চাদেরও খাওয়াতে পারেন। এতে কোনো অসুবিধা নেই।’
রোববার (২৪ জুলাই) সকালে গণভবন থেকে কার্যত সংযোগের মাধ্যমে জাতীয় মৎস্য সপ্তাহের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। এর আগে তিনি গণভবন লেকে মাছের পোনা অবমুক্ত করেন। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ. রেজাউল করিম এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এভাবে মাছের কাঁটা নরম করতে পারলে আর কাঁটার সমস্যা থাকবে না। ইলিশ মাছ সামুদ্রিক মাছ হওয়ায় একটু বেশি সময় লাগে। অন্যান্য মাছ আরও তাড়াতাড়ি হয়ে যায়। আমরা যদি এই ধরনের শিল্প তৈরি করতে পারি, আমরা মাছের কাঁটা প্রেসার দিয়ে নরম করতে পারি যাতে যেন মাছ যেমন আছে তেমন থাকবে এভাবে প্রক্রিয়াজাত করতে পারি এবং বিদেশে রপ্তানি করতে পারি, বিশ্বের অনেক দেশ এই মাছটি কিনবে বা মাছ থেকে তৈরি বিভিন্ন পণ্য আমরা রপ্তানি করতে পারি।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘মাছের উৎপাদন বাড়াতে হলে পানির প্রবাহ ঠিক রাখতে হবে। পানি যাতে দূষিত না হয় সেদিকে বিশেষ খেয়াল রাখতে হবে। ২০১৬-২০১৭ সালে আমরা মাছ উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছি। এখন চাহিদার তুলনায় অনেক বেশি মাছ উৎপাদন করতে পারছি।’
তিনি বলেন, ‘প্রবাসীরা যেখানেই থাকুন নিজ দেশের একটু মাছ খেতে চান। আমরা তাদের একটা সুযোগ দিতে পারি। ইতিমধ্যেই সামুদ্রিক মৎস্য আইন ২০২০ পাশ হয়েছে। গভীর সমুদ্রে মাছ সংগ্রহের ব্যবস্থা নেওয়া। আমি কয়েকটি দেশের সঙ্গে আলোচনা করছি।’
দেশের উন্নয়ন ও অর্থনৈতিক অবস্থা নিয়ে যারা সমালোচনা করছেন, তাদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যারা ঘুরে বেড়াচ্ছেন, কখনও কখনও আপনাকে তাদের একটি কথা বলতে দিতে হবে। আমরা যদি আমাদের কাজ করি, দেশ এগিয়ে যাক, দেশ এগিয়ে যাবে। জনগণের ওপর আমাদের আস্থা আছে, জনগণ আমাদের সঙ্গে আছে ইনশাআল্লাহ। বাংলাদেশকে কেউ আটকে রাখতে পারবে না। পদ্মা সেতুর পথে যে প্রতিবন্ধকতা দাঁড়িয়েছিল, তা অতিক্রম করে আমরা বিশ্বকে বার্তা দিয়েছি যে বাংলাদেশ পারে, নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ করে। আমরাও পারি।’
দেশের যুবসমাজকে মাছ উৎপাদনে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমি ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল করেছি যেখানে তরুণরা এগিয়ে আসতে পারে। তরুণরা মাছ ধরায় এগিয়ে এলে তারা যেমন লাভবান হবে তেমনি দেশের অর্থনীতিও সমৃদ্ধ হবে। আসুন সবাই মাছ প্রক্রিয়া কাজে এগিয়ে আসি।’
বাংলাদেশ থেকে প্রতি বছর প্রচুর মাছ বিদেশে রপ্তানি হয়ে থাকে এবং সেই সথে এই মাছ থেকে বিভিন্ন পন্য প্রক্রিয়াজাত হয়ে থাকে এবং এগুলোর চাহিদা ব্যপক। বাংলাদেশের মৎস ভান্ডার আরো সম্প্রসারিত করতে বর্তমান সরকার নানাঊদ্দ্যোগ হাতে নিয়েছে এবং এই লক্ষে এগিয়ে যাচ্ছে