রাজশাহী-১ (গোদাগাড়ী-তানোর) আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী ও অভিনেত্রী মাহিয়া মাহি প্রচারণায় মাইকিং করেছেন। কিন্তু পরে সেই মাইকটি ভেঙে যাওয়ার ভয়ে দেওয়া হয়নি। মাহিয়া মাহি প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়ালকে নির্বাচনী এলাকায় ভোটার ও সাধারণ মানুষের আতঙ্কের কথা জানিয়েছেন।
বুধবার সকালে রাজশাহী সার্কিট হাউসে প্রার্থীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন সিইসি। বৈঠক শেষে মাহিয়া মাহি বলেন, আমি ভোটের মাঠে কোনো হুমকি পাইনি। আশা করি আপনারা (সাংবাদিকরা) হুমকির সম্মুখীন হবেন না। কর্মচারীদেরও হুমকি দেওয়া হয় না, তাও আপনার জন্য। কিন্তু যিনি মাইক ভাড়া দেবেন, তিনি সংরক্ষিত মাইক নিয়ে বের হননি। তার ভয়, মাইক ভেঙ্গে যাবে নাকি তাকে মাইর দেবে। এমন ঘটনা ঘটছে। আমি সিইসিকে এসব বলেছি।
তবে এটাকে ভোটের অংশ বলে মনে করেন মাহি। তিনি বলেন, ‘আমি ওই এলাকায় অন্যভাবে প্রচার করব। যদি কিছু না থাকে, তাহলে ফাঁকা মাঠে গোল করাই তো ব্যাপার। আপনারা সাংবাদিক। তোমার কলম, তোমার কলম – এটাই আমার শক্তি।
নির্বাচনে আমাকে বিরক্ত করলে কেউ আমাকে বিরক্ত করবে না এই ভয়ে আপনারা প্রতিরোধ ও প্রচারণা চালানোর চেষ্টা করবেন এবং আমার সে ধরনের পেশিশক্তির প্রয়োজন হবে না।’
মাহি বলেন, “আমি বৈঠকে বলেছিলাম, আমার এলাকার মানুষ এমনিতেই ভয় পাচ্ছে। কারণ, সাধারণ মানুষকে কিছু বললে তারা অনেক ভয় পেয়ে যায়। আমি শুধু বলেছি, কোনো সহিংসতা বা সন্ত্রাস চলবে না। ঝগড়া হবে না, কেউ যদি বলে সেদিন যেও না, কেউ যদি গুজব ছড়ায়, আমি তোমাকে বলেছি সেদিকে নজর রাখতে যাতে না হয়, সেদিন তুমি থাকবে, সারা পৃথিবী দেখুন আসলে কত শতাংশ ভোট পড়েছে।
চিত্রা নায়েকা বলেন, প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেছেন নির্বাচন সুষ্ঠু হবে এবং কীভাবে সুষ্ঠু হবে সে বিষয়ে ব্রিফিং দিয়েছেন। তিনি বলেন, ভোটারদের ভয়ভীতি দেখানো শাস্তিযোগ্য অপরাধ ছিল এমন কোনো আইন ছিল না। তেমন কিছু ছিল না। এবার আইন সংশোধন করা হয়েছে। ভোটারের পরিচয়ে কেউ যদি পুলিশকে ফোন করে যে ‘আমি ভোটার, আমাকে হুমকি দেওয়া হয়েছে, ভোটকেন্দ্রে যেতে নিষেধ করা হয়েছে। এমনটি হলে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এবারের ভোট সুষ্ঠু হবে বলে তিনি আশ্বস্ত করেছেন।
“যদি কোনো প্রার্থী কোনো ধরনের ঝামেলা করেন, বা ভোটে কারচুপির চেষ্টা করেন, তার প্রার্থীতা অযোগ্য ঘোষণা করা হতে পারে এমনকি যখন দেখা যাচ্ছে যে তিনি জিতবেন। ভোটকেন্দ্রে গিয়েছিলেন।এমন কিছু আসলে ক্যামেরায় ধরা যায় না, বক্তৃতাও রেকর্ড করা যায় না।তবে সেই ভোটার পুলিশকে ফোন করলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।ক্ষমতাবান মানুষ যত বড়ই হোক না কেন। দল হলো, তারা কাউকে রেহাই দেবে না এবং নির্বাচন সুষ্ঠু হবে।তবে ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে নিয়ে আসা আমাদের দায়িত্ব।যার জনপ্রিয়তা আছে,তাদের ভোটকেন্দ্রে নিয়ে আসা যাক।’ – বলল মাহি।
নির্বাচন কমিশনের কথায় আস্থা পাচ্ছেন বলে জানান এই অভিনেত্রী, ‘হাজার শতাংশ মিল পাচ্ছি’। শব্দ এবং ক্ষেত্রের মধ্যে একটি মিল আছে। তবে আমি যেটা বলতে চাই, নির্বাচনের প্রাক্কালে কোনো প্রার্থী এমন পরিবেশ তৈরি করতে পারবে না। আমি এটা অনুরোধ. তারা যেন এই আসনে বিশেষ নজর রাখে, যাতে কোনো আতঙ্ক না থাকে। ভোটাররা যেন ভোটকেন্দ্রে গিয়ে সঠিকভাবে ভোট দিতে পারেন।
ট্রাক অভিযান প্রসঙ্গে মাহি বলেন, ‘আমাকে এখন দ্বারে দ্বারে যেতে হবে। তাদের বলা উচিত, নির্ভয়ে ভোট কেন্দ্রে আসুন। আমি নারীদের বলছি, দয়া করে শাড়ি-টারি পড়ে সেজগুজে আসুন। সেই দিনটি উৎসবের দিন। ভোট একটি অধিকার, তবে এটি একটি আনন্দের দিনও। সেই উৎসবে অংশগ্রহণ করবেন। আমি একটি ছোট ট্রাক নিয়ে যাতায়াত করি। আমি এত সুন্দর ট্রাক পাইনি।
আমি এখানে যা পেয়েছি তা নিয়ে সবার কাছে যাচ্ছি। অনেক শিশু আবার বলছে, এই ট্রাকটা আমাদের দাও। আবার আসতে হবে। আমার প্রতিপক্ষ যারা আছে, ফেসবুকে দেখুন- তারা আমাকে ট্রাক নিয়ে অনেক কষ্ট দিচ্ছে যে ট্রাকের টায়ার পাংচার হলে বুঝবে। তাই এটা করতে ভালো লাগছে। ট্রাক আমার প্রতীক, তারাই মানুষের কাছে পৌঁছে যাচ্ছে।’