চলতি মাসের ১৫ আগস্ট বনাগলাদেশের জাতির পিতার প্রয়ানের দিন আর এই দিনটি জাতীয় শোক দিবস হিসেবে পালন করা হয়। তিনি ছিলেন বাংলা মায়ের শ্রেষ্ঠ সন্তান এবং সর্বকালের শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী। ১৫ আগস্ট শোক দিবসে বরগুনায় ছাত্রলীগ ও পুলিশের মধ্যে কোনো একটি কারণের জন্য বিবাদের সৃষ্টি হয়। সম্প্রতি জানা গেছে সেই ঘটনায় পুলিশ সুপার মহররম আলীসহ ১৩ পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে।
বরগুনায় ছাত্রলীগ কর্মীদের মারধরের ঘটনায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মহররম আলীসহ ১৩ পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে।
সোমবার (২২ আগস্ট) বিকেলে বরিশাল রেঞ্জের ডিআইজি এসএম আকতারুজ্জামান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ছাড়াও বাকিদের মধ্যে ১ জন পুলিশ পরিদর্শক, ৩ জন উপ-পরিদর্শক, ৪ সহকারী উপ-পরিদর্শক ও ৪ জন নায়েক কনস্টেবল রয়েছেন বলে জানা গেছে। তবে শেষ পর্যন্ত এই সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে সূত্র জানিয়েছে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের বিরুদ্ধে সেবা বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে, পাশাপাশি অন্যদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পুলিশ সুপার, বরগুনাকে চিঠি দেওয়া হয়েছে।
এর আগে রোববার সন্ধ্যায় তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন পেয়েছেন বলে জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা। ঘটনার দিন এই ১৩ জনের বিরুদ্ধে চাকরি বিধি বহির্ভূত নানা কর্মকাণ্ড পরিচালনার অভিযোগ পেয়েছে তদন্ত কমিটি। এর পরিধি অনুযায়ী তাদের বিরুদ্ধে কম-বেশি শাস্তি হতে পারে।
এর আগে গত ২৪ জুলাই জেলা ছাত্রলীগের নতুন কমিটি ঘোষণার সময় নতুন কমিটি নিয়ে পদচ্যুত নেতা-কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে প্রায়ই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
সোমবার (১৫ আগস্ট) সকাল ১১টার দিকে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বরগুনা-১ আসনের জাতীয় সংসদ সদস্য অ্যাড. ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু ও বরগুনা জেলা প্রশাসক হাবিবুর রহমানসহ জেলা পর্যায়ের নেতারা। এ সময় জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রেজাউল কবির রেজা, সাধারণ সম্পাদক তৌশিকুর রহমান ইমরান ও সিনিয়র সহ-সভাপতি সবুজ মোল্লাসহ তাদের কর্মী-সমর্থকরা জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে আসেন। একপর্যায়ে ছাত্রলীগের কর্মীরা পুলিশের গাড়িও ভাঙচুর করে। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ লাঠিচার্জ করে। এ ঘটনায় উভয় পক্ষের অর্ধ শতাধিক নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন।
আলোচিত অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মহররম আলীকে বরগুনার দায়িত্ব থেকে সরিয়ে প্রথমে বরিশাল রেঞ্জের ডিআইজি কার্যালয়ে নিয়োগ দেওয়া হয়। পরবর্তী আদেশে তাকে চট্টগ্রাম রেঞ্জে বদলি করা হয়। পরে ওই ঘটনায় রাতেই আরও ৫ পুলিশ সদস্যকে বদলি করা হয়।
প্রসঙ্গত, জাতির পিতার প্রয়ানের দিনে এমন একটি ঘটনা ঘটবে সেইটা আসলে সত্যিই দুঃখজনক একটি ব্যাপার। এই ঘটনা নিয়ে বরগুনাতে এখনো থমতমে অবস্থা বিরাজ করছে। তবে সাধারণ মানুষের প্রত্যাশা এই সমস্যার খুব শীঘ্রই সমাধান হবে।